Bangladesh

গণহত্যার অপরাধ: মানবতাবিরোধী ট্রাইব্যুনালে বিচার হতে পারে শেখ হাসিনার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শত শত শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষ হত্যার দায়ে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার বিচার হতে পারে। আন্দোলনে সংঘটিত অপরাধের যেসব ধরণ রয়েছে এ ধরণের বিচারের লক্ষ্যেই ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ সরকার প্রতিষ্ঠা করে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল’।

হত্যা,গুম, অগ্নিসযোগ, বিচারবহির্ভুত হত্যাকান্ড, জঙ্গি দমনের নামে নিরীহ মানুষ হত্যা, জোরপূর্বক আটকাদেশ, সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি জবরদখল, ধর্ষণের মতো অপরাধ সংঘটিত হয়েছে আওয়ামীলীগ সরকারের দেড় দশক ধরে। বিরোধী আন্দোলন দমন, ভিন্নমতাবলম্বীদের কণ্ঠরোধ, সর্বশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনের ক্ষেত্রে কখনো হুকুমদাতা হিসেবে কখনো উসকানি দেয়ার মাধ্যমে সম্পৃক্ত ছিলেন পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিপরিষদের একাধিক মন্ত্রী। আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে যা ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে পরিগণিত। আওয়ামী শাসনামলে সংঘটিত প্রত্যেকটি অপরাধের বিচার করা হবে-মর্মে প্রতিশ্রুতি রয়েছে অন্তর্বর্তীকালিন সরকারের। এসব অপরাধের বিচারের জন্য প্রয়োজন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। আইনজ্ঞরা বলছেন, একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের লক্ষ্যে আওয়ামীলীগ সরকার যে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল’ গঠন করেছে এই ট্রাইব্যুনালেই শেখ হাসিনাসহ তার মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের বিচার করা সম্ভব।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইন্যুনালে অভিযুক্তদের পক্ষে আইনি লড়াইকারী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের মতে, হয়তো আইনে কিছুটা সংশোধন লাগবে। কিংবা অপরাধ-ভিন্নতায় কেনো সংশোধনেরও প্রয়োজন নেই। আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, বিদ্যমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেই এদের বিচার করা সম্ভব।
অন্যদিকে সুপ্রিমকোর্টের আরেক আইনজীবী ব্যারিস্টার অনীক আর হকের মতে, দেশের শত শত শিক্ষার্থী ও জনতাকে গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনাকে ‘হুকুমের আসামি’ হিসেবে মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার করার সুযোগ রয়েছে।

বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে রিট পিটিশন দায়েরকারী আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকার আইনজীবী হিসেবে হাইকোর্টে আইনি লড়াই করেন অনীক আর হক। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পদত্যাগ করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন পলাতক। আমাদের যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রয়েছে, সেখানের আইনটা যদি দেখি। যেখানে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হয়। সেখানেও তার বিরুদ্ধে গণহত্যার দায়ে মামলা হতে পারে। সেখানে যদি তিনি দোষী সাব্যস্ত হন, তখন তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা যেতে পারে। তবে এই মুহূর্তে এগুলো কোনো কিছু না করে আগে দেশের পরিস্থিতি ঠিক করা দরকার। পরে যা করার সেটা করা যাবে।

ব্যারিস্টার হক বলেন, শুধু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নয়, তিনি তার সহযোগীরা যে সব গণহত্যার অপরাধ করেছে, চাইলে উচ্চ আদালতেও শেখ হাসিনাসহ সবার বিচার করা সম্ভব।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button