Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Bangladesh

কারিগরির ৪০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প: মান নয়, চোখ ছিল লুটপাটে

দেশে উন্নত প্রযুক্তি ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে এক দশকে বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকা। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী এগুতে পারেনি কারিগরি (টেকনিক্যাল) শিক্ষা। বিদ্যমান শিক্ষা কাঠামো উন্নত না করে নতুন নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, ভবন নির্মাণে ঝোঁক ছিল নীতি নির্ধারকদের। মান উন্নয়ন না করে লুটপাটেই চোখ ছিল তাদের। ফলে কারিগরি শিক্ষা খাতে কাড়ি কাড়ি অর্থ খরচ হলেও এ খাতে শিক্ষার মান উন্নয়ন হয়নি।
বিবিএস’র সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের মধ্যে মোট শিক্ষিত জনশক্তির মাত্র শূন্য দশমিক ৮১ শতাংশ এ খাতের ছিল। বারংবার শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য আধুনিক কারিকুলাম, প্রাকটিক্যাল সামগ্রী বৃদ্ধির সুপারিশ করা হলেও বিগত সরকারের নজর ছিল বড় প্রকল্পে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে মোটা দাগে চলমান রয়েছে ১২টি প্রকল্প। যার প্রাক্কলিত ব্যয় ৪০ হাজার ৭৬৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। ১২ প্রকল্পের আটটিই ভবন নির্মাণ ও ক্রয়সংক্রান্ত। এই ১২ প্রকল্পের মধ্যে সব থেকে বড় বাজেটের প্রকল্প উপজেলা পর্যায়ে ৩২৯টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ (টিএসসি) স্থাপন। যার প্রাক্কলিত ব্যয় ২০ হাজার ৫২৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে। সম্পূর্ণ সরকারি ব্যয়ের এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি একটি করে কারিগরি বিষয় অন্তর্ভুক্তির প্রয়োজনীয় সুবিধা সৃষ্টিকরণ। এসএসসি (ভোক.) ও এইচএসসি (ভোক.) কোর্স চালু করার মাধ্যমে দেশব্যাপী কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার সম্প্রসারণ। কর্মক্ষম যুবকদের দেশে ও বিদেশে বর্তমান এবং ভবিষ্যত চাকরি বাজারের চাহিদার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবিকা সংস্থানের লক্ষ্যে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিকরণ। যার মাধ্যমে চারটি করে ট্রেড ও স্বল্পমেয়াদি প্যারাট্রেড কোর্স চালুকরণ।
এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত ভূমি অধিগ্রহণ/ক্রয়, ভূমি উন্নয়ন, একাডেমিক কাম প্রশাসনিক ভবন, শিক্ষক ডরমেটরি, ২০০ শয্যাবিশিষ্ট ছাত্রীনিবাস, সীমানা প্রাচীর ও গেট নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, গার্ডরুম, বৈদ্যুতিক স্থাপনা, গভীর নলকূপ, আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াটার রিজার্ভার, ওভারহেড ওয়াটার ট্যাংক, শহীদ মিনার, মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ, অভ্যন্তরীণ সারফেস ড্রেন, পুকুর ও বৃক্ষরোপণ, গ্যাস লাইন সংযোগ, ট্রান্সপোর্ট/ভেহিক্যাল, মেশিনারি/যন্ত্রপাতি, শিক্ষা ও শিখন উপকরণ।
আরেকটি প্রকল্প ১০০টি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ (টিএসসি) স্থাপন প্রকল্প। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে যার ব্যয় ২ হাজার ৩৩৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। যার উদ্দেশ্যও একই। চার উপজেলায় ভূমি জরিপ শিক্ষার উন্নয়ন। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। উপজেলা চারটি হলো কুমিল্লা সদর, রাজশাহী সদর, পটুয়াখালী জেলার দশমিনা ও যশোর জেলার মণিরামপুরে। এর উদ্দেশ্য ধরা হয় চার বিষয়ে (ল্যান্ড রিসোর্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সাইন্স, ফটোগ্রাফি অ্যান্ড ডিজিটাল ইমেজিং, ল্যান্ডস্কেপ আর্কিটেকচার ও ল্যান্ডস্কেপ ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ারিং) চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চালু করা।
আরেকটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে ২৩টি জেলায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৬৯১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। যার মাধ্যমে প্রত্যেক শিফটে ৯২০০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করানো সম্ভব। ২৩ জেলা হলো- গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, নারায়ণগঞ্জ, রাজবাড়ী, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, নোয়াখালী, নাটোর, জয়পুরহাট, বাগেরহাট, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, নড়াইল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, সুনামগঞ্জ, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, পঞ্চগড়, নেত্রকোনা ও জামালপুর।
সিলেট, বরিশাল, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগীয় শহরে ৪টি মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্প। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। যার উদ্দেশ্য চার মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হতে প্রতি বছর ১৬০০ জন মহিলা শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি করা। আরেকটি প্রকল্প হলো কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরাধীন ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের সক্ষমতা বৃদ্ধি। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। খাগড়াছড়ি, নড়াইল, নওগাঁ ও ঠাকুরগাঁও জেলায় একটি করে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন। যার ব্যয় এক হাজার ২২২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। অ্যাকসেলারেটিং অ্যান্ড স্ট্রেনদেনিং স্কিলস ফর ইকোনমিক ট্রান্সফরমেশন (এএসএসইটি) প্রকল্প। যার উদ্দেশ্য শ্রমবাজারের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভবিষ্যৎ কর্মে প্রযুক্তির ব্যবহারের দক্ষতা যুবসমাজের জন্য নিশ্চিত করা এবং শ্রমবাজারে নারী ও সুবিধাবঞ্চিতদের অবদানের হার বৃদ্ধি করা। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ২৯৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এই প্রকল্পে সরকারের ব্যয় ১ হাজার ৭১৯ কোটি ৯৯ লাখ ২৪ হাজার টাকা। আর বিশ্ব ব্যাংক (আইডিএ)’র ২ হাজার ৫৮০ কোটি ৩১ হাজার টাকা। ২১ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নাগরিকদের সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্প। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এতে সরকারের খরচ ৮৫০ কোটি টাকা।
৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬৫৩টি মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন। মাদ্রাসা এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম সাপোর্ট স্থাপন। যার ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ১২ লাখ ৬১ হাজার টাকা ও নির্বাচিত মাদ্রাসাসমূহের উন্নয়ন প্রকল্প। যার ব্যয় ধরা হয় ৬ হাজার ৩৪৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এর উদ্দেশ্য ধরা হয় শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতকরণসহ ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জনের নিমিত্ত নির্বাচিত ১৮০০টি মাদ্রাসার নির্মিত অবকাঠামোর অভ্যন্তরীণ বৈদ্যুতিকরণ, স্যানিটেশন ও পানি সরবরাহ নিশ্চিতকরণ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে উন্নত প্রযুক্তি ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে একদশকে বিনিয়োগ হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী এগুতে পারেনি কারিগরি (টেকনিক্যাল) শিক্ষা। ২০২৩ সালে মোট শিক্ষিত জনশক্তির মাত্র শূন্য দশমিক ৮১ শতাংশ এই খাত থেকে এসেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, একদশকেরও বেশি সময়ে শিক্ষিত জনশক্তি (৫ বছরের বেশি বয়সী) শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ বেড়ে শূন্য দশমিক ৮১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০১১ সালে ছিল শূন্য দশমিক ৭১ শতাংশ।
বিবিএসের প্রতিবেদন বলছে, দেশে পাঁচ বছরের বেশি বয়সের ১০ কোটি ৫৭ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা নিয়েছে। অথচ ২০১৮ থেকে ২০২৪ অর্থবছর পর্যন্ত সাত বছরে সরকার টেকনিক্যাল ও মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে ৫৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করেছে। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, মাদ্রাসা শিক্ষায় কিছুটা অগ্রগতি হলেও কারিগরি শিক্ষা এখনো দুর্বল অবস্থানে রয়ে গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ২০১১ সালে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত জনশক্তি ছিল ৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ। ২০২২ সালে বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ১৯ শতাংশ। অথচ গত ১৫ বছরে কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণে (টিভিইটি) ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৩ সাল পর্যন্ত দেশে ১১ হাজার ১১৮টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত ও সনদভিত্তিক কোর্স, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, ডিপ্লোমা ও উচ্চশিক্ষা নিতে পারছেন শিক্ষার্থীরা। মোট শিক্ষার্থী রয়েছে ১৩ লাখ ৬৮ হাজারের বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের কারিগরি শিক্ষায় এখনো কর্মসংস্থানের সুযোগ কম। ফলে অনেকে সনদ নেয়ার জন্য বা সাময়িকভাবে এ শিক্ষায় আসছেন। কিন্তু শিখছেন না কিছুই। এ ছাড়া মান নিয়ে এখনো বড় ধরনের প্রশ্ন রয়েছে। ফলে এ শিক্ষা এখনো সেভাবে এগুতে পারেনি।
কোটি কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিলেও প্রধান কাজ শিক্ষার্থীদের উন্নয়ন ও পাঠের উন্নয়ন হয়নি। কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় শিক্ষক পদের ৭০ শতাংশই শূন্য। নানা ধরনের ভবন করার উদ্যোগ নেয়া হলেও এসবে নজর দেয়া হয়নি। এ ছাড়াও জনশক্তি ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান ব্যুরোর অধীন কারিগরি প্রতিষ্ঠানেও প্রায় ৬০ শতাংশ শিক্ষক পদ শূন্য। বিভিন্ন টেকনোলজি ও কোর্সের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ল্যাবরেটরি নেই।
রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউশনের শিক্ষক ওয়াসফিয়া নাজনিন বলেন, আমাদের নতুন ভবনের থেকেও অধিক জরুরি সিলেবাস আপডেট করা। মান্ধাতা আমলের সিলেবাসে পড়ে শিক্ষার্থীরা সাধারণ বাড়ির কাজের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। শিক্ষক সংকট একটা প্রধান সমস্যা।
তিনি সুপারিশ করে বলেন, তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নের এই যুগে ৯০ দশকের মতো করে আমরা শিক্ষাদান করছি। আমাদের দেশের প্রচুর মানুষ বিদেশে যাচ্ছে আন-স্কিলড হয়ে। আমরা যদি এই শিক্ষার্থীদের আপগ্রেডেশনের মাধ্যমে তাদের বিদেশমুখী করতে পারি তবে দেশের জন্য অনেক ভালো হবে। আর আমাদের একটা ধারণা হয়েছে যাদের যাবার কোনো জায়গা নেই, ফল খারাপ তাদের জন্য কারিগরি শিক্ষা। কিন্তু আয়মুখী এই শিক্ষার প্রচারণা এতটাই নগণ্য যে আমরা এর মূল্যায়নটাই বোঝাতে সক্ষম হয়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী বলেন, তারা শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য এসব অর্থব্যয় করেননি। তারা যদি মান উন্নয়ন করতে চাইতেন তাহলে প্রথমে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতেন। এরপর ভবনের দিকে নজর দিতেন। তারা কারিগরি শিক্ষাকে মান্ধাতার আমলের করে রেখেছেন কিন্তু টাকা ঠিকই আত্মসাৎ করেছেন। কারিগরি শিক্ষাকে করতে হবে কর্মমুখী, গণমুখী।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto