Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

একই সুরে জামায়াত-এনসিপি দেশের রাজনীতিতে মেরুকরণের নতুন ধারা

নজিরবিহীন ঘটনা! জাতীয় সংসদে ক্ষমতাসীন দলের অতি বাড়াবাড়ির প্রতিবাদে বিরোধী দলের এমপিরা ওয়াকআউট করেন; এটি সবার জানা। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা (প্রধানমন্ত্রী) আয়োজিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে তেমন ওয়াকআউটের ঘটনা দেশবাসী দেখল। আগামীতে রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি-নির্ধারণী বৈঠকে জামায়াতকে অধিক গুরুত্ব দেয়ায় প্রতিবাদে সিপিবি, গণফোরাম ও বাসদ বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করেছে। এমন ঘটনায় সংসদে যেমন স্পিকার ট্রেজারি বেঞ্চের পক্ষ নেন, তেমনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনও জামায়াতের পক্ষে অবস্থান নেয়। শুধু কি তাই! বৈঠকে অংশ নেয়া অন্য দলের নেতাদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে জামায়াত নেতারা বলেছেন, ‘আপনারা কত লোকের প্রতিনিধিত্ব করেন?’ এর তীব্র প্রতিবাদ করেছে সিপিবি ও অন্যান্য দল। জামায়াতের দশা যেন গ্রাম্য প্রবাদÑ ‘চালুনি বলে সুচ তোর পিছে কেন ছ্যাঁদা’ প্রবাদের মতোই? রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব নিরুপণ হয় নির্বাচনের মাধ্যমে। নির্বাচনের আগে কিভাবে বোঝা যাবে কোন দল কত জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে? ১৯৯১ সালের পর থেকে জাতীয় নির্বাচনের আসন সংখ্যা পরিমাপ করে বিএনপি যদি জামায়াতকে একই প্রশ্ন করে তাহলে কি জবাব দেবে দলটি?

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশের রাজনীতিতে অনেকের মুখোশ খুলে গেছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের সভাপতি-সম্পাদকের নাম ঘোষণার পর দেখা গেল, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা রেজিমে গিরগিটির মতো রং পাল্টিয়ে শিবির নেতারা ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় লালিত পালিত হয়েছেন। ছাত্রলীগের শেল্টারে থাকা ছাত্রনেতারাই বর্তমানে ছাত্রশিবিরের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অন্যদিকে জামায়াতের সব অফিস বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। তখন দলটি জোটের রাজনীতির নামে বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছে।

