এফ-১৬ বিমান, পেট্রিয়ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সারাইয়ে ইউক্রেনে কাজ করবে মার্কিন ঠিকাদাররা
এবিষয়ে অবহিত একজন কর্তকর্তাকে উদ্ধৃত করে সিএনএন জানিয়েছে, চলতি মাসের শুরুতে পেন্টাগনের বেসামরিক ঠিকাদারদেরও ক্ষেত্রেও এ অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ইউক্রেনকে প্রায় ৬১ বিলিয়ন ডলারের সামরিক অস্ত্র অনুদান দিয়েছে আমেরিকা। এসব অস্ত্রের একটি বড় অংশের মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দেশটিতে মার্কিন ঠিকাদাররা এখন থেকে অবস্থান করতে পারবে। আনুষ্ঠানিকভাবে এমন অনুমোদন দিতে চলেছে বাইডেন প্রশাসন। মার্কিন ঠিকাদার তথা ভাড়াটে কর্মী ও যোদ্ধারা ইউক্রেন যুদ্ধে অঘোষিতভাবে অংশ নিলেও – এবারই প্রথম প্রকাশ্যে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, যাকে বড় পরিবর্তন বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। মার্কিন কর্মীরা যেন ইউক্রেনকে দেওয়া এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ও পেট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ব্যাটারিগুলোকে কার্যকর রাখতে পারেন– সেজন্যই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে সিএনএন।
সাম্প্রতিক এ সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে অল্প সংখ্যক মার্কিন সেনাদের ইউক্রেনে অবস্থানের অনুমতি দেয় বাইডেন প্রশাসন, যাদের কাজ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো সরঞ্জামগুলো যেন বেহাত না হয়– সেদিকে খেয়াল রাখা। তবে এর আগে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের বেসামরিক ঠিকাদারদের ক্ষেত্রে তা দেওয়া হয়নি। যদিও ইউক্রেনের সরকারের হয়ে দেশটিতে বেশকিছু সংখ্যক মার্কিন ঠিকাদার কাজ করছেন।
এবিষয়ে অবহিত একজন কর্তকর্তাকে উদ্ধৃত করে সিএনএন জানিয়েছে, চলতি মাসের শুরুতে পেন্টাগনের বেসামরিক ঠিকাদারদেরও ক্ষেত্রেও এ অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা গণমাধ্যমটিকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও তাঁর মিত্রদের দেওয়া সামরিক সরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষণ ও সারাইয়ের জন্য ডিওডি (প্রতিরক্ষা দপ্তর) কিছুসংখ্যক ঠিকাদার নিয়োগের জন্য দরপত্র দিচ্ছে। ইউক্রেনকে ইতোমধ্যে দেওয়া এসব সরঞ্জাম সচল রাখতে তাঁরা কাজ করবেন।’
তবে এই বিষয়টি স্পর্শকাতরও। কারণ মার্কিন নাগরিকরা ইউক্রেনকে সরাসরি যুদ্ধে সহযোগিতা করছেন। যা মস্কোর ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে, বেসামরিক ঠিকাদাররা যেন ফ্রন্টলাইনের ধারেকাছেও না থাকে – সেদিকে খেয়াল রাখবে যুক্তরাষ্ট্র।
বাইডেন প্রশাসন এবিষয়ে সজাগ বলে জানান তিনি। বলেন, “লড়াইয়ের সম্মুখভাগ থেকে বহুদূরে অবস্থান করবে এসব ঠিকাদাররা। যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া সরঞ্জাম জলদি সারাই করতে তাঁরা ইউক্রেনীয়দের সহায়তা করবে, যাতে সেগুলো দ্রুততম সময় ফের মোতায়েন করা যায়।’
পেট্রিয়ট ও এফ-১৬ জঙ্গিবিমানসহ ইউক্রেনকে দেওয়া বিশেষ কিছু অস্ত্র ব্যবস্থা রক্ষণাবেক্ষণে প্রশিক্ষিত ও অভিজ্ঞ জনবলের প্রয়োজন হয়। সেজন্যই এসব ঠিকাদারদের পাঠানো হচ্ছে বলেও জানান প্রতিরক্ষা দপ্তরের ওই কর্মকর্তা।
যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইউক্রেনকে চতুর্থ প্রজন্মের এফ-১৬ ফাইটার জেট দেয়নি, তবে মিত্র দেশগুলোকে তাঁদের কাছে থাকা ৮৫টি এফ-১৬ ইউক্রেনকে হস্তান্তরের অনুমতি দিয়েছে। পেট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরাসরি দিয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, টানা তিন বছরের যুদ্ধে ইউক্রেনকে দেওয়া অনেক পশ্চিমা সরঞ্জামই হয় ধ্বংস নয়তো অকেজো হয়ে পড়েছে, এখন সেগুলোর ব্যাপক মেরামত করা দরকার। তবে মার্কিন বেসামরিক ঠিকাদারদের দেশটিতে গিয়ে কাজের অনুমতি না দেওয়ায় – এর আগে এসব সরঞ্জাম প্রতিবেশী রোমানিয়া, পোল্যান্ডসহ অন্যান্য ন্যাটে দেশে এনে ঠিকঠাক করে ফের ইউক্রেনে পাঠাতে হতো। যাতে অনেক সময় লাগতো।