ক্যালিফোর্নিয়ায় আবারও ছড়িয়ে পড়ছে দাবানল, ঘরছাড়া হাজারো মানুষ

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লস এঞ্জেলেসের উত্তরে ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে গতকাল শুক্রবার হাজারো বাসিন্দাকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তীব্র গরম এবং শুষ্ক আবহাওয়ায় আগুন আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে।
গত বৃহস্পতিবার ভেনচুরা ও লস এঞ্জেলেস কাউন্টির সীমান্ত এলাকায় শুরু হয় ক্যানিয়ন ফায়ার নামে এই অগ্নিকাণ্ড। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩০ একর থেকে এটি প্রায় ৫ হাজার ৪০০ একর এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। খবর বিবিসির
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দাবানল আংশিক নিয়ন্ত্রণে এসেছে। গতকাল শুক্রবার রাত পর্যন্ত এর ২৮ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। ওই এলাকার বাসিন্দাদের জন্য নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বিবিসির সহযোগী প্রতিষ্ঠান সিবিএস জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে একটি পাহাড়ি ঢালে কাজ করার সময় গাড়ি উল্টে একজন ফায়ারসার্ভিস কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। আগুন নেভাতে সেখানে প্রায় ৪০০ ফায়ার সার্ভিস কর্মী কাজ করছেন।
অগ্নিনিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে তীব্র গরম এবং শুষ্ক আবহাওয়া বাধা সৃষ্টি করলেও শুক্রবার রাতে ভেনচুরা কাউন্টি জানিয়েছে, আবহাওয়া অনুকূল হওয়ায় দমকল বাহিনী আগুন নিয়ন্ত্রণে ভালো অগ্রগতি অর্জন করেছে।
লস অ্যাঞ্জেলস কাউন্ট্রি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দাবানলটি এখনো সক্রিয় রয়েছে এবং কাস্তাইক, লস এঞ্জেলেস কাউন্টির দিকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট (প্রায় ৩৭.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস) পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এজন্য ওই এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার জন্য বলা হয়েছে।
দাবানলের সবচেয়ে কাছাকাছি শহর সান্তা ক্লারিটায় বাসিন্দাদের আগুনের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়া ফরেস্ট্রি অ্যান্ড ফায়ার প্রোটেকশন ডিপার্টমেন্ট (কাল ফায়ার) জানায়, রাজ্যে অনেকস্থানে দাবানল সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে ক্যানিয়ন ফায়ার একটি।
রাজ্যের সর্ববৃহৎ আগুন গিফোর্ড ফায়ার, যা স্যান লুইস ওবিস্পো ও সান্তা বারবারা কাউন্টিতে প্রায় এক লাখ একর এলাকা গ্রাস করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানলের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। গরম এবং শুষ্ক আবহাওয়া অগ্নি মৌসুমকে দীর্ঘায়িত এবং বিধ্বংসী করে তুলেছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে লস এঞ্জেলেসের উত্তরে আলটাডেনা এলাকায় ইটন ফায়ার নামের দাবানলে কমপক্ষে ৩১ জন নিহত হন। আগুনের ঘটনায় হাজার হাজার স্থাপনা ধ্বংস হয়।