‘ক্ষুধায় কাতরাতে কাতরাতে ঘুমিয়ে পড়ে গাজার শিশুরা’
ইসরাইলের আগ্রাসনে গাজায় বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। তীব্র ক্ষুধা নিয়ে দিন কাটছে তাদের। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে গাজার ক্ষুধার্ত পরিবারগুলো কিভাবে খুব কম খাবারের মাধ্যমে তাদের জীব সত্তাকে বাঁচিয়ে রেখেছে।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে গাজার বাসিন্দা মেসুন আল-নাবাহিনের পরিবারের কথা তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মেসুন তার কাছে থাকা পনিরের শেষ অংশটি একটি রুটির টুকরোর ওপর মাখাচ্ছেন। তার আট সদস্যের পরিবারের সবাইকে এদিন এটিই খেয়ে থাকতে হবে।
মেসুন উম্মে মুহাম্মাদ নামে পরিচিত। তিনি তার স্বামীসহ ছয় সন্তানকে নিয়ে বুরেজের একটি স্কুল থেকে পালিয়ে সেখানে এসেছিলেন। এর আগে মধ্য গাজার পূর্ব বুরেজে ইসরাইলি বাহিনী তাদের বাড়িঘর ধ্বংস করার পরে স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
৪৫ বছর বয়সী উম্মে মুহাম্মাদ এখন আরো দক্ষিণে দেইর এল-বালাহতে আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের আশেপাশে তাঁবুতে থাকেন। তার মুখ দুশ্চিন্তায় ছেয়ে গেছে, তাকে তার বছরের চেয়ে বেশি বয়সী দেখাচ্ছে।
‘তারা ক্ষুধায় কাতরাতে কাতরাতে ঘুমিয়ে পড়ে’
এছাড়া দেইর এল-বালাহে প্লাস্টিকের চাদরে ঢাকা তাঁবুর নিচে বসবাস করছেন আল-মাসরি পরিবারের ১৫ জন সদস্য।
আল-মাসরির তাঁবুতে কোনো খাবার নেই।
আল-মাসরি বলেন, আমরা এখানে প্রায় এক মাস আছি। এ সময়ে আমরা ঠিকমতো খাইনি এবং আমার বাচ্চাদের খাবারের প্রয়োজন।
৪৫ বছর বয়সী সালওয়া আল-মাসরি কাঁপতে কাঁপতে আল-জাজিরাকে বলেন, আমার বাচ্চারা ক্ষুধায় কাতরাতে কাতরাতে ঘুমিয়ে পড়ে।
সালওয়া মাঝে মাঝে উম্মে মোহাম্মদের কাছেও যান। তিনি হাঁপানিতে ভুগছেন এবং তার স্বামীর কার্ডিয়াক অবস্থা রয়েছে। তার ছোট বাচ্চারা খাবারের জন্য অনুনয় করে, তবে তাদের দেয়ার জন্য তার কাছে কিছুই নেই।
সালওয়া বলেন, আমার ছোট ছেলে আমাকে বলে, ‘মা, আমি ক্ষুধার্ত, আমি খেতে চাই।’ আমি তখন ধৈর্য ধরে তাকে বলি, ‘বস, আমি তোমার জন্য খাবার নিয়ে আসছি।’
কিন্তু, এটা সাধারণত মিথ্যা কারণ তার ক্ষুধা নিবারণের জন্য তিনি কিছু করতে পারেন না, প্রতিবেদনে বলা হয়।
এদিকে ইসরাইলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সবশেষ চলমান এ হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় আরো ৮১ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরো ৯৩ জন।
৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া গাজায় ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ৩২ হাজার ৪১৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ৭৪ হাজার ৭৮৭ জন আহত হয়েছেন।