Trending

ঋণ ব্যবস্থাপনায় আরো স্বচ্ছতা চায় বিশ্বব্যাংক

অনেক দেশ এখন স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকেও ঋণ নিচ্ছে, তবে এসব ঋণের পরিমাণ ও শর্তাবলি প্রকাশ করছে না।

বিশ্বের অনেক দেশ তাদের সরকারি ঋণ সম্পর্কে ক্রমাগত কম স্বচ্ছতা বজায় রাখছে এবং ঋণ ব্যবস্থায় জটিল পদ্ধতির আশ্রয় নিচ্ছে। ফলে প্রকৃতপক্ষে তারা কতটা ঋণগ্রস্ত তা পরিমাপ করা কঠিন হয়ে পড়ছে। বৃহস্পতিবার বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

এই সমস্যা সমাধানে ঋণগ্রহীতা ও ঋণদাতা দেশগুলোর ঋণ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ ও প্রতিবেদন তৈরির পদ্ধতিতে মৌলিক পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বিশেষভাবে নিম্নআয়ভুক্ত দেশগুলোর বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বলা হয়েছে, দেশগুলো বিভিন্ন অপারদর্শী ঋণ ব্যবস্থার দিকে ঝুঁকে পড়ছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রাইভেট প্লেসমেন্ট (গোপনীয়ভাবে অর্থ সংগ্রহ), কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যে মুদ্রা বিনিময় চুক্তি এবং বন্ধক রাখা সম্পদের বিনিময়ে ঋণ গ্রহণ।

প্রতিবেদনে আরো জানানো হয়, ২০২০ সালের আগে ৬০ শতাংশেরও কম নিম্নআয়ভুক্ত দেশ ঋণসংক্রান্ত কিছু তথ্য প্রকাশ করত। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫ শতাংশে। তবে মাত্র ২৫ শতাংশ দেশ নতুন ঋণের লেনদেনের বিস্তারিত তথ্য বা চুক্তির শর্ত প্রকাশ করে বলেও উল্লেখ করা হয়।

এছাড়া অনেক দেশ এখন স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকেও ঋণ নিচ্ছে, তবে এসব ঋণের পরিমাণ ও শর্তাবলি প্রকাশ করছে না।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ বলেন, অপ্রকাশিত ঋণের সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনায় দেখা গেছে, স্বচ্ছতার অভাব কীভাবে একটি নেতিবাচক চক্র তৈরি করতে পারে। যা সেই দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।

উদাহরণ হিসেবে তিনি আফ্রিকার দেশ সেনেগালের কথা উল্লেখ করে বলেন, দেশটির স্বাধীন প্রশাসনিক আদালত গত ফেব্রুয়ারিতে জানায়, তাদের সরকারি ঋণের পরিমাণ মোট জিডিপির ৯৯ দশমিক ৬৭ শতাংশে পৌঁছেছে। যা পূর্ববর্তী সরকারের প্রকাশিত তথ্যের চেয়ে এক চতুর্থাংশ বেশি।

মার্চে সেনেগালে সফররত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) দলও জানায়, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাজেট ঘাটতি ও সরকারি ঋণ সম্পর্কে কর্মকর্তারা ভুল তথ্য দিয়েছেন।

বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, কয়েকটি দেশ ঋণ পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গোপনে কয়েকটি নির্দিষ্ট ঋণদাতার সঙ্গে আলোচনা করেছে।

সংস্থাটির ভাইস প্রেসিডেন্ট পাবলো সাভেদ্রা বলেন, ঋণ স্বচ্ছতা কেবল একটি কারিগরি বিষয় নয়, এটি কৌশলগত সরকারি নীতিও। এটি বিশ্বাস তৈরি করে, ঋণ গ্রহণের খরচ কমায় এবং বিনিয়োগ আকর্ষণে সহায়ক হয়।

দেশগুলোর ঋণ স্বচ্ছতা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

যার মধ্যে রয়েছে ঋণ চুক্তিতে স্বচ্ছতা সংক্রান্ত আইন ও বিধিমালায় পরিবর্তন, ঋণদাতা দেশগুলোর সম্পূর্ণ অংশগ্রহণে ঋণ পুনর্মিলন প্রক্রিয়া, নিয়মিত নিরীক্ষা ও জাতীয় পর্যায়ে কঠোর তদারকি এবং ঋণ পুনর্গঠনের শর্তাবলি চূড়ান্ত হওয়ার পর তা সবাইকে জানানো।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

bacan4d slot toto