কারাবন্দিদের হাতে জিম্মি ইকুয়েডরের নিরাপত্তা বাহিনীর ৫৭ সদস্য
ইকুয়েডরে কারাগারের ভেতর আটক গ্যাং সদস্যদের কাছে থাকা অস্ত্র ও অন্যান্য অবৈধ জিনিসপত্র উদ্ধারে কয়েক দিন ধরে অভিযান চালাচ্ছেন আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এ অবস্থায় কারারক্ষীদের জিম্মি করার ঘটনা ঘটেছে দেশটিতে। কারাগারের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৫৭ গার্ড ও পুলিশ সদস্য ইকুয়েডরে কারাগারে থাকা বন্দিদের হাতে জিম্মি হয়েছেন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দেশটির কারা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এসব কারাবন্দি মূলত সংগঠিত গ্যাংয়ের সদস্য। কুয়েনকা কারাগারের ভেতর জিম্মি কারারক্ষী ও পুলিশ সদস্যরা তাদের জীবন বাঁচাতে সরকারের প্রতি আবেদন করেছেন। গত বুধবার থেকে কুয়েনকা কারাগারের বাইরের সেনাবাহিনীর ৪০০ ও পুলিশের ২০০ সদস্য অবস্থান নিয়ে আছেন। কিন্তু তারা ভেতরে প্রবেশ করতে পারছেন না।
ইকুয়েডরের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জুয়ান জাপাতা রাজধানী কোয়েতোতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা আমাদের কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কুয়েনকা শহরের একটি কারাগারেই নিরাপত্তা বাহিনীর ওই ৫৭ সদস্যকে জিম্মি করা হয়েছিল।’
কারাগারের ভেতর গ্যাংদের নিয়ন্ত্রণে নিতে গত ২৪ এপ্রিল ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট লাসসো কারা ব্যবস্থায় ৬০ দিনের জরুরি অবস্থা জারি করেন। এর মাধ্যমে কারাগারের ভেতর ক্লিনআপ অভিযান চালাতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের কয়েক শ সদস্য মোতায়েন করা হয়। অভিযানে অবৈধ অস্ত্র, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, বিস্ফোরক, মদ ও নগদ অর্থ উদ্ধার করেন তারা। এ অভিযান চালানো শুরু হলে গ্যাং সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তবে কারা কর্তৃপক্ষ পরবর্তী সময়ে জানায়, কুয়েনকার বন্দিদের অন্যত্র স্থানান্তরের পরিকল্পনা করায় তারা এমন বিদ্রোহ শুরু করেছে।
কারাগারে এমন অভিযান চলার সময় কুইতো শহরে দুটি গাড়িবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। অভিযানের বদলা নিতে গ্যাংয়ের সদস্যরা এ বোমা হামলা চালিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ ঘটনায় প্রেসিডেন্ট গুইলারমো লাসসো বলেছেন, ‘বিভিন্ন হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড চলছে। গত রাতে কুইতোতে দুটি গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। পরিষ্কারভাবে এটি আমাদের অভিযানের বদলা নিতে করা হয়েছে। কারাগারে আইন প্রতিষ্ঠার চেষ্টার কারণে ভয় দেখানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’
ইকুয়েডরের মাদক চোরাকারবারি গ্যাংগুলো দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার দখল নিয়ে লড়াই চালাচ্ছে। ক্ষমতা দেখানোর জন্য গ্যাংগুলো কারাগারে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে। দেশটিতে অপরাধী গ্যাং লস লাবোস ও অন্য গ্যাংগুলোর মধ্যে সংঘর্ষে ২০২১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ইকুয়েডরে কারাগারের ভেতর ৪৩০ জন নিহত হয়েছেন।