‘ইহুদিদের বিরুদ্ধে ক্রুসেড’ চালাচ্ছেন ম্যাক্রোঁ, অভিযোগ তুলল ইসরায়েল

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া নৈতিক দায়িত্বই নয়, রাজনৈতিক প্রয়োজনও – ফরাসি প্রেসিডেন্টের এ মন্তব্যের পর ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বিরুদ্ধে ‘ইহুদি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ক্রুসেড’-এর অভিযোগ তুলেছে ইসরায়েল।
শুক্রবার (৩০ মে) সিঙ্গাপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ম্যাক্রোঁ ইউরোপীয় দেশগুলোকে গাজার মানবিক সংকটের উন্নতি না হলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান কঠোর করার আহ্বান জানিয়েছেন। এরপরই নেতানিয়াহুর ইহুদিবাদী সরকার থেকে এই মন্তব্য এলো।
এক্স-এ পোস্ট করা ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইহুদি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর ধর্মযুদ্ধ অব্যাহত। এগুলো ম্যাক্রোঁর আগ্রহের বিষয় নয়। কোনো মানবিক অবরোধ নেই। এটি একটি স্পষ্ট মিথ্যা।’
জাতিসংঘও আজ শুক্রবার সতর্কবার্তা পুনর্ব্যক্ত করে বলেছে, ইসরায়েল হামলা তীব্রতর করার পর গাজার সমগ্র জনগণ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে। অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি অঞ্চলটিতে ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতির জন্য ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠেছে।
জাতিসংঘের মানবিক সংস্থার মুখপাত্র জেন্স লারকে শুক্রবার বলেছেন, গাজা পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুধার্ত স্থান। এটিই একমাত্র সংজ্ঞায়িত এলাকা – একটি দেশ বা একটি দেশের মধ্যে সংজ্ঞায়িত অঞ্চল – যেখানে সমগ্র জনসংখ্যা দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে। জনসংখ্যার একশ শতাংশ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে।
এ অবস্থায় সিঙ্গাপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ম্যাক্রোঁ ইউরোপীয় দেশগুলোকে গাজার মানবিক পরিস্থিতির প্রতি যথাযথভাবে সাড়া না দিলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘সম্মিলিত অবস্থান কঠোর করার’ আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, শর্তসাপেক্ষে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি কেবল নৈতিক কর্তব্য নয়, বরং একটি রাজনৈতিক প্রয়োজনীয়তা। ম্যাক্রোঁ বলেন, আগামী কয়েক ঘণ্টা এবং দিনগুলোতে যদি গাজার মানবিক পরিস্থিতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কোনো প্রতিক্রিয়া না পাওয়া যায়…তাহলে আমাদের সম্মিলিত অবস্থান আরও কঠোর করতে হবে।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, ‘সন্ত্রাসীদের উপর চাপ প্রয়োগের পরিবর্তে, ম্যাক্রন তাদের একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র দিয়ে পুরস্কৃত করতে চান। নিঃসন্দেহে এর জাতীয় দিবস ৭ অক্টোবর হবে। ইসরায়েলকে ধ্বংস করার জন্য একাধিক ফ্রন্টে আক্রমণের মুখে – ম্যাক্রোঁ নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা করছেন – এটি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে।
টাইমস অব ইসলায়েলের লাইভ প্রতিবেদন অনুসারে, ইসরায়েলের পক্ষ থেকে ফরাসি প্রেসিডেন্তের বক্তব্য নিয়ে ‘ক্রুসেডের উল্লেখ একটি ভারী অভিযোগ’। ইউরোপীয় খ্রিস্টানদের পরিচালিত মধ্যযুগীয় এই ধর্মীয় যুদ্ধে ফরাসি নাইট এবং ধর্মীয় নেতারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, ১৭-২০ জুন জাতিসংঘের সম্মেলনে ফ্রান্স ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে।