কোটা আন্দোলন: হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্তের ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর, রায় পর্যন্ত ধৈর্যের আহ্বান
হত্যাকাণ্ডসহ যেসব অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে, সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে সেসব বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হবে বলেও জানিয়েছেন সরকার-প্রধান।
হাইলাইটস
- ছাত্রসমাজ উচ্চ আদালত থেকে ন্যায়বিচারই পাবে, তাদের হতাশ হতে হবে না
- সর্বোচ্চ আদালতের রায় আসা পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
- যারা হত্যাকাণ্ড, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে, তাদের শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে
- যারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, তাঁদের পরিবারের জীবন-জীবিকা নির্বাহের জন্য সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি
- কোটা আন্দোলনকারীদের সাথে এসব ‘সন্ত্রাসীদের’ কোনো সম্পর্ক নেই
- শিক্ষার্থীদের পিতামাতা, অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রতি তাঁদের সন্তানদের নিরাপত্তার দিকে বিশেষভাবে নজর রাখার অনুরোধ প্রধানমন্ত্রীর
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে হত্যাকাণ্ডসহ সাম্প্রতিক নানা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সুষ্ঠু ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সর্বোচ্চ আদালতের রায় আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার জন্য আমি সবাইকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, আমাদের ছাত্রসমাজ উচ্চ আদালত থেকে ন্যায়বিচারই পাবে, তাদের হতাশ হতে হবে না।’
চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে, আজ বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি সহিংসতার বিভিন্ন ঘটনা উল্লেখ করে এগুলোর নিন্দা জানিয়ে বলেন, “এমনকী শিক্ষকদের ওপর চড়াও হয়ে তাঁদের গায়েও হাত তোলা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, যারা কোটা আন্দোলনের সাথে জড়িত তাঁদের সাথে এসব সন্ত্রাসীদের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং সন্ত্রাসীরা এদের মধ্যে ঢুকে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে।”
“এই ধরনের ঘটনার সাথে যারা জড়িত, তাঁদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে” বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, যারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, তাঁদের পরিবারের জীবন-জীবিকা নির্বাহের জন্য যে সহযোগিতা দরকার, তা আমি করব। আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করছি, যারা হত্যাকাণ্ড, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে– তারা যেন শাস্তি পায় সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
“আমি আরও ঘোষণা করছি, হত্যাকাণ্ডসহ যেসব অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে, সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে সেসব বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হবে” আরও বলেন তিনি।
সরকার-প্রধান আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনার নিন্দা জানান, এবং শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় কিছু মহল এই আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। এর ফলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঘিরে যেসব ঘটনা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক। অহেতুক কতগুলি জীবন ঝরে গেল, আপনজন হারানার বেদনা যে কষ্টের, তা আমার চেয়ে ভালো আর কে জানে!
শেখ হাসিনা বলেন, কাদের উস্কানিতে সংঘর্ষের শুরু হলো, কারা কোন উদ্দেশ্যে দেশকে অরাজক পরিস্থিতিতে ঠেলে দিল – তা তদন্ত করে বের করা হবে। আমি আন্দোলনরত কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন, এই সন্ত্রাসীরা যেকোনো সময় সংঘাতের পরিবেশ সৃষ্টি করে তাঁদের ক্ষতিসাধন করতে পারে।
এই প্রেক্ষাপটে, পিতামাতা, অভিভাবক ও শিক্ষকরা যেন তাঁদের সন্তান ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দিকে বিশেষভাবে নজর রাখেন- সে অনুরোধও করেন তিনি।