USA

কেন হিলারির নারীবাদী প্রচার কৌশল এড়িয়ে যাচ্ছেন কমলা?

আসন্ন মার্কিন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে কমলা হ্যারিস ও হিলারি ক্লিনটনের মধ্যে অনেক ফারাক রয়েছে বলেই মনে করছেন এমা ব্রকেস। ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ানের এই কলাম লেখক বলেছেন, নির্বাচনি বয়ানের দিক দিয়ে তাদের মধ্যে অনেক তফাৎ, তা পরিষ্কারভাবেই বোঝা যাচ্ছে।

২০০৮ সালে ডেমোক্রেটিক প্রাইমারির সময় হিলারি প্রচারণা চালানোর সময় নারী-পুরুষের মাঝখানে একটি কাচের দেয়াল তোলা আছে বলে বারবার উল্লেখ করেছিলেন। তিনি তাকে নির্বাচিত করার মধ্য দিয়ে সেই বৈষম্যের দেয়াল ভেঙে ফেলার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। প্রাইমারিতে তিনি ১ কোটি ৮০ লাখ ভোট পেয়েও শেষ পর্যন্ত ওবামার কাছে হেরে গিয়েছিলেন। ওই হারের পর হিলারি ‘কাচের দেয়ালে ১ কোটি ৮০ লাখ আঁচড়’ পড়েছে বলে উল্লেখ করেছিলেন।

এরপর ২০১৬ ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনয়ন পাওয়ার পর হিলারি বলেছিলেন, ‘আমরা কাচের দেয়ালে এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় ফাটল ধরিয়ে দিতে পেরেছি।’ তবে শেষ পর্যন্ত হিলারি সেই কাচের দেয়াল ভেঙে ফেলতে পারেননি।

অর্থাৎ নারী ইস্যুতে তিনি সফল হতে পারেননি। কারণ, তাকে পরাজয়ের খবর শুনতে হয়েছিল।

এই লেখকের দাবি, কমলা এখন পর্যন্ত একবারও হিলারির সেই কাচের দেয়াল ভাঙা নিয়ে কোনো কথা বলেননি। মানে, নির্বাচনী প্রচারণায় নারীবাদকে তিনি কখনোই সামনে আনেননি। আসলে চিত্রকল্প হিসেবে কাচের দেয়ালটি খুব দ্রুত সেকেলে হয়ে গেছে।

এমনকি হিলারির সময়ই তা অর্থ হারিয়ে ফেলেছিল। হয়তো সে কারণেই কমলা একজন হেরে যাওয়া নারী প্রার্থীর কোনো নির্বাচনী অনুষঙ্গ বা কোনো প্রতীকী বিষয়ের সঙ্গে নিজেকে জড়াতে চান না।

মনে হচ্ছে কমলার প্রচারণার ধরনকে ডেমোক্রেটিক পার্টি অধিকতর সূক্ষ্মভাবে পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কমলা জয়ী হলে তিনি যে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হবেন, তা নয়। জয়ী হলে তিনি হবেন প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী প্রেসিডেন্ট; দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত প্রথম প্রেসিডেন্ট। এই সত্য উল্লেখ করা প্রচারণার একটি প্রধান অলংকৃত অংশ নয়। এমা বলেছেন, ডেমোক্রেটিক পার্টির নির্বাচনি প্রচারশিবির কমলার এই পয়েন্টকে মোটেও সামনে আনছে না। অবশ্য এর মানে এই নয় যে কমলা তাঁর বংশপরিচয়, তার বেড়ে ওঠা বা আনুষঙ্গিক পটভূমি নিয়ে কোনো লুকোচুরি খেলছেন। ট্রাম্প সপ্তাহ দুয়েক আগে অন্য রিপাবলিকানদের বিব্রত করে দিয়ে কমলার বিরুদ্ধে পরিচয় পরিবর্তন করে ‘একজন কৃষ্ণাঙ্গ হয়ে ওঠার’ অভিযোগ করেছেন। ট্রাম্পের এই আচরণ আরও একবার প্রমাণ করেছে, তিনি মানসিকভাবে ঠিক আছেন কি না, তার পরীক্ষা হওয়া দরকার।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button