Hot

গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন

তীব্র তাপদাহে পুড়ছে দেশ শ্রমজীবী মানুষ চরম বিপাকে :: বিদ্যুতের চাহিদা ১৭ হাজার মেগাওয়াট, উৎপাদন হচ্ছে ১৩ হাজার, লোডশেডিংয়ে জনভোগান্তি চরমে :: স্বস্তির মেঘ-বৃষ্টিতে তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি হ্রাসের আভাস :: হাওরাঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে

তীব্র তাপদাহে দেশের মানুষের জীবন বিপর্যস্ত। গরমে সবার হাপিত্যেশ অবস্থা। দেশের অনেক জেলায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেছে। গত শনিবার রাজধানী ঢাকাতে ছিল ৪০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায়Ñ ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র গরম আর বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় সবত্র ভ্যাপসা গরম বিরাজ করছে। এতে করে মানুষ দাঁড়িয়ে থাকলেও খুব ঘামচ্ছে। রোদের তীব্রতা বেশি হওয়ায় খুব অল্পতেই মানুষ হয়রান হয়ে যাচ্ছে। গরমের সাথে লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ বিভ্রাটে বহু জনপদে থমকে গেছে স্বাভাবিক জনজীবন। হাঁসফাঁস করছে প্রাণিকুল। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া তেমন কেউ আবাসের বাইরে যাচ্ছেন না। রাস্তাঘাট সড়কে পিচ যেন গলছে। তীর্যক সূর্যের অসহনীয় তাতানো তাপের কারণে জনশূন্য হচ্ছে শহর-নগর-পল্লীপথ। মধ্যাহ্নে বাতাস নেই। ঝাঁ ঝাঁ করছে চারিদিক। ফলে শ্রমজীবী মানুষ সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে। তাদের আয়-রোজগার বন্ধের উপক্রম। কাজের জন্য ঘরের বাইরে যেতে পারছেন না। আর একান্তই যাদের বাইরে বের হতে হচ্ছে তারা বেশিক্ষণ কাজ করতে পারছেন না। রাজধানীতেও গত কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি রয়েছে।

কয়েক দিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। গতকালও চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। তবে তা গত শনিবারের তুলনায় কিছুটা কম। চুয়াডাঙ্গায় গতকাল রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকায়ও। গত শুক্রবার ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, শনিবার ছিল ৪০ দশমিক ১ ডিগ্রি এবং গতকাল ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল সকাল থেকে গরমে অতিষ্ঠ রাজধানীবাসী। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা দেখা গেছে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। জীবিকার তাগিদে তীব্র রোদে কাজ করতে হচ্ছে খেটেখাওয়া মানুষদের। বাইরে কাজ করা শ্রমজীবী মানুষেরা তীব্র রোদে কেউ ছায়া খুঁজছেন, কেউ পান করছেন ঠা-া শরবত। গরমের তীব্রতায় রাজধানীর রাস্তাঘাট দুপুরের পর অনেকটা জনশূন্য হয়ে পড়ে। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাইরে বের হচ্ছে না। যারা বের হচ্ছেন, তারা দ্রুত বাড়ি ফিরছেন তীব্র গরমের কারণে। শ্রমজীবী মানুষ বেশি কষ্টে পড়েছেন। কৃষকরা মাঠে যেতে পারছেন না। গরমের তীব্রতায় শিশুদের দীর্ঘসময় ধরে পুকুরে নেমে ঝাপাঝাপি করতে দেখা যায়। তীব্র খরায় ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বরেন্দ্র ও উপকূলীয় জেলাগুলোতে টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। ফলে ওইসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সঙ্কটও দেখা দিয়েছে।

অতিরিক্ত তাপমাত্রা থেকে সবাইকে সাবধান থাকতে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন। সবাইকে পানি ও অন্যান্য তরল খাবার বেশি করে পান করার পরামর্শ দিচ্ছেন। গরমে যেসব রোগ দেখা দেয়, তার মধ্যে অন্যতম হলোÑ ডায়রিয়া, পেটের পীড়া, জ্বর-কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, পানিশূন্যতা, হিটস্ট্রোক ইত্যাদি। এ পরিস্থিতিতে একটু অসতর্কতায় ঘটতে পারে বিপদ। তাপদাহে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে অসুস্থ, বয়স্ক ও শিশুরা। এমন পরিস্থিতিতে প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়ার পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি ও তরল খাবার গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষ। পেটের দায়ে তীব্র গরমকে উপেক্ষা করে রোজগারে বের হতে হয় তাদের। রাজধানীর রাজারবাগ মোড়ে রেইনট্রি গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিচ্ছিল রিকশাচালক খালেক মিয়ার সাথে। তার সাথে কথা বললে তিনি দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, সূর্য উঠার পর থেকেই গরমের তীব্রতা বাড়ছে। একটু পথ চলতেই ঘামে গোসল, গলা শুকিয়ে আসে। বেশিক্ষণ ভাড়া টানতে পারি না। কিন্তু দিন শেষে রিকশা মালিককে জমার টাকা দিতে হবে, তাই এখনো রাস্তায় আছি। দুইটা ক্ষেপ মেরে ক্লান্ত হয়ে এখন এই গছের নিচে একটু জিরাইতাছি। এইরকম অতিরিক্ত টানা গরম পড়লে আমাদের আয় রোজগার কমে যাবে। তাই ক্লান্ত হলেও জিরিয়ে জিরিয়ে রিকশা চালাইতাছি।

খিলগাঁও রেলগেটে কথা হয় ভ্যানচালক আব্দুল জলিলের সাথে। তিনি বলেন, এখান থেকে মালামাল নিয়ে যাচ্ছি গোড়ান। এই গরম খুব কষ্ট দিচ্ছে। ভ্যানে তো সবসময় ভাড়া পাই না। এখন রোদ থাকলেও তো কাজ করতে অইবো। গাড়ি নিয়ে না বের হইলে পেট তো চলব না।

গরমে লোডশেডিংয়ে চরম ভোগান্তি
চার দিন ধরে গরমের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। তাপপ্রবাহ সারা দেশে বিস্তৃত হয়েছে স্থানভেদে মাঝারি, তীব্র ও অতি তীব্র আকারে। দিনভর সূর্য কড়া রোদের তেজ ঝলসে দিচ্ছে। তীব্র গরমের সাথে লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ বিভ্রাটে মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। বৈশাখের গরমে দেশে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। গ্রীষ্মে স্বস্তি পেতে স্বাভাবিকভাবেই বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। তবে চাহিদামতো বিদ্যুৎ না পেয়ে দিনের একটি অংশে কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে বিভিন্ন এলাকার মানুষকে। ভোগান্তি তৈরি হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্যেও।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) বিদ্যুৎ উৎপাদন ও চাহিদার তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গতকাল সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১৭ হাজার মেগাওয়াটেরও অধিক। এর বিপরীতে উৎপাদন করা হয় ১৩ হাজার মেগাওয়াট। অর্থাৎ এ দিন বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল প্রায় চার হাজার মেগাওয়াট। এ কারণে গ্রাহক পর্যায়ে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ছিল অনেক বেশি। বিশেষ করে শহর থেকে গ্রাম অঞ্চলে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ অনেক বেশি। গ্রাম এলাকায় প্রতিদিন গড়ে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং করা হচ্ছে। তবে এবারের লোডশেডিং গত বছরের লোডশেডিংয়ের মতো তীব্র নয়। গত বছরের এপ্রিলেও বেশ কয়েক দিন লোডশেডিং ভয়াবহ পর্যায়ে ছিল।

এদিকে গরম যত বাড়ছে লোডশেডিং বৃদ্ধির আশঙ্কাও তত বাড়ছে। গত ২ মে বিদ্যুৎ সরবরাহ না পেয়ে ঢাকায় প্রায় এক ঘণ্টা মেট্রোরেল বন্ধ ছিল। গ্যাস উৎপাদনে ও আমদানিতে অপ্রতুলতার কারণে শিল্পে গ্যাস সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ বাড়িয়েছে পিডিবি। তার পরও পর্যাপ্ত উৎপাদন করা যাচ্ছে না। এখন দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ১৩ হাজার মেগাওয়াট। বিদ্যুতের চাহিদা ১৮ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত পৌঁছতে পারে বলে প্রাক্কলন করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। তবে অর্থ ও জ্বালানি সঙ্কটে এ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা এখন কঠিন। ফলে আগামী দিনগুলোতে লোডশেডিং বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, বর্তমানে সাড়ে ১৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। গরমের কারণে সামনে ১৮ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত চাহিদা বাড়বে। তখন তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলোতে উৎপাদন আরো বাড়ানো হবে। লোডশেডিং সহনীয় রাখার চেষ্টা করা হবে। এক্ষেত্রে শহর ও গ্রামে সমানভাবে লোডশেডিং করা হবে।

আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস : বাংলাদেশের বেশির ভাগ অঞ্চলের দিকে এগিয়ে আসছে বৃষ্টিবাহী মেঘমালা, বজ্র-ঝড় ও কালবৈশাখী। আজ সোমবার (২৪ ঘণ্টায়) খুলনা বিভাগ ছাড়া দেশের অনেক জায়গায় স্বস্তির মেঘ-বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে তাপমাত্রা কমতে পারে স্থানভেদে এক থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। আজ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপপ্রবাহ কমে আসতে পারে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় বৈশি^ক আবহাওয়া পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো এবং আবহাওয়া বিভাগের (বিএমডি) সর্বশেষ উপরোক্ত পূর্বাভাস পাওয়া গেছে।

গতকাল সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার (আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত) পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম জানান, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। খুলনা বিভাগে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে দেশের বেশিরভাগ এলাকায় দিনের তাপমাত্রা স্থানভেদে এক থেকে ৩ ডিগ্রি সে. পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। চলমান তাপপ্রবাহের পূর্বাভাসে জানা গেছে, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, রাজবাড়ী, খুলনা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও যশোর জেলাসমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগসহ রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী, গাইবান্ধা, ময়মনসিংহ, জামালপুর এবং শেরপুর জেলাসমূহের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তবে আজ সোমবার তাপপ্রবাহ কিছু কিছু এলাকা থেকে প্রশমিত হয়ে পারে।

আজ সোমবার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত এবং রাতের তাপামাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
চট্টগ্রামে দুর্বিষহ জীবন : টানা প্রচ- গরমে বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলে দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে জনজীবন। গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে জনদুর্ভোগ অসহনীয়। গতকাল রোববার চট্টগ্রাম অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সীতাকু-ে ৩৭.৫, সন্দ্বীপে ৩৬.৮, নগরীতে ৩৫.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমনকি রাতের ‘সর্বনি¤œ’ তাপমাত্রা বেড়ে হয়েছে ২৮.৪ ডিগ্রি সে.। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম অঞ্চলের রাঙামাটিতে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হয়েছে ৫২ মিলিমিটার। যা গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বর্ষণ। বৃষ্টিপাত সত্ত্বেও রাঙ্গামাটির তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৬ ডিগ্রি সে.। বঙ্গোপসাগর কাছাকাছি থাকায় চট্টগ্রামের বাতাসে জলীয়বাষ্পের মাত্রা অত্যধিক। এ কারণে তীব্র গরমের সাথে মানুষ ঘামাচ্ছে বেশি এবং দ্রুত কাহিল হয়ে পড়ছে।

দিনভর সূর্যের কড়া তেজে চলমান তাপদাহের কারণে বিশেষ করে বন্দর লাইটার জেটি-ঘাট, কর্ণফুলী নদীর ঘাট শ্রমিক ও কর্মী, বিভিন্ন স্তরের দিনমজুর, রিকশাচালক, ঠেলা ও ভ্যানচালকসহ নি¤œআয়ের শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট-দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। প্রচ- খরতাপে সর্দি-কাশি, জ্বর-শ^াসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগব্যাধির প্রকোপ বেড়েছে। খরতাপের দহন তীব্র হওয়ার সাথে সাথে বৃহত্তর চট্টগ্রামের উঁচু-নিচু, টিলাময় এলাকায় পানির উৎসগুলো শুকিয়ে গেছে। বিশুদ্ধ পানির খোঁজে হন্যে হয়ে ছুটছে মানুষ।

পাউবোর পূর্বাভাস : দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হাওর অববাহিকায় আগামী তিন দিন মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে বলে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। গতকাল রোববার পাউবোর কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানান, বাংলাদেশ আবহাওয়া বিভাগ ও বৈশি^ক আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হাওর অববাহিকার সুরমা-কুশিয়ারা, ধনু-বাইলাই এবং ভুগাই-কংস নদীগুলোর পানি আগামী দুই দিন স্থিতিশীল থাকতে পারে। তৃতীয় দিনে বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে বিপদসীমার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। গত ২৪ ঘণ্টায় হাওর অববাহিকায় সিলেট জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত এবং উজানে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। গতকাল সকাল পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় সিলেটের লাটু ও লালাখালে ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এদিকে আবহাওয়া বিভাগ জানায়, লঘুচাপের একটি বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

bacan4d slot toto