Science & Tech

কাঁকড়াও ব্যাথা অনুভব করতে পারে, দাবি নতুন গবেষণায়

কাঁকড়াও ব্যাথা অনুভব করতে পারে, এমনই দাবি নতুন এক গবেষণার। ফলে ‘শেলফিশ’ প্রজাতির এ প্রাণীটিকে আরও মানবিক উপায়ে হত্যা করার আহ্বান জানিয়েছেন অনেকে।

রান্নাঘরে কাঁকড়া ও লবস্টার রান্না করার সাধারণ পদ্ধতি হচ্ছে তাদেরকে জ্যান্ত অবস্থায় সেদ্ধ করা। তবে ‘ইউনিভার্সিটি অফ গথেনবার্গ’-এর যে গবেষকরা এ প্রাণীর ব্যাথা অনুভব করার বিষয়টি সামনে এনেছেন। তাদের মতে- এর চেয়ে কম ব্যাথাওয়ালা বিকল্প খোঁজা উচিৎ এখন।

ইউনিভার্সিটির পিএইচডি শিক্ষার্থী এলিফথেরিওস ক্যাসিওরাস এ গবেষণায় দেখতে পান, কাঁকড়ার বেদনাদায়ক উদ্দীপনা মস্তিষ্কে গিয়ে পৌঁছানোর পর এর প্রক্রিয়াকরণ শুরু হয়। তিনি আরও যোগ করেন, প্রাণিটির ব্যাথা অনুভব করার ‘বড় প্রমাণ’ এটি।

এটিই প্রথম গবেষণা- যেখানে এইসব প্রাণীর স্নায়ুতন্ত্র যে ক্ষতিকারক উদ্দীপনায় সাড়া দিতে পারে, তার প্রমাণ মিলেছে। ক্যাসিওরাস ও তার গবেষণা দল ২০টি উপকূলীয় কাঁকড়ার মস্তিষ্কের গতিবিধি পরিমাপ করেছেন ‘গ্যাংলিয়া’ নামে ডাকা স্নায়ু সেটের সঙ্গে ইলেক্ট্রোড যোগ করে। আর এইসব স্নায়ু সমন্বিত হয়ে কাঁকড়ার কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র তৈরি হয়।

এরপর তারা কাঁকড়ার শরীরের বিভিন্ন নরম টিস্যুতে বেশ কয়েক ধরনের উদ্দীপনা প্রয়োগ করেন, যার মধ্যে রয়েছে সিরকা প্রয়োগ ও বৈদ্যুতিক শক দেওয়ার মতো ঘটনাও। এর ফলে, তাদের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ বেড়ে যেতে দেখা গেছে। তবে কাঁকড়ার দেহে লবণ পানি ও অন্যান্য অ-বেদনাদায়ক উদ্দীপনা প্রয়োগ করার পর এই একই ধরনের প্রভাব দেখা যায়নি।

ক্যাসিওরাস বলেছেন, এর থেকে ইঙ্গিত মেলে, কাঁকড়ার ব্যাথার অনুভূতি ‘এর মস্তিষ্কে স্থানান্তরিত’ হয়। এমনকি মানুষ ও অন্যান্য অনেক প্রাণীর ক্ষেত্রেও এই একই ঘটনা ঘটে। এর আগের গবেষণাটি প্রধানত পর্যবেক্ষণমূলক ছিল, যেখানে কাঁকড়ার শক্ত আবরণ যেখানে দেহের মূল অংশের সঙ্গে যুক্ত থাকে, সেখান ব্যথা পেতে পারে কাঁকড়া।

এইসব কঠিন আবরণযুক্ত প্রাণী ও কাঁকড়া মেরে ফেলার ক্ষেত্রে আরও মানবিক উপায় ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছে গবেষণা দলটি। ক্যাসিওরাস বলেন, তারা যদি সত্যিই কষ্ট পেয়ে থাকে, তাহলে আমাদেরকে এই ব্যাথা যতটা সম্ভব কমিয়ে আনার নতুন উপায় খুঁজে দেখতে হবে,” বলেন ।

এদিকে, খামারে চাষ করা কাঁকড়াগুলোকে প্রায়শই ছোট ট্যাংকে একত্রে রাখা হয়, যাকে ক্যাসিওরাস আখ্যা দিয়েছেন ‘খুবই বাজে পরিস্থিতি’ বলে। যুক্তরাজ্য কাঁকড়াকে সংবেদনশীল প্রাণী হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রাণী কল্যাণ আইনে এর কথা উল্লেখ নেই।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button