Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

খুনি-দুর্বৃত্তরা নির্বাচনে অযোগ্য

সাংবাদিকদের সঙ্গে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় জুলাই অভ্যুত্থানে যারা খুন করেছেন তারা আবার রাষ্ট্র পরিচালনা করুক সেটা জনগণ চায় না : ড. বদিউল আলম মজুমদার :: ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করা তিন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনার প্রস্তাব

মানবাধিকার লংঘনকারীদের কপাল পুড়ছে। খুন, গুম, মানবাধিকার লংঘন এবং রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের দায়ে অভিযুক্ত অপরাধীরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য বিবেচিত হবেন। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার জানিয়েছেন, যারা মানবাধিকার লংঘন করেছে, খুন করেছে, গুম করেছে, বিভিন্নভাবে বিচার বহির্ভূত হত্যার মতো অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিল, তাদের নীতিনির্ধারণের ব্যাপারে আবার দায়িত্বে আসা এটা কোনোভাবেই কাক্সিক্ষত নয়। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি) টক-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, যত জায়গায় গিয়েছি মানুষের কাছে এই আকুতি শুনেছি, আবার যেন এর পুনরাবৃত্তি না ঘটে। খুন, গুম, মানবাধিকার লংঘন এবং রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা যেন নির্বাচনে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হতে না পারেন। সেজন্য আমরা এসব নিয়ে কতগুলো প্রস্তাব দিয়েছি। আমরা আশা করি সরকার গ্রহণ করবে। তিনি বলেন,‘সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা ও শপথ ভঙ্গের’ কারণে বিগত তিন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনতে কমিশন গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য ৫ আগস্ট পলানোর আগে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে খুন, গুম, ক্রসফায়ার, মানবাধিকার লংঘন, অপহরণ করে ‘আয়নাঘরে’ বছরের পর বছর রেখে অমানুষিক নির্যাতনের শত শত ঘটনা ঘটেছে। মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগে ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাবের ৭ জন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারী করেছে।
হাসিনা রেজিমে গুমের তদন্তে অন্তর্বর্তী সরকার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি কমিটি গঠন করেছে। কমিটি গত ৫ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন এক মাসে গুম কমিশনে জমা পড়েছে ১৬০০’র বেশি গুমের অভিযোগ। কমিশন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ‘আয়নাঘর’ ভয়াবহ চিত্র পেয়েছে। সেখানে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতাদের গুম করে রাখাই শুধু নয় গর্ভবতী নারীদের আয়নাঘরে গুম করে রাখার পৈশাচিক ঘটনার চিত্র পেয়েছে। নির্বাচন কমিশন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরা কাউকে (আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় জোট) নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে চাই না। এটা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। কিন্তু আমরা কি চাই যারা আমাদের নাগরিকদের যেভাবে খুন করেছে প্রায় দেড়-দুই হাজার ব্যক্তি খুন হয়েছেন। যারা গুম হয়েছেন। যারা বিভিন্নভাবে গুরুতর মানবাধিকার লংঘন করেছে। আমরা কি চাই তারা লুটপাটের টাকা খরচ করে নির্বাচনের মাধ্যমে আবার এসে আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনা করুক? আমি তো মনে করি অধিকাংশ জনগণই চায় না। আমরা তাই প্রস্তাব করেছি গুম-খুনের অপরাধীরা যাতে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ না পায়। সেগুলো গৃহীত হবে কি না হবে সেটা নির্ভর করবে আমাদের রাজনৈতিক দল ও সরকারের ওপর। তবে আমরা ‘জুলাই অভ্যুত্থানে’ যারা খুন করেছে, তারা যাতে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসতে না পারে সেটা অধিকাংশ জনগণই চায় না। সেজন্য তাদের নির্বাচনের বাইরে রাখতে সুপারিশ করা হয়েছে।

ড. বদিউল আলম বলেন, বিগত বছরগুলোতে আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গন যে দুর্বৃত্তের কবলে পড়ে গেছে এজন্য আমরা যারা অপরাধী তারা যেন রাজনৈতিক দলের সদস্য না হতে পারে তার সুপারিশ করেছি। আমরা রাজনৈতিক দলের মেম্বারশিপ রোস্টার করার প্রস্তাব করেছি। এই মেম্বারশিপ রোস্টার ব্যবহার করেই তারা স্থানীয় পর্যায়ে তাদের দলীয় নেতাকর্মীরাই মনোনয়ন ব্যাপারে একটা প্যানেল দেবে। এবং প্যানেল থেকে জাতীয় মনোনয়ন বোর্ড সেখান থেকে মনোনয়ন দেবে। যাতে রাজনৈতিক দলগুলো দায়বদ্ধ হয় তাদের সদস্যদের কাছে। তিনি বলেন, আমরা বলেছি নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা রাজনৈতিক দলগুলো যাতে আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে। আমি একটা মামলা করেছিলাম নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে, তথ্য কমিশনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলের হিসাব নিকাশ পাওয়ার ব্যাপারে। বহু হয়রানির পর শেষ পর্যন্ত আমি আদালতে গিয়েছি এবং একটা যুগান্তকারী রায় দিয়েছে আদালত। যেসব তথ্য তাদের কাছে এগুলো পাবলিক ইনফরমেশন এবং এগুলো তারা প্রকাশ করতে বাধ্য। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়বদ্ধ হতে হবে, স্বচ্ছ হতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের সদস্যদের কাছ থেকে যে সদস্য ফি নেবে, তাদের যে অনুদান আসবে তার একটি সীমা আমরা নির্ধারণ করে দিয়েছি। তার ভিত্তিতে তারা ব্যয় করবে। এর অডিট হিসাব তারা নির্বাচন কমিশনে দেবে এবং নির্বাচন কমিশন এগুলো প্রকাশ করতে বাধ্য হবে।

রাজনৈতিক দলের আর্থিক স্বচ্ছতা, গণতন্ত্রের চর্চা এবং দায়বদ্ধতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের ক্ষেত্রে উল্লেখ করে ইসি সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, আমরা রাজনৈতিক অঙ্গন পরিচ্ছন্ন করার ব্যাপারে আমাদের সুপারিশ দিয়েছি এবং ইসিকে আমরা ক্ষমতায়িত করার চেষ্টা করেছি। যেমন প্রার্থী চূড়ান্ত করার ব্যাপারে ইসির নিরঙ্কুশ ক্ষমতা, হলফনামা ছকের পরিবর্তনের কথা বলেছি। নির্বাচনের পরে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন সঠিক হয়েছে এটা সার্টিফাই করবে। নির্বাচন সুষ্ঠু করার ব্যাপারেও আমরা অনেকগুলো সুপারিশ করেছি। তিনি আরো বলেন, সুষ্ঠু অর্থবহ নির্বাচনের জন্য আমরা ‘না’ ভোটের বিধান ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব করেছি, হলফনামার ছকের পরিবর্তন আনা এবং হলফনামা যাচাই-বাছাই করা এবং যাচাইয়ের সময় যদি অসত্য তথ্য বা তথ্য গোপনের অভিযোগ ওঠে তাদের মনোনয়ন বাতিল, নির্বাচন বাতিল এবং নির্বাচন একবার বাতিল হলে আদালতের মাধ্যমে তারা যেন আর নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে এর সুপারিশ করেছি। শুধু তাই নয়, আমরা ৪০ শতাংশের নিচে ভোট পড়লে পুনর্নির্বাচনের প্রস্তাব করেছি।

‘সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা ও শপথ ভঙ্গের’ কারণে বিগত তিন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনতে কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে জানিয়ে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, গত ৩ নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। ২০১৪ সালে প্রার্থী ও ভোটার বিহীন নির্বাচন, ২০১৮ নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি ও ২০২৪ সালে ডামি প্রার্থীর পাতানো নির্বাচনের আয়োজন করা তারা শপথ ভঙ্গ করেছেন। তাদের বিচারের আওতায় আনার জন্য তদন্ত কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।

সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে যারা খুন করেছে, মানুষদের গুম করেছে; তারা আবার রাষ্ট্র পরিচালনা করুক সেটা অধিকাংশ জনগণই চায় না। সেজন্য তাদের নির্বাচনের বাইরে রাখতে সুপারিশ করা হয়েছে।’ নির্বাচনি অঙ্গনকে দুর্নীতিমুক্ত করতেই নির্বাচন ব্যবস্থায় সংস্কার প্রস্তাব করা হয়েছে বলেও জানান বদিউল আলম মজুমদার।

উল্লেখ অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন কমিশন সংস্কারের লক্ষ্যে গত ৩ অক্টোবর ড. বদিউল আলম মজুমদারকে প্রধান করে ৮ সদস্যের ‘নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন’ গঠন করে। কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন স্থানীয় সরকার নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, নির্বাচন কমিশনের সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলী, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. মো. আব্দুল আলীম, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ড. জাহেদ-উর রহমান, শাসন প্রক্রিয়া ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার বিশেষজ্ঞ মীর নাদিয়া নিভিন, ইলেকট্রনিক ভোটিং ও ব্লকচেইন বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ সাদেক ফেরদৌস ও একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto