এরিয়া ৫১ কী হয় জানে না কেউ, এলিয়েনরা আমেরিকায় লুকিয়ে?

আমেরিকার নেভাদা অঙ্গরাজ্যের পাহাড়ঘেরা মরুভূমিতে চরম গোপনীয় এক স্থান—এরিয়া 51। নিষেধ সত্ত্বেও কেউ ভেতরে ঢুকলে গুলি করে মেরে ফেলার নির্দেশ রয়েছে। এমনকি এর আকাশসীমার উপর দিয়েও উড়তে পারে না কোনো বিমান। এই রহস্যময় স্থানের বিষয়ে নানা রকম গুজব ও তত্ত্ব ছড়িয়ে আছে—কেউ বলেন এটি এলিয়েনদের আস্তানা, কেউ দাবি করেন ১৯৬৯ সালের আমেরিকার মিথ্যা চন্দ্রাভিযানের ছবি তোলা হয়েছিল এখানেই। আবার অনেকে মনে করেন, এই মরুভূমির গভীরে লুকিয়ে আছে আমেরিকার গোপন বাংকার।
জনসাধারণের জন্য নিষিদ্ধ এই স্থানে প্রতিটি সেকেন্ডে আমেরিকা বজায় রাখে কঠোর নিরাপত্তা। মার্কিন সেনাবাহিনী সবসময়ই চেষ্টা করে এরিয়া 51-কে লোকচক্ষুর আড়ালে রাখতে। কী ঘটে এর ভেতরে—তা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কখনোই কিছু জানায়নি আমেরিকা। এই কঠোর গোপনীয়তার কারণেই ১৯৪৭ সালের রসওয়েল উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার পর শুরু হয় নানা জল্পনা। তখন ছড়িয়ে পড়ে খবর—উড়োজাহাজটির চালক ছিল এলিয়েনরা, কিংবা সেদিন আকাশে উড়ছিল স্পেসশিপ, যার ভেতরে ছিল ল্যাবরেটরিতে তৈরি অদ্ভুত চেহারার এক প্রাণী।
১৯৮৯ সালে রবার্ট লাজার নামে এক ব্যক্তি দাবি করেন, তিনি এরিয়া 51-এর ভেতরে এলিয়েন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করেছেন। অন্যদিকে আমেরিকার প্রথম চন্দ্রাভিযান নিয়েও রয়েছে বিতর্ক—অনেকে মনে করেন, এটি ছিল সাজানো নাটক। অভিযোগ ওঠে, স্নায়ু যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের জন্য ১৯৬৯ সালের নীল আর্মস্ট্রং-এর চাঁদে পা রাখার ছবি আসলে এরিয়া 51-এই তোলা হয়েছিল।
এরিয়া 51 নিয়ে আরেকটি ধারণা হলো—এখানে মাটির নিচে রয়েছে বিশাল বাংকার, যেখানে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের আনাগোনা চলে। সেগুলো এমনভাবে লুকিয়ে রাখা হয় যে, স্যাটেলাইটের মাধ্যমেও খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। কেউ কেউ বলেন, সেই বাংকারগুলো নাকি ৪০ তলা ভবনের সমান উঁচু।
২০১৩ সালে মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ প্রথমবারের মতো এরিয়া 51-এর অস্তিত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করে। একই বছরের চার মাস পর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রথমবার জনসমক্ষে এর নাম উল্লেখ করেন। জানা যায়, ১৯৫৫ সালে স্নায়ু যুদ্ধের সময় আমেরিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিযোগিতার প্রেক্ষাপটে এরিয়া 51 নির্মাণ করা হয়। তবে আমেরিকা আজও প্রকাশ করেনি—আসলে কী উদ্দেশ্যে এই রহস্যময় ঘাঁটিটি ব্যবহার করা হয়।