Trending

ক্ষমতা গ্রহণের আগেই যেভাবে ট্রাম্প বিশ্ব অর্থনীতির নীতি-নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছেন

ট্রাম্পের নীতিগুলো ফেড কর্মকর্তাদের নীতি প্রণয়নে কোনো প্রভাব ফেলেছে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে পাওয়েল বলেন, ‘এই মিটিংয়ে কিছু মানুষ তার [ট্রাম্পের] নীতিগুলোর সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে পূর্বাভাস করেছেন, তবে এই পূর্বাভাসগুলো অনেকগুলো শর্তের ওপর নির্ভরশীল।’

আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও ক্ষমতায় না বসলেও ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতোমধ্যেই বৈশ্বিক অর্থনৈতিক নীতিতে একজন গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হয়ে উঠেছেন।

আসন্ন ট্রাম্প প্রশাসনের আগমনকে ঘিরে পৃথিবীজুড়ে অর্থনৈতিক হিসাবনিকাশ শুরু হয়ে গেছে। এই সপ্তাহে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমানোর পরিকল্পনা সম্পর্কে সবুজ সংকেত দিয়েছে, কানাডায় শুল্ক নিয়ে বাজেট সংক্রান্ত বিতর্কে এক কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন এবং ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যাপারে মানুষের আগ্রহ আরও বেড়ে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে এরমধ্যেই কানাডা, জার্মানি, জাপান ও যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংকাররা বৈঠক করছেন।

ফেডের এই সিদ্ধান্তে নতুন বছরের শুরুতে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

প্রকৃতপক্ষে ফেড কর্মকর্তারা কেবল যুক্তরাষ্ট্রে চলমান মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায়ই সুদের হার কমানোর পূর্বাভাস কমিয়ে দেননি। ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল জানিয়েছেন, ট্রাম্পের পরিকল্পিত কর কমানো, শুল্ক বৃদ্ধি ও শরণার্থীদের নিয়ে কঠোর সিদ্ধান্তের প্রভাব কীভাবে নীতিতে পরিবর্তন আনবে, তা নির্ধারণের চেষ্টা করছেন ফেড কর্মকর্তারা। 

তাই মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী বছরের জন্য আগের অনুমানের তুলনায় বেশি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে। তবে একই সঙ্গে মূল্যস্ফীতির হারও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও করা হচ্ছে। 

পাওয়েল সুদ হার অতিরিক্ত কমানোর বিষয়ে বারবার সতর্ক করেছেন। তার এই বক্তব্যে পুঁজিবাজারে শেয়ারদর পতন হয়। এই অবস্থায়, আগামীতে ফেডের সুদহার কর্তন নিয়ে বাজার বিশেষজ্ঞদের যে প্রত্যাশা- সেটিও আবার মূল্যায়ন করতে হচ্ছে।  বর্তমানে, ২০২৫ সালে মাত্র একবার সুদহার কমানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। 

ট্রাম্পের নীতিগুলো ফেড কর্মকর্তাদের নীতি প্রণয়নে কোনো প্রভাব ফেলেছে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে পাওয়েল বলেন, ‘এই মিটিংয়ে কিছু মানুষ তার [ট্রাম্পের] নীতিগুলোর সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে পূর্বাভাস করেছেন, তবে এই পূর্বাভাসগুলো অনেকগুলো শর্তের ওপর নির্ভরশীল।’

অন্যদিকে, ট্রাম্পের নীতিগুলোর প্রভাব রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতিগুলোর ওপর ছায়া ফেলায় – এশিয়ায় ব্যাংক অব জাপান (বিওজে) বৃহস্পতিবার অতি নিম্ন সুদের হার বজায় রেখেছে।

বিওজে তাদের সিদ্ধান্ত ঘোষণার সময় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘জাপানের অর্থনীতি এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ে উচ্চমাত্রার অনিশ্চয়তা রয়েছে।’

গত সপ্তাহে জাপানি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপর রয়টার্সের এক জরিপে দেখা গেছে, প্রায় তিন-চতুর্থাংশ ব্যবসায়ী আশঙ্কা করছেন ট্রাম্পের নীতি তাদের ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। 

ফেডের সিদ্ধান্তের আগে, ইতোমধ্যেই গত সপ্তাহে ইউরোপ ব্যাংক এবং কানাডার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার কমিয়েছে।

এছাড়া, ২০২৫ সালে দুর্বল অর্থনৈতিক পূর্বাভাসের মধ্যে তারা আরও কিছু সহজীকরণের পদক্ষেপ নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যদিও ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্দ ভবিষ্যৎ সুদের হার কমানোর বিষয়ে অস্পষ্টতা রেখেছেন। তিনি ট্রাম্পের অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্ভাব্য বাণিজ্য উত্তেজনাসহ প্রবৃদ্ধির নিম্নমুখী ঝুঁকির দিকে গুরুত্ব দিয়েছেন।

আগামী কিছুদিনের মধ্যে সুদের হার নিয়ে সুইডেন, নরওয়ে এবং যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোও তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে।

বিপুল অস্থিরতা

সম্প্রতি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রশাসনের অধীনে সম্ভাব্য শুল্ক ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিরোধে জড়িয়ে পদত্যাগ করেন দেশটির অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড।

ফ্রিল্যান্ড বলেছেন, ট্রাম্প গত মাসে সতর্ক করে বলেছিলেন যে কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানি করা পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক জারি করবেন তিনি, যদি না এই দুই প্রতিবেশী দেশ যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী এবং ফেন্টানিলের প্রবাহ কমায়। এটি গুরুতর বিপদের শঙ্কা।

তিনি আরও বলেন, ‘এর মানে আমাদের আর্থিক প্রস্তুতি শক্তিশালী রাখতে হবে, যেন শুল্কযুদ্ধে প্রয়োজনীয় রিজার্ভ আমাদের কাছে থাকে। এর মানে হলো আমরা বহন করতে পারব না এমন সব ব্যয়বহুল রাজনৈতিক কৌশল এড়িয়ে চলা।

ট্রুডোর কাছে লেখা এক চিঠিতে তিনি এসব উল্লেখ করেছেন। চিঠিটি তিনি এক্স প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করেছেন।

এদিকে, ট্রাম্পের কৌশলগতভাবে বিটকয়েনের রিজার্ভ প্রতিষ্ঠার ধারণায় উদ্বুদ্ধ ক্রিপ্টো বাজার একটি বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে।

কারণ এ বিষয়ে পাওয়েল বলেছেন, ফেডের এটি [বিটকয়েনের রিজার্ভ] আটকে রাখার কোনো আইনি কর্তৃত্ব নেই।

তিনি স্পষ্টভাবে আরও বলেন, ফেড তার এ সংক্রান্ত আইন পরিবর্তনেরও কোনো পরিকল্পনা করছে না।

পাওয়েল বলেন, ‘এটি কংগ্রেসের বিবেচনার বিষয়, তবে আমরা ফেডে কোনো আইন পরিবর্তনের কথা ভাবছি না।’

এই মন্তব্যের ফলে ক্রিপ্টো-সম্পর্কিত সম্পদের ব্যাপক দরপতন হয়, যার মধ্যে বিটকয়েনের দাম ৫% কমে যাওয়া অন্যতম। গত তিন মাসের মধ্যে এটি বিটকয়েনের সবচেয়ে বড় দরপতন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d