কেবল মস্তিষ্কেই নয়, দেহের কোষেও স্মৃতি থাকে
বেশিরভাগ মানুষের ধারণা স্মৃতি কেবল মস্তিষ্কেই জমা থাকে। তবে এ ধারণাকে বদলে দিয়েছে সাম্প্রতিক এক গবেষণা। নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে, কেবল মস্তিষ্কই নয় মনে রাখতে পারে দেহের অন্যান্য অংশের বিভিন্ন কোষও। এ বিস্ময়কর আবিষ্কারটি করেছে নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি বা এনওয়াইইউর বিজ্ঞানীদের একটি দল। তারা বলছেন, মস্তিষ্কের কোষের মতোই স্মৃতি মনে রাখতে পারে অ-মস্তিষ্ক কোষ। অ-মস্তিষ্ক কোষ নন-নিউরোনাল কোষ হিসাবেও পরিচিত, যা মূলত স্নায়ুতন্ত্রের নিউরন কোষ নয়। খবর রয়টার্সের।
মানুষের শেখার উন্নতি ও স্মৃতি-সম্পর্কিত চিকিৎসার জন্য নতুন উপায় খুলে দিয়েছে এ যুগান্তকারী আবিষ্কার। কারণ, প্রচলিতভাবে স্মৃতি ও মানুষের শেখার সঙ্গে সংযোগ রয়েছে মস্তিষ্কের। বিশেষ করে মস্তিষ্কের নিউরন বা এর কোষের। মস্তিষ্কের বাইরের বিভিন্ন কোষেরও স্মৃতি ধরে রাখার মতো সক্ষমতা রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখেছেন গবেষক নিকোলাই ভি কুকুশকিনের নেতৃত্বে এনওয়াইইউর এই গবেষণা দলটি। গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল নেচার কমিউনিকেশন্সে। গবেষণায় স্নায়ু ও কিডনি টিস্যু অর্থাৎ দেহের দুই ধরনের কোষের উপর নজর দিয়েছেন গবেষকরা। মানুষের শেখার সিমুলেশন বা অনুকরণ করতে দেহের এই দুটি কোষকে রাসায়নিক সংকেতের বিভিন্ন প্যাটার্নের সঙ্গে প্রকাশ করেছেন গবেষকরা। মানুষ যখন নতুন কিছু শেখে তখন মস্তিষ্কের বিভিন্ন নিউরন নিউরোট্রান্সমিটারের প্রতি যেভাবে প্রতিক্রিয়া জানায় বা সাড়া দেয় বিষয়টি তেমনই। এক্ষেত্রে বিস্ময়করভাবে দেহের এসব কোষ মেমরি জিন তৈরির মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানায় মস্তিষ্কের বিভিন্ন কোষে স্মৃতি জমানোর বেলাতেও সক্রিয় হয় এই একই জিন। এ মেমরি জিনের কাজের প্রক্রিয়া ট্র্যাক করতে এক চতুর উপায় ব্যবহার করেছেন গবেষকরা। এসব কোষকে এক উজ্জ্বল প্রোটিন হিসেবে তৈরির জন্য রূপান্তর করেন তারা, যেখানে মেমরি জিনটি সক্রিয় থাকলে তা আলোকিত হয়ে উঠবে। এর মাধ্যমে গবেষকরা বুঝতে পারেন, কখন রাসায়নিক সংকেতগুলো মনে রাখে এসব কোষ। দেহের এসব কোষ কীভাবে সংকেতগুলো পেয়েছে এর উপর ভিত্তি করে এসব কোষ আলাদাভাবে সাড়া দিয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ।