Hot

সাইবার নিরাপত্তা আইন: পুরোনো পণ্য, নতুন মোড়কে?

‘যেহেতু আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে, তাই নাম পরিবর্তন করে সরকার বিদেশি সংস্থা, দেশীয় মানবাধিকার সংস্থা এবং সাধারণ নাগরিকদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছে — যাতে তারা আগের আইন নিয়ে আর কোনো প্রশ্ন তুলতে না পারে।’

বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে প্রতিস্থাপনের উদ্দেশ্যে তৈরি করা নতুন প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনকে আইন বিশেষজ্ঞরা নতুন মোড়কে একই জিনিস বলে মনে করছেন।

নতুন কিছু সংযুক্ত করা ছাড়াই এটিকে একই বিষয়ের পুনরায় উপস্থাপন হিসেবে দেখছেন তারা। এ আইন খুব বেশি পরিবর্তন আনবে বলে প্রত্যাশা করতে পারছেন না এ বিশেষজ্ঞরা।

দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এর সঙ্গে আলাপকালে মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক নূর খান লিটন বলেন, ‘পুরোনো আইনের সব বিধান নতুন আইনে রাখা হয়েছে, কেবল শাস্তি ও জামিনের ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে।’

Unibots.in

তিনি আরও বলেন, ‘এটাকে নতুন মোড়কে পুরাতন নিবর্তনমূলক আইন বলবৎ রাখা বলা যায়।’

‘বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংস্থা ও মানাধিকার সংগঠনগুলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিল। কেউ কেউ আইনটির নিবর্তনমূলক ধারাগুলো বাতিলের দাবি জানিয়েছে। কিন্তু কোনোটিই আমলে নেয়নি সরকার,’ তিনি আরও বলেন।

‘যেহেতু আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে, তাই নাম পরিবর্তন করে সরকার বিদেশি সংস্থা, দেশীয় মানবাধিকার সংস্থা এবং সাধারণ নাগরিকদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছে — যাতে তারা আগের আইন নিয়ে আর কোনো প্রশ্ন তুলতে না পারে।’

এ মানবাধিকারকর্মী আরও বলেন, আগের আইনে গ্রেপ্তার বা তল্লাশির ব্যাপক ক্ষমতা পুলিশকে দেওয়া আছে, যেটির কোনো পরিবর্তন করা হয়নি।

বিবিসি বাংলার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বিশিষ্ট আইনবিদ শাহদীন মালিক বলেছেন, ‘শুধু একটি বা দুটি ক্ষেত্রে সাজা হ্রাস করা হয়েছে। এছাড়া, দ্বিতীয় অপরাধের জন্য দ্বিগুণ শাস্তির বিধান বাতিল করা হয়েছে।’

‘কিন্তু যারা এ আইনের অপব্যবহারের শিকার হন, তাদের আশাবাদী হওয়ার কিছু নেই। আগে সাত বছরের জেল হতো, এখন তিন বছরের জেল হবে,’ বলেন তিনি।

আইনটি সম্পর্কে মৌলিক আপত্তিসমূহ এখনও রয়ে গেছে বলে মনে করেন বিশিষ্ট এ আইনজ্ঞ। ‘অপমান’ এবং ‘মানহানির’ মতো বিষয়গুলোকে দেওয়ানি আইনে বিচার করা উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের মামলা ফৌজদারি আইনে বিচার করা হচ্ছে। এটি একটি বড় আপত্তির জায়গা। এ ক্ষেত্রগুলো পরিবর্তন করা হয়নি।’

সবচেয়ে আলোচিত পরিবর্তনগুলোর মধ্যে একটি হলো মানহানির মামলায় কারাদণ্ডের সাজা বাতিল করা। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ‘মানহানিকর তথ্যের প্রকাশ, প্রচার’ শীর্ষক ধারা-২৯ (১)-এ সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড, সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

সাইবার নিরাপত্তা আইনের অধীনে কারাদণ্ডের ধারা বাতিল করা হবে, কিন্তু সর্বোচ্চ জরিমানা পাঁচ গুণ বাড়িয়ে ২৫ লাখ টাকা করা হবে।

প্রকৃতপক্ষে, বেশিরভাগ পরিবর্তনের ক্ষেত্রেই কারাদণ্ডের মেয়াদ কমানো হয়েছে। যদিও ধারার ভাষা কমবেশি একই রাখা হয়েছে।

তবে বারবার অপরাধের জন্য ক্রমবর্ধমান কঠোর শাস্তি কিছু ক্ষেত্রে কমানো হয়েছে। এছাড়া কিছু অপরাধ — যেগুলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে জামিন-অযোগ্য ছিল — এখন জামিনযোগ্য হয়েছে।

তবে আইনটি পাস হওয়ার পর কীভাবে ব্যবহার করা হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই যায়।

জুনে সংসদীয় অধিবেশনে বক্তৃতাকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে এ বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারাদেশে প্রায় ৭,০০১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ জানুয়ারিতে জানায়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে হওয়া মামলার কেবল দুই শতাংশ আদালত পর্যন্ত পৌঁছেছিল।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d