Bangladesh

কৌশলগত নিরাপত্তা ঝুঁকির শঙ্কা

আলোচনায় চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি অপারেটর নিয়োগ : স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে বিভক্তি

চট্টগ্রাম বন্দরের সর্ববৃহৎ কনটেইনার টার্মিনাল এনসিটিতে (নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল) বিদেশী অপারেটর নিয়োগে সরকারের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী মহলের বক্তব্য এখন দেশের বড় ইস্যু হয়ে দেখা দিয়েছে। একটি মহল বিদেশীদের হাতে বন্দরের স্বয়ংসম্পূর্র্ণ এই টার্মিনাল দেয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। আবার অন্য একটি মহল এর পেছনে প্রতিবেশী দেশের ষড়যন্ত্রও দেখছেন। ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বন্দরের টার্মিনালগুলো বিদেশী অপারেটরের হাতে যাওয়ার পর যাতে দেশের কৌশলগত নিরাপত্তা ঝুঁকিতে না পড়ে সে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করছেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা। একই সাথে আগের সরকারের আমলে ডলার সঙ্কট মেটাতে তড়িঘড়ি করে বিনা টেন্ডারে জিটুজি চুক্তির আওতায় পিপিপি প্রকল্প হিসেবে বিনা টেন্ডারে টার্মিনাল অপারেটর নিয়োগের বিষয়টিও নতুন করে পর্যালোচনার কথা বলছেন শিপিং সংশ্লিষ্টরা।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর চ্যানেলটি ঘিরে গড়ে উঠেছে দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত স্থাপনা। বন্দরের পিসিটি (পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল) ও এনসিটির (নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল) মাঝে রয়েছে দেশের প্রধান প্রধান তেল স্থাপনা এবং নৌবাহিনীর ঘাঁটি। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পিসিটির দায়িত্ব সৌদি অপারেটরের হাতে দেয়া হয়েছে। এনসিটি পরিচালনায়ও বর্তমান সরকার আগের পতিত সরকারের দেখানো পথেই হাঁটছে এমন মন্তব্য বন্দর সংশ্লিষ্টদের।

যদিও সরকারি তরফ হতে বলা হচ্ছে বর্তমান সরকারের পরিকল্পনা হলো আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন একটি অপারেটরের মাধ্যমে এনসিটি পরিচালনা করা। যাতে কনটেইনার খালাসের সময় ও ব্যয় হ্রাস পায়। গত ৩০ এপ্রিল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিশ্বমানের সেবা নিশ্চিত করতে সম্ভাব্য বিদেশী বিনিয়োগকারীদের সাথে আলোচনা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেন। ওই সভায় তিনি বলেন, বন্দর ব্যবস্থাপনায় এমন অপারেটরদের সম্পৃক্ত করতে হবে যাতে আমাদের পোর্টগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা করার সক্ষমতা অর্জন করতে পারে।

পরে গত ১৪ মে বন্দর পরিদর্শনে গিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃৎপিন্ড। কিন্তু যদি হৃৎপিন্ড দুর্বল হয়, কোনো ডাক্তারই তা আর ভালো করতে পারে না। তাই একে বিশ্বমানের করতে হবে। এটি আমাদের জন্য একটি বড় সুযোগ। সেদিন প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এই হৃৎপিন্ডকে আমাদের প্রতিবেশীদের সাথে সংযুক্ত করতে হবে। এজন্য আমি নেপাল ও ভারতের সাতটি উত্তর-পূর্ব রাজ্যের (সেভেন সিস্টার্স) কথা বলেছি। যদি তারা এতে যুক্ত হয়, তারা উপকৃত হবে, আমরাও হবো। যারা যুক্ত হবে না, তারা পিছিয়ে পড়বে। তিনি বলেন, বন্দর ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত বৈশ্বিক পর্যায়ের শীর্ষ সংস্থাগুলোকে আগেও ডাকা হয়েছিল, কিন্তু কার্যকর কোনো অগ্রগতি হয়নি।

এর আগে ২ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দরকে যে পরিমাণ কাজে লাগানোর কথা আমরা তা পারছি না। এটিসহ দেশের সব বন্দর পরিচালনার জন্য বিশ্বের টপ অপারেটরদের সাথে কথা চলছে। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে সরকার একাধিক বন্দর পরিচালনার ভার তাদের হাতে দেয়ার প্রক্রিয়া চলাচ্ছে। আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেও অপারেটর নিয়োগ দেয়া হতে পারে। আবার জিটুজি (সরকার থেকে সরকারে) ভিত্তিতেও অপারেটর নিয়োগ দেয়া হতে পারে বলে তিনি জানান।

পরে গত ৮ মে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বন্দরের বিভিন্ন টার্মিনাল পরিদর্শন করে বলেছেন, পোর্ট ক্যাপাসিটি এখন লিমিটেড। ছয় গুণ করার পরও ভিয়েতনামের ধারে কাছেও যাবে না। তাই এক্সপার্ট প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেয়া হবে। যেন কম জায়গায় বেশি অপারেশন করা যায়।

চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে সমৃদ্ধ টার্মিনাল নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) নির্মিত হয়েছিল চারদলীয় জোট সরকারের আমলে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া টার্মিনালটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ইতোমধ্যে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে এই টার্মিনালের পেছনে। সমৃদ্ধ এই টার্মিনালটিও পিপিপির আওতায় এনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ডকে টার্মিনাল অপারেটর নিয়োগ দিতে পতিত স্বৈরাচারী সরকারের শেষ সময়ে এসে বেশ তোড়জোড় চালানো হয়। কিন্তু পরে সরকার পতনের পর তা থেমে যায়। সময় গড়ানোর সাথে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও ডিপি ওয়ার্ল্ডকে আগের সরকারের দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এনসিটি দেয়ার পথেই অগ্রসর হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির সাথে পতিত সরকারের প্রভাবশালী এক উপদেষ্টা এবং এক সাবেক ব্যবসায়ী মন্ত্রীর সংযোগ থাকার কথা বাজারে বেশ প্রচলিত।

বন্দর ও শিপিং সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র দাবি করেছে, মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক টার্মিনাল অপারেটরগুলোর শীর্ষপদে এমনিতেই আমাদের প্রতিবেশী দেশের কর্মকর্তাদের প্রাধান্য। তাই এনসিটি ও পিসিটিতে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক অপারেটরের মাধ্যমে প্রকারান্তরে আমাদের কৌশলগত স্থাপনার ওপর প্রতিবেশী দেশটির নজরদারির সুযোগ অবারিত হচ্ছে কি না সে প্রশ্ন আসছে। কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাকে ঘিরে অবস্থান করা দুই টার্মিনালের একটি ইতোমধ্যে বিদেশীদের হাতে দেয়া হয়েছে। কাজেই এনসিটি বিদেশীদের হাতে দেয়ার আগে কৌশলগত স্থাপনার নিরাপত্তা হুমকির বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়ার দাবি বন্দর ব্যবহারকারীদের। তাই অর্থনৈতিক লাভালাভকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে রাষ্ট্র্রীয় কৌশলগত স্থাপনার নিরাপত্তাকে যাতে খাটো করে দেখা না হয় সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন জরুরি মনে করছেন শিপিং সংশ্লিষ্টরা।

বন্দর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) বিদেশীদের হাতে দেয়া হলে বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতি ও রাজনীতিতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। এতে চট্টগ্রাম বন্দর তার নিজের টার্মিনালের কর্তৃত্ব হারাবে। বিদেশী অপারেটর শিপিং এজেন্ট ও আমদানিকারকগণের কাছ থেকে যাবতীয় ফি/চার্জ আদায় করবে। পরবর্তীতে তারাই সেই আদায়কৃত অর্থ হতে বন্দরকে অর্থ দেবে। এ ক্ষেত্রে বন্দর বৈদেশিক মুদ্রা হতে বঞ্চিত হবে। সরকার বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা থেকে বঞ্চিত হবে। যার প্রভাব বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে পড়বে। এ ছাড়া এই টার্মিনালে কর্মরত দক্ষ শ্রমিক, কর্মচারী ও এই টার্মিনালের সাথে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত বিভিন্ন ট্র্যাকহোল্ডারগণ চাকরি হারাবে। যার ফলে শ্রম অসন্তোষ দেখা দেবে এবং বন্দরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের রাজনীতিতে এর প্রভাব পড়তে পারে।

আশঙ্কা করা হচ্ছে, বিদেশী অপরারেটরকে দেয়া হলে এনসিটিতে নিযুক্ত চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের কোনো কাজ থাকবে না। কেউ কেউ এমন আশঙ্কাও করেন যে দেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক মানের টার্মিনাল অপারেটরের বিলুপ্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ বর্তমান টার্মিনাল অপারেটররা যদি দেশের বন্দরে কাজ করতে না পারে তাহলে বাংলাদেশী একমাত্র টার্মিনাল অপারেটর আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বন্দরে টার্মিনাল পরিচালনার লক্ষ্য বাধাগ্রস্ত হবে। স্থানীয় অপারেটর বহির্বিশ্বের উন্নত বন্দর হতে দক্ষ বিদেশীদের অপারেটর ও ব্যবস্থাপকদের এই টার্মিনালে নিয়োগ করে। পরবর্তীতে দেশের মানবসম্পদকে কাজে লাগিয়ে বিদেশীদের জায়গায় দেশের দক্ষ অপারেটর ও ব্যবস্থাপক প্রস্তুত করে। এতে করে দেশের মানবসম্পদ উন্নত হয় এবং দেশের টাকা দেশে থেকে যায়।

নিরাপত্তা ঝুঁকিটাকে অনেকে বেশ বড় করে দেখতে চান। জিপি তাদের ২০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের নাম দিয়েছিল বাংলাদেশে আসার ব্যাপারে। এর মধ্যে ১৯ জনই ছিল ভারতের নাগরিক। এই টার্মিনালের পাশে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সামরিক ঘাঁটি এবং তার পাশে বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা অবস্থিত। এই অবস্থায় নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনা না করে টার্মিনাল লিজ দেয়ার নানা ধরনের বিপত্তি সৃষ্টি হতে পারে।

বন্দর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পিপিপির আওতায় বিনা টেন্ডারে বন্দরের টার্মিনালগুলো বিদেশী অপারেটরদের হাতে তুলে দিতে আওয়ামী আমলে মূলত ডলার সঙ্কট মেটাতেই তড়িঘড়ি করা হচ্ছিল। এসব বিদেশী প্রতিষ্ঠানের পেছনে আবার আওয়ামী সংশ্লিষ্টদের সংযোগ রয়েছে বলেও দাবি করছেন তারা। তাই বিদেশী অপারেটর নিয়োগের কৌশল নির্ধারণের আগেই রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে চুক্তির শর্ত নির্ধারণ এবং পতিত সরকারের সংশ্লিষ্টদের যাতে কোন সংযোগ তাতে না থাকে সে বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ার তাগিদ শিপিং সংশ্লিষ্টদের। একই সাথে এনসিটির বিদ্যমান জেটিগুলো পৃথক দরপত্রের মাধ্যমে আলাদা আলাদা অপারেটরের মাধ্যমে পরিচালনা করে বর্তমান প্রাইভেট মনোপলির অবসান ঘটানো যেতে পারে বলেও মত দিয়েছেন তারা। মূলত পিপিপির (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ) আওতায় এসব টার্মিনাল বিদেশী অপারেটরদের হাতে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু পিপিপির কার্যকরতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। চট্টগ্রাম বন্দর ভিন্ন অন্য কোথাও পিপিপির আওতায় কোনো প্রকল্প নেয়া হয়নি বলে সূত্রের দাবি। তা ছাড়া যেভাবে বিদেশী বিনিয়োগের ফেনা তোলা হচ্ছে তা কার্যত কতটুকু মিলছে তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পিসিটিতে চুক্তিমূল্য বাবদ যে টাকা শুরুতে বন্দর কর্তৃপক্ষকে দেয়া হয়েছিল, এর বাইরে নতুন করে কোনো টাকা প্রতিষ্ঠানটি আনেনি উল্লেখ করে সূত্র দাবি করেছে, প্রতিষ্ঠানটি এখন দেশীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে যন্ত্রপাতি ক্রয় করছে। এতে বিদেশী বিনিয়োগ আসার যে উদ্দেশ্যে এসব চুক্তি করা হচ্ছে তা কতটুকু কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছবে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

এ দিকে এনসিটিতে বিদ্যমান দেশীয় টার্মিনাল অপারেটরের মেয়াদ গত ৭ জানুয়ারি শেষ হয়েছে। প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র ছাড়া ডিপিএম পদ্ধতিতে নিয়োগ পাওয়া দেশীয় অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেক এখন টার্মিনালটি পরিচালনা করছে। এনসিটির পুরো টার্মিনাল একটি অপারেটরকে না দিয়ে জেটিগুলো উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে পৃথক পৃথক অপারেটর নিয়োগের মাধ্যমে পরিচালনায় মত দিয়েছেন একাধিক বন্দর ব্যবহারকারী। সে ক্ষেত্রে পাইভেট মনোপলির যেমনি অবসান হবে তেমনি প্রতিযোগিতাও বাড়বে বলে সংশ্লিষ্টদের মত।

অন্য দিকে বন্দরের আলোচিত এই কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশীদের হাতে তুলে দেয়ার বিরোধিতার নামে প্রকারান্তরে বিদ্যমান প্রাইভেট মনোপলি রক্ষায় বিভিন্ন প্রেসার গ্রুপকে মাঠে নামানো হয়েছে বলে মনে করছেন শিপিং সংশ্লিষ্টদের অনেকে।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো: ওমর ফারুক নয়া দিগন্তকে বলেন, বিদেশী অপারেটর নিয়োগের বিষয়ে ট্রানজেকশন অ্যাডভাইজার নিয়োগের পাশাপাশি একটি কোর কমিটি কাজ করছে। যে কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন বন্দরের সদস্য হারবার ও মেরিন। তিনি এর বেশি কিছু বলতে চাননি।

চট্টগ্রামে যৌথবাহিনীর টাস্কফোর্স কমান্ডার থাকাকালীন বন্দরের নানা সংস্কার কার্যক্রমের সাথে নিবিড়ভাবে সংশ্লিষ্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) মোহাম্মদ হাসান নাসির এনসিটিতে বিদেশী অপারেটর নিয়োগ প্রসঙ্গে নয়া দিগন্তকে বলেন, বন্দরে জাহাজ আসবে যাবে, যেকোনো সময় নদী দিয়ে যেকোনো কিছু চলে আসতে পারে। গত ১৬ বছরে এ দেশে ভারতীয়দের চলাফেরা, নজরদারি, কার্যকলাপের থেকে বেশি থ্রেট তো আর হবে না। তিনি বলেন, পোর্টের বলতে গেলে সব কর্মকাণ্ড সাইফের হাতে। সাইফ পাওয়ারটেক গত ১৫-১৬ বছরে বন্দর থেকে কত টাকা লুট করেছে সে প্রশ্নœ এখন আসছে। এর থেকে বেশি টাকা তো কোনো বিদেশী কোম্পানি পাচার করতে পারবে না। ওরা শুধু ওদের লাভটা নেবে। কিন্তু ওরা পোর্টকে অনেক আন্তর্জাতিক মানের করে দেবে। দেশীয় কোম্পানি যদি পোর্টকে এফিশিয়েন্ট করতে পারত, গত ১৬ বছরে তারা সেটি করতে পারত। কিন্তু তারা তো মান বজায় রাখতে পারেনি। কাজেই সেই সুযোগ তারা হারিয়েছে। বিদেশী অপারেটর আসবে বিওটি ভিত্তিতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। ওই সময়ের মধ্যে তারা পোর্টকে মর্ডানাইজড করে তাদের লাভ নিয়ে টার্মিনালটা আমাদের জন্য রেখে যাবে। এর মধ্যে আমাদের পোর্টটাকে তারা এফিশিয়েন্ট করে দেবে।

তিনি দাবি করেন, এই টার্মিনাল বিদেশী অপারেটরের হাতে দিতে বাধা দিচ্ছে প্রচ্ছন্নভাবে ভারত। ভারত যে কাজে বাধা দেবে তা কি আমাদের দেশের স্বার্থে? সতর্ক থাকতে হবে এটা যাতে কোনো মাফিয়া চক্রের হাতে না পড়ে। কেউ পেছন থেকে যাতে এটার পার্টনার না হয়ে যায়।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor