Hot

কলকাঠি নাড়ছে দিল্লির দালালরা! পাহাড়িদের রহস্যজনক ‘আদিবাসী’ আন্দোলন

‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ চূড়ান্ত করতে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিতে অন্তর্বর্তী সরকার আয়োজিত সর্বদলীয় বৈঠক নিয়ে যখন সর্বত্রই আলোচনা; তখন হঠাৎ খবরের শিরোনাম ‘পাহাড়ি ছাত্র-জনতার ওপর হামলা’। পাহাড়ি ছাত্র-জনতা পাঠ্যপুস্তকে ‘আদিবাসী’ শব্দের সংযোজনের দাবিতে মতিঝিলের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) ঘেড়াও করতে গেলে স্টুডেন্ট ফর মুভমেন্ট নামের একটি সংগঠনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। পরের দিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোড়াও করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। গতকালও জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় (মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ) বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক নামের একটি সংগঠন সমাবেশ করে। বাংলাদেশে এর চেয়েও বড় ঘটনা, সংঘাত-সংঘর্ষ প্রতিদিন ঘটছে। সেগুলো গণমাধ্যমে গুরুত্ব পায় না। অথচ পাহাড়ি ছাত্রদের ওপর আক্রমণের খবর চেতনাধারী কয়েকটি মিডিয়া গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করেন। সর্বত্রই হৈচৈ ফেলে দেন।

এর আগে ১০ জানুয়ারি ‘শিক্ষা ও শিক্ষা রক্ষা’ নামের একটি ভুঁইফোড় সংগঠনের আহ্বায়ক রাখাল রাহা সেগুন বাগিচার রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে নবম-দশম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংযোজন না করা হলে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার হুমকি দেন। শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা টিআইবিসহ কয়েকটি এনজিও, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক নামের একটি সংগঠন এ ঘটনাকে ফুলিয়ে ফাপিয়ে প্রচার করে। ঘটনা নিয়ে থানায় মামলা হয়েছে এবং কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারপরও এনজিও, বিশ্ববিদ্যালয়ের তাবেদার কিছু শিক্ষক, কিছু বামপন্থী ব্যক্তি ও প্রতিবেশী দেশের চেতনাধারী কিছু গণমাধ্যমের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। ‘তিলকে তাল করা’ প্রবাদের সূত্র ধরে তারা ছোট্ট ঘটনাকে বৃহৎ ‘কলেবর’ দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে। পাহাড়ি কিছু মানুষকে দিয়ে পাঠ্যপুস্তকে ‘আদিবাসী’ শব্দটি সংযোজনের দাবিতে হুলুস্থুল বেধে দিয়েছেন। কিছু এনজিও এবং ওই সব ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানগুলো পাহাড়িদের ‘আদিবাসী’ মর্যাদা দেয়ার দাবিতে অশ্রুপাত করছেন। ‘আদিবাসী’ শব্দ না থাকলে পাহাড়িরা যেন ধ্বংস হয়ে যাবে। অথচ শেখ হাসিনার শাসনামলে কয়েকবার সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে। কখনোই তারা সংবিধানে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংযোজনের জোড়ালো দাবি করেননি। বরং পাহাড়িরা সমতলের নাগরিকদের চেয়ে বেশি সুবিধা ভোগ করছেন। সমতলের কোনো নাগরিক ইচ্ছা করলে পাহাড়ে জমি কিনতে পারেন না অথচ পাহাড়িরা দেশের যে কোনো প্রান্তে জমি ক্রয় করতে পারেন। বিভিন্ন চাকরিতে পাহাড়িরা সব ধরনের সুবিধা ভোগ করছেন। প্রশ্ন হচ্ছে হঠাৎ করে কেন এই দাবিতে পাহাড়িদের সোচ্চার করা হচ্ছে? রহস্য আর কিছু নয়; দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলা। ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ ও ‘ইসকন ইস্যু’ মাঠে মারা যাওয়ায় পাহাড়িদের উষ্কিয়ে ‘আদিবাসী’ শব্দ পাঠ্যবইয়ে সংযোজন দাবি ইস্যু সামনে এনে বিশৃংখলা সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে। পাহাড়িদের এ আন্দোলনের নেপথ্যে পর্দার আড়ালে কারা রয়েছেন তা ‘আদিবাসী’ শব্দের পক্ষে অবস্থান নিয়ে দৌঁড়ঝাপকারীদের দেখলেই অনুমান করা কঠিন নয়।

ভারত থেকে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা। ওই বছর জুলাই মাসে লন্ডন সফরের সময় বিবিসি বাংলার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বুশ হাউজে যান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে বিবিসিকে সাক্ষাতকার দেন। বিবিসি বাংলার প্রধান জন ক্ল্যাপহ্যামকে দেয়া সাক্ষাতকারে হাসিনাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল আপনার রাজনীতির উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য কী? জবাবে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘মাতা-পিতা হত্যার প্রতিশোধের জন্যই আমি রাজনীতি করছি, যতদিন বাঁচবো হত্যার প্রতিশোধ নিতেই থাকবো’। ’৯১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পরাজিত হলে শেখ হাসিনা বিরোধী দলের নেতা হিসেবে জাতীয় সংসদে হুংকার দিয়ে বলেছিলেন, ‘এই সরকারকে একদিনের জন্য শান্তিতে থাকতে দেব না’। ২০২৪ সালের ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর শেখ হাসিনা সেই ‘একদিনেও শান্তিতে থাকতে দেব না’ ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের উপর কার্যকর করছেন! পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর গত সাড়ে ৫ মাসে সামরিক ক্যু, জুডিশিয়াল ক্যু, আনসার দিয়ে সচিবালয় ঘেড়াও, সরকারি কর্মচারীদের দিয়ে দাবি-দাওয়ার আন্দোলন, গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিরতা, পাহাড়ে অশান্তি এবং সবশেষে ইসকন ইস্যু নিয়ে বিশৃংখলা সৃষ্টির চেষ্টা করেন। প্রতিটি চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর এখন হঠাৎ করে ‘আদিবাসী’ ইস্যু নিয়ে পাহাড়িদের রাস্তায় নামিয়ে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে।

জানা যায়, ২০২৫ শিক্ষা বর্ষের নবম ও দশম শ্রেণির ‘বাংলা ভাষার ও ব্যাকরণ নির্মিতি’ নামক বইয়ের শেষ কভারে একটি গ্রাফিতি দেয়া হয়। গাছের ছবির গ্রাফিতির ৫টি পাতা আঁকা হয়। পাতাগুলোয় আদিবাসী, বৌদ্ধ, মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান লিখে পাশে লেখা হয়েছে পাতা ছেঁড়া নিষেধ। একটি পাতায় ‘আদিবাসী’ লেখায় সংবিধানের আদিবাসী শব্দ না থাকার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর করার পর সেটা বাদ দেয়া হয়। মূলত প্রশাসনে হাসিনার অলিগার্ক আমলারা এখনো বহাল তবিয়তে থাকায় তারা বিতর্ক সৃষ্টি করতেই এমন অপকর্ম করেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, পাতাগুলোয় বৌদ্ধ, মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান লেখা রয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ একসঙ্গে বসবাস বোঝানো হয়েছে। কিন্তু ‘আদিবাসী’ কি কোনো ধর্ম? ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি হিসেবে পরিচিত পাহাড় এবং সমতলে যারা বসবাস করেন তারা নানা ধর্মের মানুষ। আদিবাসী নামের কোনো ধর্মের অস্তিত্ব নেই। সংবিধানে ‘আদিবাসী’ শব্দই নেই অথচ বইয়ে সেটা দেয়া হয়েছিল কেন? এটা কী পরিকল্পিতভাবেই করা হয়েছিল?

এখন দেখা যাক কারা এই ‘আদিবাসী’ শব্দের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বিশৃংখলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। জাতিধর্ম ও পাহাড়ি মানুষের অধিকার নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে অশ্রুপাত করছেন! টিআইবি, নিজেরা করিসহ কয়েকটি এনজিও পাহাড়িদের ‘আদিবাসী’ দাবি করে মতিঝিল ও হাইকোর্টের সামনের সংঘর্ষ নিয়ে অশ্রুপাত করে পাঠ্যপুস্তকে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংযোজনসহ হামলাকারীদের বিচারের দাবি করেছেন। তারা সরকারের বিরুদ্ধে পাহাড়িদের অধিকার ক্ষুণœ করার অভিযোগ তুলেছেন। টিআইবি প্রতিবাদ পত্রে দীর্ঘ বক্তব্য দিয়েছে। কিন্তু গত ১৫ বছর বিএনপি-জামায়াতের ওপর জুলুম নির্যাতন, লাখো কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা এসব নিয়ে সংগঠনটি তেমন প্রতিবাদ করেছে কি? সেটা দেখা যায়নি? এমনকি হাসিনা রেজিমেও পাহাড়িদের অধিকার নিয়ে তেমন সোচ্চার হতে দেখা যায়নি দুর্নীতি বিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থাটিকে। বিবৃতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ‘আদিবাসী পরিচয়ের বস্তুনিষ্ঠ ব্যাখ্যা এবং এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক চর্চার অনুসরণে অবস্থান নির্ধারণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’ দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটি হঠাৎ ‘আদিবাসী’ শব্দ পাঠ্যপুস্তকে সংযোজনের দাবির প্রতি সমর্থন দিচ্ছে কেন? বিষয়টি নিয়ে নাগরিক অধিকারের একাংশের নেতা তারেক রহমান বলেছেন, ‘ড. ইফতেখারুজ্জামানের স্ত্রীর কারণে টিআইবি ক্ষুদ্র বিষয়টি নিয়ে হাউকাউ করছেন’। এনজিও নেত্রী খুশি কবির পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দ তুলে দেয়ায় অখুশি হয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘সব ধর্মের সঙ্গে আদিবাসী শব্দ গ্রাফিতিতে লেখা কেন তুলে দেয়া হলো? অন্তর্বর্তী সরকার কেন পাঠ্য বইয়ের পিছনের গ্রাফিতি তুলে দেয়া হলো? তারা ছেলেদের রাস্তায় বেদম প্রহার করলো কেন? এর কঠিন বিচার চাই’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবাইদা নাসরিন একই ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশের মাধ্যমে ‘আদিবাসী’ শব্দের জন্য মায়াকান্না করেন। রাস্তায় পাহাড়ি ও ছাত্র জনতা ও স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ নিয়ে এনজিও নেত্রীদের এতো মায়াকান্না! অথচ হাসিনার রেজিমের ১৫ বছর যে ভাবে মানুষের উপর জুলুম নির্যাতন হয়েছে, দর্জি বিশ্বজিৎ, বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদসহ কত মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করেছে ছাত্রলীগ (বর্তমানে নিষিদ্ধ) তখন এরা কোনো শব্দ উচ্চারণ করেছেন? ৫ আগস্টের কয়েকদিন আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ভাবে ছাত্রলীগের হেলমেট, চাপাতি ও অস্ত্রধারীরা পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে তখন এই এনজিও নেত্রীরা নীরব থেকেছেন। বিগত ১৫ বছর হাসিনার নানামুখি জুলুম-নির্যাতনের সময় ‘নীরব’ থেকে হাসিনা বাহিনীর ত্রাসের প্রতি মৌন সমর্থন দিয়েছেন। অথচ এনজিও নেত্রীরা এখন পাহাড়িদের ওপর হামলা নিয়ে মায়াকান্না করছেন। এটা ঠিক কারো উপর হামলা সমর্থন করা যায় না? হামলাকারীদের বিচার হবে প্রচলিত আইনে। কিন্তু হঠাৎ করে এনজিও নেত্রীরা জেগে উঠলেন কেন?

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ) এক প্রতিবেদন পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার পর্যবেক্ষকদের অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে। সংগঠনটির এশিয়া অঞ্চলের উপ-পরিচালক ভারতীয় বংশদ্ভূত মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেছেন, ‘মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা বাহিনী অধিকার লঙ্ঘন অব্যাহত রেখেছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন’। মীনাক্ষী গাঙ্গুলির ভাবখানা যেন ১৬ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেড়াও করতে আসা পাহাড়ি ছাত্র জনতাকে ঠেকিয়ে দিয়ে মানবাধিকার লংঘন করেছে! দীর্ঘ ১৫ বছর হাসিনা রেজিমে এমনটা ঘটেনি! ১৫ বছর যেভাবে মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটেছে সেটা যেন চোখে দেখেননি। শুধু তাই নয়, সিরিয়ায় যেভাবে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে, কয়েক মাস ধরে গাজায় ইসরাইলি বাহিনী যে ধ্বংসজজ্ঞ চালিয়েছে সেগুলো নিয়ে বেশি মায়াকান্না দেখা যায়নি।

এইচআরডাব্লিউ’র শুধু মীনাক্ষী গাঙ্গুলিই নয়, জাতিসংঘ, আইএমএফ, এডিবিসহ আন্তর্জাতিক বড় বড় সংস্থা ও সংগঠনে ভারতীয়রা গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকরি করে থাকেন। তারা দিল্লির এজেন্ডা বাস্তবায়নে নানা ভাবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সংস্থাগুলোর নীতি নির্ধারণী কৌশলে প্রভাবিত করছেন। এতে করে দিল্লিতে পলাতক হাসিনা বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রে শক্তি যোগাচ্ছে।ভাব

পাহাড়ি ছাত্রদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক নামের একটি সংগঠন। সংগঠনটির ৭৮ জন দীর্ঘ এক বিবৃতিতে ‘আদিবাসী’ শব্দ নিয়ে মায়াকান্না করেছেন। শুধু তাই নয় গতকাল জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। মতিঝিলের এনসিটিবি’র সামনে ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র ওপর ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’র হামলা ও পরদিন ‘সংক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা’র সচিবালয় ঘেড়াও কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। প্রশ্ন হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের এই সংগঠন এতোদিন কোথায় মুখ লুকিয়ে ছিল? হাসিনার রেজিমে এরা আওয়ামী লীগ অনুগত সংগঠন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিসহ নিজ জিন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সংগঠনের হয়ে হাসিনার জুলুম-নির্যাতনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। হঠাৎ করে মানবাধিকার তাদের উথলে উঠলো?

পাহাড়ি ছাত্র-জনতার পাঠ্য পুস্তকে ‘আদিবাসী’ দাবির আন্দোলনে ঘি ঢেলে আগুন ছড়াতে সে খবর ফলাও করে প্রচার করছে দেশের একটি বাংলা, একটি ইংরেজি পত্রিকা এবং কিছু টিভি গণমাধ্যম ও অনলাইন পোর্টাল। তারা ছোট ঘটনাকে বিরাট ক্যানভাসে সচিত্র খবর প্রচার করছে। দিল্লি যেভাবে নাচায় এরা সে ভাবে নাচতে অভ্যস্ত। সংখ্যালঘু নির্যাতন ও ইসকন ইস্যুতেও এরা ভারতের গণমাধ্যমের তো মিথ্যা প্রচারণা চালিয়েছে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালিয়ে গেলেও ওই গণমাধ্যম ‘পালানো শব্দের ব্যবহার না করে’ লিখেছে ‘হাসিনা চলে গেছে’। শেখ হাসিনা ভারতের নরেন্দ্র মোদীর ‘নাচের পুতুল’ এটা সবাই জানেন। ইসরাইলের বন্ধু নরেন্দ্র মোদীকে খুশি করতে ৯২ ভাগ মুসলমানের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েও শেখ হাসিনা দিল্লির কৃতদাস প্রমাণ দিতে বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ‘এক্সেজ ইসরাইল’ শব্দটি বাদ দিয়েছেন। সূত্রের দাবি, শেখ হাসিনার সঙ্গে দিল্লির সেবাদাস বাংলা পত্রিকাটির সম্পাদকের আত্মীয়তার সম্পর্ক। হাসিনার ফুপাতো বোন হাবিবা রহমানের মেয়ে সাইকা জামান অনিকা ছিলেন ওই পত্রিকার সম্পাদকের পুত্র মাহমুদুর রহমান শাশা’র সাবেক স্ত্রী। এই আত্মীয়তার সূত্র কাজে লাগিয়ে দিল্লি পর্দার আড়ালে হাসিনার সঙ্গে ওই পত্রিকা সম্পাদকের সেতুবন্ধন করেন। হাসিনা রেজিমে বিগত ১৫ বছর প্রকাশ্যে তাদের মধ্যে ‘সতীনের মতো বিরোধ’ দেখা গেলেও দিল্লি ইস্যুতে তারা ছিলেন অভিন্ন। ভারতের চানক্যনীতিতে তারা প্রকাশ্যে শত্রুতা ভিতরে বন্ধু কৌশল নিয়েছিলেন। দিল্লি যেভাবে নির্দেশনা দেয় তারা দু’জনই সেটা নিজেদের মতো করে কার্যকর করেন। নরেন্দ্র মোদী এক সময়ের ধর্ম নিরপেক্ষ ভারতকে এখন হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলছে। সেখানে মুসলমানসহ সংখ্যালঘুদের ওপর প্রতিনিয়ত জুলুম-নির্যাতন হচ্ছে। এ সব নিয়ে হাসিনা যেমন কোনো সময় প্রশ্ন তোলেননি ওই তাবেদার গণমাধ্যমও কোনো প্রশ্ন তোলেনি। সে সব খবর দেশের অন্যান্য গণমাধ্যমগুলো ফলাও করে প্রচার করলেও ওই চিহ্নিত গণমাধ্যম ছেপেছে গুরুত্বহীন ভাবে। ছোট একটি উদাহরণ দিলেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে। ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মুক্তির দাবিতে ইসকন সমর্থকদের হামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হন। ঘটনা নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হলেও দিল্লির তাবেদার ওই পত্রিকা ‘চট্টগ্রামে আইন শৃংখলা বাহিনীর সঙ্গে চিন্ময় সমর্থকদের সংঘর্ষ’ শিরোনামে নিউজ করে। পাঠক এই শিরোনামের খবরে কি বোঝা যায় ইসকন সমর্থনদের হামলায় আইনজীবী নিহত?

বিদেশি অর্থে পরিচালিত কয়েকটি এনজিও, বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক, কিছু বাম ধারা রাজনীতিক ও দাদাদের তাবেদার গণমাধ্যম পাহাড়িদের ‘আদিবাসী’ শব্দ নিয়ে আন্দোলন করতে উষ্কাচ্ছে। দিল্লির আশ্রয়ে থাকা শেখ হাসিনা সব ধরনের ষড়যন্ত্রের কার্ড ব্যর্থ হয়ে যাওয়ার পর তিনি ওই পাহাড়িদের আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন। হাসিনার সেই পূরণ করার প্রাণান্তর চেষ্টা করছে দেশীয় তাবেদার দালাল চক্র।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
Toto Gacor
bacan4d
bacansport login
slot gacor
pasaran togel resmi
bacan4d
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
slotgacor
bacan4d rtp
bacan4d
bacan4d toto
Slot Casino
bacan4d toto
slot gacor
bacan4d
bacan4d
Slot Toto
bacan4d
bacan4d login
totoslotgacor
slot gacor
TOTO GACOR
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
toto slot
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
Slot Gacor
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor
situs togel
Toto Slot
xx1toto
bacansport
bacan4d
toto slot
situs toto
slot gacor
Toto Slot
slot maxwin
slot demo
bacan4d toto slot
bacan4d toto slot
bacan4d slot
bacan4d slot
bacan4d slot
bacansports
bacansports
bacansports
bacan4d slot
bacan4d slot
bacan4d
slot gacor
pasaran togel resmi
situs toto
bacan4d login
pasaran togel
pasaran togel
situs toto
bacan4d
bacan4d gacor
bacan4d slot
bacan4d rtp
bacan4d rtp
bacan4d slot gacor
toto slot
situs toto
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
toto gacor Toto Gacor bacan4d slot toto casino slot slot gacor bacantoto totogacorslot Toto gacor bacan4d login slotgacor bacan4d bacan4d toto Slot Gacor toto 4d bacan4d toto slot bacan4d slot gacor