এখন নির্বাচনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে জামায়াত ও এনসিপি একাট্টা। গত বছরের ৫ আগস্ট থেকেই দেখা যাচ্ছে, গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রনেতা আর জামায়াত নেতারা একই সুরে কথা বলছেন। জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি গঠনের পর থেকে জামায়াত ও এনসিপি কৌশল ও আচরণ অনেকটা সহোদর ভাইয়ের মতোই। অর্ধশত রাজনৈতিক দল বিএনপির পক্ষে থাকলেও ওই দল দুটির অবস্থান প্রতিটি ক্ষেত্রে বিএনপির বিরুদ্ধে। বিগত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ যেমন রাজনৈতিক ইস্যুতে ‘বিএনপি-জামায়াত’ শব্দ ব্যবহার করতÑ এখন তেমনি রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ‘জামায়াত-এনসিপি’ শব্দের ব্যবহার করতে শুরু করেছেন। ৫ আগস্টের পর প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিনকে সরানো, সংবিধান সংশোধন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন, সংস্কারের পরে নির্বাচন, জুলাই ঘোষণাপত্র এমনকী লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক ইস্যুতে নবগঠিত এনসিপি ও জামায়াত ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। অথচ রমজানের আগে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবেÑ এমন খবরে দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ খুশি। জামায়াতের আমিরও রমজানের আগে নির্বাচনের দাবি করেছিলেন। কিন্তু এনসিপির বক্তব্যের পর জামায়াত নিজেদের অবস্থান থেকে সরে যায়। জামায়াত-এনসিপির কাছে অপ্রিয় হলেও সত্যÑ ড. প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যকার ঐতিহাসিক লন্ডন বৈঠকের পর বাংলাদেশের রাজনীতির চিত্রনাট্য অনেক খানি বদলে গেছে। সারা দেশের মানুষ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। নির্বাচন ইস্যু নিয়ে উপদেষ্টাদের মধ্যে যারা ‘বিএনপি কেবল নির্বাচন চায়’ অভিযোগ করতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন তারা রণেভঙ্গ দেন। রাজনীতির চিত্রনাট্য বদলে যাওয়ার কারণেই কি জামায়াত ও এনসিপি লন্ডন বৈঠকের পর যৌথ ঘোষণায় বিক্ষুব্ধ? তাহলে কি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাডারে যথার্থতাই ধরা পড়েছে? গত বুধবার দলের এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, ‘এখন নির্বাচন নাই, সুতরাং তাদের (জামায়াত) অনেক গুরুত্ব আছে। যেই নির্বাচন হয়ে যাবে, জনগণের যারা ভালোবাসার দল, তারাই তো ক্ষমতায় আসবে, তাই না? তখন তাদের (জামায়াত-এনসিপি) গুরুত্ব কতটুকু থাকবে কি থাকবে না তখন নির্ধারিত হবে। যে কারণে লন্ডন বৈঠকে রোজার আগে নির্বাচন যৌথ ঘোষণায় ওরা নারাজ হয়েছে এবং নারাজ হয়ে গত মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার একটি বৈঠকে ওরা হাজির হয়নি।’ বিএনপি মহাসচিবের মতোই সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক প্রায় অভিন্ন মতামত প্রকাশ করছেন।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে গত কয়েক মাসের দেশের রাজনীতির চালচিত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, রাজনীতির মাঠ থেকে শুরু করে প্রধান উপদেষ্টা এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রতিটি বৈঠকে প্রতিটি ইস্যুতে বিএনপি ও এনসিপির মধ্যে বিপরীতমুখী অবস্থান দেখা যায়। আর জামায়াত অবস্থান নেয় এনসিপির পক্ষে। ফলে হাসিনা রেজিমে যেমন আওয়ামী লীগের অলিগার্করা রাজনৈতিক স্বার্থে বিএনপির নাম নেয়ার সময় ‘বিএনপি-জামায়াত’ শব্দের ব্যবহার করতেন, তেমনি এখন প্রতিটি ইস্যুতে ‘এনসিপি-জামায়াত’ শব্দের ব্যবহার শুরু হয়ে গেছে। কেবল ’৭১ ইস্যুতে দল দুটির মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে।

১৫ বছরে দেশে প্রায় নতুন ভোটার হয়েছে চার কোটি। আট কোটি ভোটার ১৫ বছর ভোটকেন্দ্রে যায়নি। সবাই নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছে।
ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছিল এবং ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা পালিয়েছে। সঙ্গত কারণে মানুষ ভোট দেয়ার জন্য মুখিয়ে। কিন্তু সরকারের পরোক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি প্রতিষ্ঠার পর দলটি সাংগঠনিক ভীত গড়ে তুলতে সময়ের প্রয়োজন হওয়ায় দলটি সব ধরনের সংস্কার করে নির্বাচন করার দাবি জানায়। পাশপাশি জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনের দাবি জানায়। সংস্কারের অজুহাতে অন্তর্বর্তী সরকারকে কয়েক বছর ক্ষমতায় রাখার দাবিতে জনমত গঠনের চেষ্টা করে। নির্বাচনকে প্রলম্বিত করতে তাদের সঙ্গে সুর মেলায় জামায়াত। গত কয়েক মাসের রাজনৈতিক চিত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এনসিপি রাজনৈতিক কর্মসূচি দিলে সেখানে জামায়াত অংশগ্রহণ করে। জামায়াত সেসব কর্মসূচিতে যায় এনসিপির সেসব কর্মসূচিতে জনসমাগম বেশি হয়। কিন্তু এনসিপির কর্মসূচিতে জামায়াত অংশ না নিলে সমাবেশ সিপিবি-জাসদ-বাসদসহ ছোট ছোট রাজনৈতিক দলের মতো হয়। রাজনীতির মেরুকরণে নতুন দল এনসিপি ও জামায়াত একই মেরুতে চলে গেছে।

