ক্রিমিয়ায় হামলা : যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণের হুমকি রাশিয়ার
মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইউক্রেন ক্রিমিয়ায় হামলা করায় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণের হুমকি দিয়েছে রাশিয়া। রাশিয়া সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন ট্রেসিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে এই হুমকি দেয়া হয়। রাশিয়া রুশ-দখলকৃত ক্রিমিয়ায় সাম্প্রতিক হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দোষারোপ করেছে রাশিয়া।
রাশিয়া দাবি করছে যে রোববারের আক্রমণটি যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে করা হয়েছে।
‘পাল্টা জবাব অবশ্যই আসবে,’ রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে। তারা আর কোনো তথ্য দেয়নি।
রাশিয়া বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা আর্মি ট্যাক্টিকাল মিসাইল সিস্টেম বা এটিএসিএমএস দিয়ে রোববারের আক্রমণ চালানো হয়। এতে অন্তত চারজন নিহত এবং ১৫০ জন আহত হয়।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ভারপ্রাপ্ত আন্ডার সেক্রেটারি ফর পলিটিকাল অ্যাফেয়ার্স জন ব্যাস ভিওএকে বলেন, তিনি হামলায় হতাহতের ব্যাপারে অবগত নন। তবে তিনি বলেন, রাশিয়া আর ইউক্রেন ভিন্নভাবে তাদের হামলা পরিচালনা করে।
তিনি বলেন, ইউক্রেন বেসামরিক হতাহতের ঘটনা কমিয়ে রাখতে চায়, অন্যদিকে রাশিয়ার আক্রমণগুলো শুরু থেকেই নৃশংস ছিল।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র আমেরিকার সরবরাহ করা দূর-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার অভ্যন্তরে ব্যবহার করার জন্য ইউক্রেনকে অনুমতি দিয়েছে, কিন্তু শুধুমাত্র আত্মরক্ষার স্বার্থে।
পশ্চিমা দেশগুলো তাদের অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার ভেতরে হামলার জন্য ইউক্রেনকে অনুমতি দিতে অনিচ্ছুক। কারণ তারা রাশিয়াকে উস্কে দিয়ে সংঘাত আরো বাড়িয়ে দিতে চায় না।
রাশিয়া ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া দখল করে তা রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করে। এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বেশিভাগই প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে রাশিয়া ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে গণ্য করে।
নতুন ইইউ নিষেধাজ্ঞা
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ইউক্রেন হামলার জবাবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে দেয়া অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ১৪তম পর্ব সোমবার অনুমোদন করেছে।
নিষেধাজ্ঞাগুলোর মধ্যে আছে রাশিয়ার লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাসের (এলএনজি) তৃতীয় দেশে পাঠানোর আগে কোনো ইইউ দেশে সেটা রিলোড করার ওপর নিষেধাজ্ঞা।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা সোমবার ইইউ ফরেইন অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিলের বৈঠকে ‘পুতিনের যুদ্ধকালীন অর্থনীতির গলা আরো জোরে টিপে ধরার’ উপর জোর দেন।
সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ লেখা এক বার্তায় কুলেবা বলেন, ‘আমি আলাদাভাবে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ ত্বরান্বিত করার ওপর জোর দিয়েছি।’
সোমবারের বৈঠকের আগে ইইউ পররাষ্ট্রনীতি প্রধান ইওসেপ বোরেল লুক্সেমবার্গে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইউক্রেনের আরো সাহায্য প্রয়োজন, এবং এখনি তাদের আরো সাহায্য প্রয়োজন।’
বোরেল বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উত্তর কোরিয়া সফর থেকে বোঝা গেছে তিনি ‘দীর্ঘ সময়ের যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’