কঠিন করা হলো অফশোর ব্যাংকিং নীতিমালা, স্থানীয় ব্যাংক থেকে অর্থ স্থানান্তর করা যাবে না
স্থানান্তর করা অর্থ ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ফেরৎ আনার নির্দেশ
থানীয় ব্যাংক থেকে অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটে আর কোনো তহবিল স্থানান্তর করা যাবে না। শুধু তা-ই নয়, ইতোমধ্যে স্থানান্তর করা বৈদেশিক মুদ্রা আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ফেরত আনতে হবে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা ব্যাংকগুলোকে পাঠানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ডলার সঙ্কট কাটাতে এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সাময়িকভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ পদক্ষেপ নিয়েছে। বাজারে ডলারের প্রবাহ বাড়লে এ নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার বিষয়ে বিবেচনা করবে। অফশোর ব্যাংকিংয়ের মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তারা বিদেশ থেকে বিদেশী মুদ্রায় আমানত সংগ্রহ করবে। সেসব তহবিল তারা বিদেশে অর্থাৎ দেশের ইপিজেড বা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ দেবে। অফশোর ব্যাংকিংয়ের নেতিবাচক কোনো প্রভাব মূল ব্যাংকিংয়ে পড়বে না। তবে লাভ হলে তা মূল ব্যাংকের সাথে০ যোগ হবে। কিন্তু দেশের অফশোর ব্যাংকগুলো বিদেশ থেকে চাহিদা অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রায় আমানত সংগ্রহ করতে পারছিল না। যে কারণে তাদের মূল ব্যাংক থেকে ডলার স্থানান্তরের সুযোগ দেয়া হয়। কিন্তু এখন ডলার সঙ্কটের কারণে মূল ব্যাংক থেকে ডলার স্তানান্তর বন্ধ করতে হয়েছে।
সূত্র জানায়, মূলত ডলার সঙ্কট নিরসন ও বাজারে ডলারের প্রবাহ বাড়ানোর জন্য এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ফলে ব্যাংকগুলোর মূল ব্যাংকিং ইউনিট থেকে অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটে ডলার স্তানান্তর করা বন্ধ হবে। এতে বাজারে ডলারের প্রবাহ কিছুটা হলেও বাড়বে। এর বিপরীতে ব্যাংকগুলোর অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ বিতরণ কার্যক্রম সঙ্কোচিত হবে। একই সাথে উদ্যোক্তাদের বিদেশী মুদ্রায় ঋণ গ্রহণ সঙ্কোচিত হয়ে পড়বে। সার্বিকভাবে অফশোর ব্যাংকিং কার্যক্রমের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে।
এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, দেশের অনেক ব্যাংকেরই আলাদা অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট রয়েছে। ২০১৯ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ বেড়ে যখন রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে তখন মূল ব্যাংক থেকে অফশোর ব্যাংকিংয়ে ডলার স্তানান্তরের সুযোগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই সময়ে ব্যাংকের নগদ মূলধনের ২০ শতাংশ তহবিল অফশোর ব্যাংকিংয়ে স্থানান্তরের সুযোগ দেয়। ২০২০ সালে তহবিল স্থানান্তরের হার আরো বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করে। অর্থাৎ কোনো ব্যাংক তাদের মূল ইউনিট থেকে নগদ মূলধনের ৩০ শতাংশ তহবিল অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটে স্থানান্তর করতে পেরেছে। এসব তহবিল বৈদেশিক মুদ্রা বা স্থানীয় মুদ্রায় স্থানান্তর করা হয়েছে। স্থানীয় মুদ্রায় স্থানান্তর করা তহবিল দিয়ে অফশোর ইউনিট আবার বৈদেশিক মুদ্রা কিনেছে। সেগুলো ঋণ হিসেবে বিতরণ করেছে। অর্থাৎ বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে চাপ বেড়েছে। ওই সময়ে সরকারের সিদ্ধান্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগের নীতিমালাও করে। এর আলোকে একটি প্রকল্পে রিজার্ভ থেকে অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে।