কোটা আন্দোলনে আহতদের বিনা খরচে চিকিৎসা, ১৭ই আগস্ট খুলছে মেট্রোরেল, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দমনপীড়নে আহত ছাত্র-জনতাকে বিনা খরচে চিকিৎসা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। একইসঙ্গে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের পরিবারকে সরকারিভাবে সহায়তা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গতকাল উপদেষ্টা পরিষদের দীর্ঘ বৈঠকে এসব বিষয় ছাড়াও আরও একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারি বাসভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট সচিবরা অংশ নেন। বৈঠক শেষে আলোচনার বিষয় মানবজমিনকে জানিয়েছেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে কোটা সংস্কার এবং একদফা দাবিতে আন্দোলন চলাকালে যেসব ছাত্র-জনতা আহত হয়েছেন তাদের দ্রুত তালিকা করা হবে এবং রাষ্ট্রীয় খরচে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। শহীদ হওয়াদের পরিবারকে সহায়তা দেয়া হবে।
বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন আন্দোলনে সমর্থন করে বিক্ষোভ করার কারণে সংযুক্ত আরব আমিরাত যে ৫৭ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে সাজা দেয়া হয়েছে তাদেরকে মুক্ত করতে অবিলম্বে আলোচনা শুরু করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। প্রয়োজন হলে প্রধান উপদেষ্টা সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের সঙ্গে নিজে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।
সব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। যাদের বিষয়ে অভিযোগ বা সমালোচনা আছে তার নিয়োগের চুক্তি দ্রুত বাতিল করা হবে। বাকিগুলোও পর্যায়ক্রমে বাতিল করা হবে। সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানের পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে।
বিজ্ঞাপন ডেপুটি গভর্নরের শূন্য পদগুলোতে নিয়োগ সুপারিশ করতে মুসলিম চৌধুরী, আহসান এইচ মনসুর এবং নজরুল ইসলামের সমন্বয়ে একটি সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বৈঠকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সরবরাহ নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এ ধরনের ঘটনা রোধে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ এবং সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে দ্রুত প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। নগরবাসীর যাতায়াতের সুবিধার্থে আগামী শনিবার থেকেই মেট্রোরেল চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আন্দোলনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত দুটি স্টেশন কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ ছাড়া বাকি ১৪টি স্টেশনে ট্রেন চলাচল করবে। সূত্র জানায়, বৈঠকে সংশ্লিষ্ট সচিবদের গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেয়া হয়।