Hot

কল্পিত মুনাফার লোভে বিনিয়োগ, রাজশাহীতে বিদেশি অ্যাপসের ফাঁদে সর্বস্বান্ত হাজারো মানুষ

অনলাইন প্রতারণার শতাধিক অভিযোগ সাইবার ক্রাইম ইউনিটে * ‘এমটিএফই’ অ্যাপসের মাধ্যমে টাকা পাচার হচ্ছে বিদেশে

রাজশাহীতে রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার স্বপ্নে বিদেশি অ্যাপসের ফাঁদে অনলাইনে বিনিয়োগ করে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন হাজারো মানুষ। আবার এজেন্ট বা প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করে কেউ কেউ কোটিপতিও বনে যাচ্ছেন। গত এক বছরে রাজশাহী মহানগরী ও জেলার বিভিন্ন থানায় অনলাইন প্রতারণার শতাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে আরএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিটে। প্রতারণার ফাঁদ পাতা এসব অ্যাপসের অধিকাংশই বিদেশি বলে পুলিশ দ্রুত সময়ে এসব সাইবার অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে পারছে না। তবে পুলিশ বলছে, এসব অ্যাপসের কোনো অনুমোদন নেই দেশে। তাই এসব অ্যাপসের বিষয়ে মানুষকে সতর্ক হতে হবে।

ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফেসবুকের নিউজ ফিডে বিভিন্ন বিদেশি অ্যাপসের লোভনীয় মুনাফার বিজ্ঞাপন প্রচার হচ্ছে। এর মধ্যে রাজশাহীতে বর্তমানে আগ্রহের শীর্ষে রয়েছে ‘এমটিএফই’ নামের একটি বিশেষ অ্যাপস। এই অ্যাপসে টাকা বিনিয়োগ করলে দ্রুত কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে অনলাইন প্রচার চালাচ্ছে কিছু যুবক। এই অ্যাপসের একটি হেল্প অফিসও খোলা হয়েছে মহানগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায়। কিছু যুবক অফিসটি পরিচালনা করছেন।

মানুষ অ্যাকাউন্ট খুলে অ্যাপসটিতে ইতোমধ্যে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন কিছু না বুঝেই। বিনিয়োগকারীরা টাকা দিচ্ছেন ইউএস ডলারের হিসাবে। এসব টাকা সঙ্গে সঙ্গে চলে যাচ্ছে বিদেশে, যেখান থেকে অ্যাপসটি পরিচালনা করা হচ্ছে। কমপক্ষে ৫০০ ডলার বিনিয়োগ করলে দিনশেষে পাঁচ হাজার টাকা লাভ আসবে। এই কল্পিত মুনাফার লোভে শত শত মানুষ বিনিয়োগ করছেন। অনেকেই গয়না-গাটি ও মূল্যবান সামগ্রী বন্ধক রেখেও বিনিয়োগ করছেন।

এমটিএফই অ্যাপসকে অনলাইনে প্রচারকারী রুবেল নামের এক যুবক বলেন, আমার মাধ্যমে যদি কেউ অ্যাপসে বিনিয়োগ করে তাহলে কিছু কমিশন আমার অ্যাকাউন্টে জমা হয়। যদি ১০০ জনকে বিনিয়োগ করাতে পারি তাহলে আমি অফিস পাব ও পদ বাড়বে। তবে অ্যাপস বন্ধ হয়ে গেলে দায়ভার তিনি নেবেন না বলে জানান। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশে এমটিএফই অ্যাপসের ৯ জন নির্বাহী আছেন। নগরীর লক্ষ্মীপুরে অ্যাপসের প্রতিনিধি দাবিকারী সবুজ নামের আরেক যুবক বলেন, কাউকে জোর করে বিনিয়োগ করানো হচ্ছে না। অ্যাপস বন্ধ হলে তারা কোনো দায়ভার নেবেন না বলেও জানান।

জানা গেছে, রাজশাহীর ডাঁশমারী এলাকার সবুজ, লিটন, এখলাসসহ কিছু যুবক আলটিমা নামের একটি অ্যাপসে প্রায় ২০ লাখ টাকার মতো বিনিয়োগ করেন। কয়েকবার কিছু টাকা পান। এরপর অ্যাপসটি বন্ধ হয়ে যায়। বোয়ালিয়া থানায় গত ২৬ জুন সবুজ আলী বাদী হয়ে ডিজিটাল আইনে মামলা করেন। পুলিশ রাজশাহীতে অভিযান চালিয়ে আলটিমার সঙ্গে জড়িত ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে। এর আগেও রাজশাহীতে মুভি অ্যাপস নামের অনলাইন মাধ্যমে বিনিয়োগ করে কয়েক কোটি টাকা খুইয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।

শিরোইলে একটি অফিস পরিচালনা করতেন মানিকসহ কিছু যুবক। মুভি অ্যাপসটি চলতি বছরের প্রথমদিকে বন্ধ হয়ে গেলে মানিকও গাঢাকা দেন। মানিকের বিরুদ্ধে নগরীর চন্দি মা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন তিন শতাধিক ভুক্তভোগী। পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করলেও কেউ টাকা ফেরত পাননি। আরএমপির মিডিয়া সেলের মুখপাত্র এডিসি রফিকুল আলম বলেন, এসব অ্যাপসের দেশে কোনো অনুমোদন নেই। এসব অ্যাপসের মাধ্যমে টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। কারও ধোঁকায় না পড়ে বিদেশি অ্যাপসে বিনিয়োগ করার আগে সতর্ক হতে পরামর্শ দেন তিনি।

Show More

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d