ইসরায়েলের হামলা সামনে কঠিন পথ ইরানের
ইরানে শুক্রবার দিনগত রাত ২টার দিকে বিমান হামলা করে ইসরায়েল। দেশটির এই আক্রমণে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত আরও গভীর হয়েছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি এবং তার উপদেষ্টারা কঠিন সিদ্ধান্তের সম্মুখীন হতে চলেছেন। বড় ধরণের সংঘাতের ঝুঁকি নিতে হবে; নাকি আরও ক্ষতিকর বিষয়গুলো প্রতিরোধ করতে হবে সেটা নিয়ে ভাবছেন তারা।
এই পরিস্থিতিতে আয়াতুল্লাহ খামেনি এবং তার উপদেষ্টারা এমন একটি সিদ্ধান্ত নিতে চাইছেন, যেখানে ইরানের শাসনব্যবস্থা সবচেয়ে নিরাপদ থাকবে এবং কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে তারা ইরানের মর্যাদা ও শক্তিকে অক্ষুণ্ণ রাখতে পারবে।
যদিও ইসরায়েলের আক্রমণের আগে ও পরে ইরানের সরকারি গণমাধ্যমগুলোতে দৃঢ় অবস্থান জানিয়ে বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছে, যা দেখে মনে হচ্ছে, পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানানোর সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছে। তাদের বক্তব্যের ভাষাও ইসরায়েলের মতোই, যেখানে নিজেদের রক্ষা করার অধিকাররের কথা তুলে ধরা হয়েছে। তবে পরিস্থিতির বিবেচনায় ইরান শেষ মুহূর্তে হয়তো নিজেদের হুমকি থেকে সরিয়ে নিয়ে আসার কথাও ভাবতে পারে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারও এমনটাই আশা করছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে বলেন, ইসরায়েলের নিজের রক্ষার অধিকার রয়েছে। তবে আমরা কোনোভাবেই আঞ্চলিক পরিস্থিতি আরও জটিল করতে চাই না। ইরানের উচিত পাল্টা প্রতিক্রিয়া না জানানো।
ছয় মাসের যুদ্ধের মধ্যে ইসরায়েলি প্রতিশোধে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় দ্বিগুণ মানুষ ঘরবাড়ি হারায়, তবে ইসরায়েল আরও বড় পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত ছিল। তারা হিজবুল্লাহকে সতর্ক করে দেয় যে ইসরায়েলে হামলা বন্ধ না করলে এবং সীমান্ত থেকে না সরলে প্রতিক্রিয়া জানাবে।
এই সতর্কবার্তা সত্ত্বেও ইরান তাদের যুদ্ধ চালিয়ে যায়, যার ফলস্বরূপ ইসরায়েল আরও বড় আক্রমণ চালায়, যা ইরানের পরিকল্পনাকে ভেঙে দেয়। ইরান যুদ্ধ এড়ানোর চেষ্টা করলেও ইসরায়েল তা দুর্বলতা হিসেবে বিবেচনা করে আরও চাপ বাড়াতে থাকে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং তার সামরিক কমান্ডারদের কাছে যুদ্ধ করার সুযোগ ছিল। কারণ তাদের পেছনে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দৃঢ় সমর্থন ছিল। ইসরায়েলকে সুরক্ষিত রাখতে বাইডেন প্রচুর গোলাবারুদ পাঠানোর পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন নৌ ও বিমান বাহিনীর শক্তিশালী বাহিনী পাঠিয়েছেন। এখন ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরানের সিদ্ধান্ত কি হবে সেটা দেখার পালা।