Trending

এবার লোকসানের রেকর্ড আরও ভারী!

চলতি মৌসুমে হাতে গুনে মাত্র পাঁচ দিন চলেছে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন। এতে রেলওয়ের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় অর্ধকোটি টাকা। লাভের দেখা তো দূরে থাকুক লোকসানের অতীত সব রেকর্ড ভেঙেছে। নানা আলোচনা-সমালোচনার পরও বিশেষ ট্রেনটি চালু করে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে। তবে স্থানীয় আমচাষি, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের আস্থাহীনতা ও প্রচার বিমুখতায় এবারও আম পরিবহনে সফলতা পায়নি ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন।

২০২০, ২১ ও ২৩ সালে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনে করে ৩৯ লাখ ৯৫ হাজার ৭৯৮ কেজি আম পরিবহন করা হয়েছে। এ জন্য ট্রেনটি ভাড়া পেয়েছে ৪৬ লাখ ২৯ হাজার ১৪০ টাকা। আর ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহী হয়ে ঢাকায় যাওয়া-আসা করতে তেল খরচ হয়েছে ৯২ লাখ ৯১ হাজার টাকা। অর্থাৎ এই তিন বছরে ট্রেনের লোকসান হয়েছে ৪৬ লাখ ৬১ হাজার ৮৬০ টাকা।

সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে মাত্র পাঁচ দিন এই রুটে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন চলেছে। এই পাঁচ দিনে ট্রেনে আম পরিবহন করা হয়েছে ১৮ হাজার ১৪৬ কেজি। এতে রেলওয়ের আয় হয়েছে মাত্র ২৭ হাজার ৩৪৫ টাকা। এছাড়া কোরবানি উপলক্ষে একই ট্রেনে দুদিনে পশু পরিবহন করা হয় ১০৫টি। এতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের আয় হয়েছে ৯২ হাজার ৮২০ টাকা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীর স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, আম পরিবহনে অব্যবস্থাপনা ও দায়সারা ভাবের কারণেই লাভজনক এই সেবা খাতটি শেষ পর্যন্ত লোকসানে বিপর্যস্ত হয়েছে। বেসরকারি কুরিয়ার সার্ভিসের অনলাইন বুকিং ও আধুনিক সেবার কাছে সরকারি এই সনাতনী সেবা কুলিয়ে উঠতে পারেনি। এবারও ট্রেনের শিডিউল ঠিক না থাকা, সময়মতো আম পৌঁছানোর অনিশ্চয়তা এবং পাঠানো ও গ্রহণের ক্ষেত্রে নানা দুর্ভোগের ঝামেলা ছিল। তাই কম খরচের এই সরকারি সেবাটিও মুখ থুবড়ে পড়েছে।

রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, ভরা মৌসুমে স্পেশাল ট্রেনে আম পরিবহন নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। তবে ব্যবসায়ীরা আম পরিবহনের সুফল পান না। কারণ, এর মাধ্যমে খরচ কম হলেও এটি ডোর টু ডোর সার্ভিস দেয় না। দেশের ডাক বিভাগের অনেক গাড়ি আছে। তাদের ডিজিটাল সিস্টেমও আছে। তারা যদি আন্তঃবিভাগীয় সভা করে আমগুলো ট্রেনে পরিবহনের পর আবার ডোর টু ডোর পরিবহন করে পৌঁছে দেয় তবে এটিই লাভজনক হবে। আর এই উদ্যোগ নিলে আমচাষি, ব্যবসায়ীরা ও সাধারণ মানুষও এতে আগ্রহ দেখাবেন।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ভারপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) আহমদ হোসেন মাসুম জানান, তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সেবা। তারা কম খরচে আম পরিবহনের সুযোগ করে দিতে চেয়েছেন সব সময়ই। কিন্তু স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাদের মাধ্যমে আম পরিবহন করেননি। তারা রেলের ওপর আস্থা রাখতে না পারায় এই লোকসান গুনতে হয়েছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button