উড়োজাহাজের জ্বালানি খরচ বাঁচাতে হাঙরের চামড়ার আদলে আবরণ তৈরি

হাঙরের চামড়ার আদলে উড়োজাহাজের জন্য বিশেষ ধরনের আবরণ তৈরি করেছেন অস্ট্রেলিয়ার মহাকাশ সংস্থা মাইক্রোটাউের একদল বিজ্ঞানী। তাঁদের দাবি, বিশেষ ধরনের লেজার প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি নতুন এই আবরণ বিমানের সঙ্গে বাতাসের ঘর্ষণের মাত্রা কমাতে পারে। আর তাই আবরণটি ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন বিমান সংস্থা বছরে ৪০০ কোটি গ্যালন জ্বালানি সাশ্রয় করে শতকোটি ডলারের জ্বালানি খরচ কমাতে পারবে।
প্রাকৃতিকভাবে হাঙরের শরীরের বাইরে হাজার হাজার ক্ষুদ্র খাঁজ রয়েছে, যা পানির মধ্যে হাঙরকে মসৃণভাবে চলাচল করতে সহায়তা করে। বিষয়টি মাথায় রেখে হাঙরের চামড়ার আদলে কৃত্রিম আবরণ তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। এরই মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার মহাকাশ সংস্থা মাইক্রোটাউের সঙ্গে কাজ শুরু করেছে ডেল্টা এয়ার লাইনস।
উড়োজাহাজ যখন বাতাসের মধ্য দিয়ে যায়, তখন বাতাসে হেয়ারপিন ঘূর্ণি নামে ছোট ছোট ঘূর্ণি তৈরি হয়, যা উড়োজাহাজের পৃষ্ঠের সঙ্গে ঘর্ষণ তৈরি করে প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়। নতুন আবরণটি উড়োজাহাজের সঙ্গে বাতাসের ঘূর্ণির ঘর্ষণ তৈরি হতে বাধা দেয়। এর ফলে উড়োজাহাজ চলাচলের সময় জ্বালানি খরচ কম হবে। যদি এই আবরণ এয়ারবাস এ৩৮০ বিমানে প্রয়োগ করা হয়, তাহলে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস পর্যন্ত প্রতি ফ্লাইটে প্রায় ৫ হাজার ডলারের জ্বালানি সাশ্রয় হওয়ার পাশাপাশি ১৮ মেট্রিক টনের বেশি কার্বন ডাই–অক্সাইড নির্গমন কম হবে।
মাইক্রোটাউ ইতিমধ্যেই লকহিড মার্টিনের বিশাল সি-১৩০জে, বুম সুপারসনিকসহ বিভিন্ন উড়োজাহাজে নতুন আবরণ ব্যবহারের উপযোগিতা নিয়ে পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বুম সুপারসনিকের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, কোনোরূপ ক্ষয় ছাড়াই বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বেশ ভালোভাবে টিকে আছে নতুন আবরণটি।