Bangladesh

এটুআইর ৮৫৫ কোটি টাকার প্রকল্পে লুটপাটের প্রমাণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে জয় পলকের সম্পৃক্ততা

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই)-এর ৮৫৫ কোটি টাকার প্রকল্পে লুটপাটের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গতকাল এটুআই-এর প্রকল্পে ৮৫৫ কোটি টাকার লুটপাটের খোঁজে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে অভিযান চালায় দুদক।

সংস্থাটি বলছে, নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে বারবার কাজ দেওয়া, অপ্রয়োজনীয় কাজসহ নানাভাবে সরকারি অর্থ ক্ষতিসাধনের সঙ্গে ১৪ জনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এটুআইসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক কাজে পতিত সরকার এই প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করেছে। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এবং আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলকের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে দেখা হচ্ছে।

দুদক জানায়, ২০২০ সালে পাঁচ বছরের জন্য ৮৫৫ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়। এর নেতৃত্বে থাকা আনীর চৌধুরী আইসিটি সেক্টরে অপকর্মের হোতা। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত।

দুদকের সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, অভিযানে ১৪ জনের সংশ্লিষ্টতায় প্রকল্পের পদে পদে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য উঠে এসেছে। একই প্রতিষ্ঠানকে বারবার কাজ দেওয়া, অপ্রয়োজনীয় কাজসহ নানাভাবে সরকারি অর্থ লুটপাট করা হয়েছে।

পট পরিবর্তনের পর এটুআই-এর নেতৃত্বে আসা হেড অব প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট আবদুল্লাহ আল ফাহিম সাংবাদিকদের জানান, এরই মধ্যে অভ্যন্তরীণ তদন্তে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় ১৪ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অনিয়মের পেছনে জয়-পলকের সম্পৃক্ততাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা মিলেমিশে লুটপাট ও বিদেশে অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে মনে করছেন দুদকের অভিযানে থাকা কর্মকর্তারা।

দুদক সূত্র জানায়, এটুআই হয়ে উঠেছিল আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠদের মিলেমিশে লুটপাটের বড় এক প্রকল্প। প্রকল্প পরামর্শক থেকে শুরু করে ই-নথি ইমপ্লিমেন্টেশন এক্সপার্টসহ মোট ১৪ শীর্ষ কর্মকর্তা যথেচ্ছাচারের আখড়া ছিল এ প্রকল্প। তাদের বিরুদ্ধে পাওয়া গেছে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ক্রয়প্রক্রিয়ায় ব্যাপক লুটপাট, অর্থ পাচার, বিদেশে সফর, সম্পদ অর্জন, ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেওয়া, অবৈধ বিল বা ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, অবৈধ নিয়োগ, নারী সহকর্মীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ, রাজনৈতিক দলের প্রচার, দলবেঁধে নাইট ক্লাবে গিয়ে নেশায় মত্ত থাকাসহ একগাদা অভিযোগ। এসব অভিযোগ তদন্তে কমিটিও করা হয়েছিল।

জানা যায়, আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) অর্থায়নে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) নামে কর্মসূচি শুরু করে। পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ২০১৮ সালে এটুআই প্রোগ্রামকে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের অধীনে নেওয়া হয়। ২০২০ সালে অ্যাকসেস টু ইনফরমেশনের নাম পরিবর্তন করে এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) রাখা হয়। পরে সেটিকে ‘এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই) বিল-২০২৩’ নামে বিল হিসেবে সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের নেতৃত্বে জাতীয় সংসদে তোলা হয় এবং বিলটি পাসও হয়।

প্রকল্পটির মেয়াদ ছিল ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রথমে প্রকল্পের মূল ব্যয় ধরা হয় ৪৮৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের ব্যয় ৪০৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আর সহায়তা তহবিল থেকে আসার কথা ৮১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। কিন্তু প্রাক্কলিত ব্যয় সংশোধন করে মোট ব্যয় দাঁড়ায় ৮৫৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের ব্যয় ৪০৩ কোটি ৬৫ লাখ থেকে বেড়ে ৫৫৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা হয়। আর সহায়তা থেকে আসা ব্যয় ৮১ কোটি ৮০ লাখ থেকে বেড়ে ৩০১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা দাঁড়ায়।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d