কোয়ারসারের কথা
রেডিয়ো উৎস আবিষ্কার করতে গিয়ে কোয়ারসারের দেখা পান বিজ্ঞানীরা। যেগুলো দেখতে সাধারণ নক্ষত্রের মতো। কিন্তু আসলে সাধারণ নয়, উজ্জ্বল নিউক্লিয়াসসহ ছায়াপথে পরিণত হয়। এর পরিচয় দিতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা এর নাম দেন ‘কোয়াসি-স্টেলার রেডিয়ো সোর্স’ বা আপাত-নাক্ষত্রিক বেতার উৎস।
সংক্ষেপে কোয়ারসার বা আপাত-নক্ষত্র।
রেডিয়ো টেলিস্কোপের ছবি অনুযায়ী কোয়ারসার বা আপাত-নক্ষত্রের নিউক্লিয়াস বা প্রাণকেন্দ্র খুব ছোট। সৌরজগতের আকারের মতো। গ্যাস ও ধূলিকণা উচ্চ গতিতে প্রাণকেন্দ্রের চারদিকে ঘুরছে।
হোক ছোট, অন্যের তুলনায় থোড়াই ছোট। সূর্যের ভরের কয়েক মিলিয়ন তো হবেই হবে। বিলিয়ন গুণও হতে পারে। কোয়ারসারের নিউক্লিয়াস একটা সুপারম্যাসিভ মানে অতি ভরের কৃষ্ণগহ্বর।
সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোল সূর্যর ভরের কয়েক শ থেকে কয়েক বিলিয়ন গুণ বড় হতে পারে।
কৃষ্ণগহ্বর থেকে গ্যাস বের হওয়ার সময় নির্গত শক্তি কোয়ারসারের শক্তির জোগান দেয়। কখনো কখনো নিঃসঙ্গ নক্ষত্র একক পর্বে পতনের দিকে ধাবিত হতে পারে। কৃষ্ণগহ্বরের জোয়ার নক্ষত্রটিকে গ্যাসীয় এক ফিলামেন্টে টেনে নেয়। এবং উজ্জ্বল শিখায় প্রচুর শক্তিতে উদ্ভাসিত হয়ে জ্বলে ওঠে।
এমন কিছু সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোল রয়েছে যেগুলো এত শক্তি বের করে দেয় যে কিছু গ্যাস নির্গত হয়। সারিবদ্ধভাবে নির্গত গ্যাসগুলো মহাকাশের সর্বত্র প্রসারিত হতে পারে। অর্থাৎ, আন্তঃনাক্ষত্রিক শূন্যে ছড়িয়ে পড়ে।
ইতিহাস
কোয়ারসার একটা উজ্জ্বল নিউক্লিয়াসসমৃদ্ধ এক ছায়াপথ। যা সুপারম্যাসিভ কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে গঠিত। একাই সাধারণ ১,০০০টি ছায়াপথের শক্তি বিকিরণ করে।
পরিমণ্ডল
অধিকাংশ ছায়াপথের কেন্দ্রেই একটা করে কৃষ্ণগহ্বর থাকতে পারে। যদিও বলে নেওয়া ভালো যে, সকলে কোয়াসার নয়। একটা গ্যালাক্সি গ্যাসের সাথে অন্য গ্যালাক্সির দুর্ঘটনাবশত নিকটবর্তী হওয়ার কারণে একটা কোয়াসারে পরিণত হতে পারে। ছায়াপথের গ্যাস ফুরিয়ে যাওয়ার কারণে এটা অন্য গ্যালাক্সির কাছাকাছি হয়ে কোয়াসার গঠিত হয়। আমাদের নিজস্ব ছায়াপথের কৃষ্ণগহ্বর সূর্যের ভরের ৪ মিলিয়ন গুণ। এবং গহ্বরটি সুপ্তাবস্থায় রয়েছে। কয়েক বিলিয়ন বছরের ভেতর অ্যানড্রোমিডা আমাদের আকাশগঙ্গার কাছাকাছি চলে এলে সেই কৃষ্ণগহ্বরের ঘুম ভাঙবে। তখন আমাদের ছায়াপথটিও একটা কোয়াসারে পরিণত হবে।