গত কয়েক মাসে দেখা গেছে, বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের কিছু নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-দখলদারিত্বের অভিযোগ উঠেছে। এনসিপির কেন্দ্র থেকে শুরু করে শেকড় পর্যায়ের অনেক নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি, দখলদারিত্ব, নিয়োগ বাণিজ্য, পতিত হাসিনার অলিগার্ক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ও মেস বাড়িতে থাকা নেতাদের হঠাৎ বিলাসী জীবন যাপন, প্রাডো, ল্যান্ডক্রুজার গাড়িতে চলাফেরা, বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে বসবাস এবং প্রশাসনের প্রভাব খাটানোর অভিযোগ উঠে। অন্যদিকে, জামায়াতের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে জামায়াতি চেতনাধারী আমলাদের বসানো, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ পদে জামায়াতি চেতনাধারীদের বসানো এমনকি প্রশাসনকে জামায়াতিকরণের অভিযোগ উঠে। এসব অভিযোগের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রায় দুই হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও জামায়াত কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তবে এনসিপির একজন কেন্দ্রীয় নেতা বিপুল চাঁদাবাজিসহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ ও দুজন প্রভাবশালী নেতার চারিত্রিক স্খলনজনিত অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। এসব অভিযোগের পর দেখা যায়, বিএনপি অভিযোগ তোলে এনসিপি ও জামায়াতের বিরুদ্ধে আর জামায়াত ও এনসিপি বিএনপির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উত্থাপন করে। কিন্তু এনসিপি ও জামায়াত তারা একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা দূরের কথা, একে অপরকে সমর্থন করেই যাচ্ছে। গতকালও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনার দাবি জানান গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। সংসদের উচ্চকক্ষ ও নি¤œকক্ষের সদস্যদের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দাবি জানান গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দাবি জানান। বিএনপি জাতীয় সংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠন সমর্থন করবে না বলে জানিয়েছে। এনসিপি ও জামায়াত একই সুরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে স্থানীয় নির্বাচন দাবি করেছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পদ্ধতি, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, জেলা কাউন্সিল গঠন, রাষ্ট্রের মূলনীতি ও নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণ বিষয়ে জামায়াত সেসব প্রস্তাবনা দিয়েছে, সেগুলো এনসিপি সমর্থন করেছে; আবার জাতীয় সংবিধানিক কাউন্সিলসহ (এনসিসি) এনসিপি যে প্রস্তাবনা তুলেছে, জামায়াত সমর্থন করে।

লন্ডন বৈঠক এবং জামায়াত-এনসিপির মাখামাখি প্রসঙ্গে সিনিয়র সাংবাদিক এম এ আজিজ বলেছেন, ‘লন্ডন বৈঠক ও যৌথ ঘোষণার মানুষ খুশি এবং বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল সমর্থন করছে। বিরোধিতা যারা করছে সেই জামায়াত ও এনসিপি নির্বাচন হলে কয়টি আসনে বিজয়ী হবে? জামায়াত হয়তো কয়েকটি আসন পেলেও পেতে পারে, কিন্তু এনসিপিকে তো নির্বাচনের পর খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাই অন্তর্বর্তী সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে, ততদিন তারা সুবিধা পাবে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ৫ আগস্টের পর নিষিদ্ধ থাকা জামায়াত বাংলাদেশি রাজনীতির মূল কেন্দ্রে উঠে আসে। বিএনপিকে ঘায়েল করার জন্য নিরন্তরভাবে ছুরি চালাচ্ছে দলটি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ নীতি-নির্ধারণী বৈঠকে বৈষম্য হচ্ছে। জামায়াতের তিন জনকে বক্তব্য দিতে দেয়া হয়েছে। আমাদের একজন বক্তব্য দিতে গেলেও বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছেÑ জামায়াতকে এত গুরুত্ব দেয়ার রহস্য কি? আর জাতীয় নির্বাচনের আগে কার কত জনসমর্থন সেটি কিভাবে পরিমাপ করবেন?

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto