Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Trending

গরমে হাওয়া আড়াই কোটি কর্মদিবস 

  • অর্থনীতির ক্ষতি ১৩৩ কোটি থেকে ১৭৮ কোটি ডলার
  • প্রচণ্ড গরমে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হারাতে পারে জিডিপির ৪.৯ শতাংশ
  • ৪৩ বছরের উদ্বেগজন তাপমাত্রা প্রভাব ফেলছে স্বাস্থ্য ও অর্থনীতিতে
  • ৪৩ বছরে গড় অনুভূত তাপমাত্রা বেড়েছে ৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস

এক যুগ আগেও দেশে গরমের মওসুমে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কানাঘুষা চলতো, গ্রীষ্মের ছুটিতে কে কী করবে তা নিয়ে। কেউ মামা বাড়ি বেড়াতে যাবে, কেউ যাবে দূর অজানায়, কেউ বাড়িতেই করতো ভিন্ন কিছু। এক যুগের ব্যবধানে একই বয়সের শিক্ষার্থীদের গল্প পাল্টে গেছে। তাদের ছুটি ঘোষণা হয় মূলত তীব্র গরম থেকে রক্ষা পেতে। স্কুলে যাতে কেউ অসুস্থ না হয়, সেটি মাথায় রেখেই সারাদেশে স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখতে হয়। শুধু কি স্কুলে! খেটে খাওয়া কৃষকও মাঠে যেতে ভয় পান, অফিস পাড়ায় তো পথে পথেই হিটস্ট্রোকের ভয়। এমন ভয়াবহতা ২০২৪ সালেই সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে বাংলাদেশে। জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে প্রতিটি নাগরিকের জীবনে।

গত এপ্রিলেই প্রতিটি মানুষ ঘর থেকে বের হতে ভয়ে থাকতো, ঘরেও তো তাপমাত্রা কমানোর পদ্ধতি নেই। পুরো বাংলাদেশই যেন হয়ে পড়েছিল এক বিশাল অগ্নিকুণ্ড। নাগরিক জীবন তীব্র গরমে থাকে বিপর্যস্ত, ২০৩০ সালের মধ্যে এমন পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে উঠে এসেছে এক জরিপে।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। ১৯৮০ সালের পর থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের গড় তাপমাত্রা বেড়েছে ১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই ৪৩ বছরে অনুভূত তাপমাত্রা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে ৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুধু ২০২৪ সালেই নজিরবিহীন তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে শারিরীক ও মানসিক ক্ষতিতে ২ কোটি ৫০ লাখ কর্মদিবস হারিয়েছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ তীব্র গরমের কারণে কিংবা অসুস্থ্য হয়ে প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ মানুষ কাজে যেতে পারেনি। একজন ব্যক্তিকে এক কর্মদিবস হিসেব করে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে কর্মদিবস বলে উল্লেখ করেছে।

এ সময় অর্থনীতির ক্ষতি হয় ১৩৩ থেকে ১৭৮ কোটি ডলারের বেশি। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি ডলার ১২০ টাকা হিসাবে এ ক্ষতির পরিমাণ ১৫ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা থেকে ২১ হাজার ৩৬০ কোটি টাকার মধ্যে। এ অঙ্ক ২০২৪ সালে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন তথা জিডিপির প্রায় শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত ‘একটি অনিশ্চিত জীবন: বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও অর্থনীতিতে তাপমাত্রার প্রভাব’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) তাদের ৯ বছরের (২০১৫-২০২৩) তাপমাত্রার গড় প্রতিবেদন করেছে। এ নয় বছরে বাংলাদেশের তাপমাত্রা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছেছে। এ সময়ে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির তুলনায় বাংলাদেশ রেকর্ড করেছে। ফলে জলবায়ু সম্পর্কিত স্বাস্থ্যঝুঁকির শীর্ষেও রয়েছে বাংলাদেশ।

বিশ্লেষকরাও বলছেন, তাপমাত্রার প্রভাবে ভবিষ্যতে কর্মক্ষমতা আরও কমবে, হৃদরোগ, তাপমাত্রাকেন্দ্রীক বিভিন্ন রোগ বাড়তেই থাকবে। অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, নগরায়নের ফলে এর খেসারত দিতে হবে সাধারণ নাগরিককেই।

তাছাড়া যখন বাংলাদেশের তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করে কর্মক্ষম বয়সের ব্যক্তিদের মধ্যে উৎপাদনশীলতা কমে যাওয়ার প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। এজন্য জরুরি হস্তক্ষেপের প্রয়োজন বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক।

বিশ্ব যখন বৈশ্বিক তাপমাত্রায় সম্ভাব্য ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির দিকে অগ্রসর হচ্ছে, এমন তাপমাত্রা মানুষের স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার জন্য প্রভাবগুলো গুরুতর হবে। এসব তথ্যের ভিত্তিতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের তথ্য উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংক বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে চরম তাপের বিরূপ প্রভাবের কারণে বাংলাদেশ তার জিডিপির প্রায় ৪ দশমিক ৯ শতাংশ হারাতে পারে।

তীব্র তাপমাত্রা নাগরিকের স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক জীবনে কি ধরনের প্রভাব ফেলে এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ১৮৫০ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সারাবিশ্বের তাপমাত্রাই ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। বাংলাদেশ যেহেতু ক্রান্তি অঞ্চল, স্বাভাবিকভাবেই এখানে গড় তাপমাত্রা বেশি। গ্রীষ্মকালে এদেশের মানুষ অস্বস্তিতে থাকে, এর মধ্যে যদি এক ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেড়ে যায়, এ অস্বস্তির জীবন আরও দুর্বিষহ হয়।

তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণ উল্লেখ করে এ বিশ্লেষক বলেন, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণ হলো জলবায়ু পরিবর্তন। কীভাবে আমরা জীবাশ্ম জ্বালানি জ্বালাই বায়ুমণ্ডলে যে কার্বন নিঃসরণ করি। কার্বণের জলীয়বাষ্প ও ধূলিকণা ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এগুলো আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষ করে ধূলিবালিসহ নির্মাণ কাজ, আমরা গাড়ি চালাই, এখানে কারখানা চলে, শিল্পে- চাষাবাদে পেট্রোলিয়াম প্রচুর ব্যবহার করি। এতে করে ভূপৃষ্ঠে কার্বনডাই-অক্সাইড ও ধূলিকণা, জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যায়। বেড়ে যাওয়ার কারণে তাপধারণ ক্ষমতা বেড়ে গেছে। এজন্যই এক ডিগ্রি তাপমাত্রা বেড়ে গেছে।

অধ্যাপক জিল্লুর রহমান বলেন, জলবায়ুর কারণে যে তাপমাত্রা বেড়ে যাবে তা ২১০০ সালের মধ্যে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ধরে রাখতে চায়। কিন্তু এটি সম্ভব হবে কিনা সন্দেহ আছে। ধারণা করা হচ্ছে ২০৫০ সালের মধ্যেই ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাবে। ক্রান্তি অঞ্চলের কারণে আমাদের আদ্রতা বেশি। এতে আমাদের পরিবেশের বিপর্যয়ও বেড়ে যাচ্ছে। মানুষের কর্মঘণ্টার ক্ষতি হচ্ছে। অস্বস্তি বেড়ে যাচ্ছে, এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিও বেড়ে যায়।

‘একটি অনিশ্চিত জীবন: বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও অর্থনীতিতে তাপের প্রভাব’ প্রতিবেদনে ১৯৭৬ ও ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশে তাপমাত্রার পরিবর্তনগুলো তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গবেষণাটি ২০২৪ সালে বাংলাদেশের ১৬ হাজারেরও বেশি ব্যক্তিকে দুই ধাপে পারিবারিক জরিপ করে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

জরিপে উঠে এসেছে, শুধু গ্রীষ্মকালে ক্রমাগত বা দীর্ঘস্থায়ী কাশি ছিল ৬ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষের, যেটি শীতকালে ছিল ৩ দশমিক ৩ শতাংশের। এতে ৬৬ বছরের বেশি বয়স্ক মানুষের গ্রীষ্মকালে কষ্ট হচ্ছে বেশি বলেও উঠে এসছে। গ্রীষ্মকালে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়ামের বেশি তাপমাত্রা হলে এ বয়সী ২২ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষের কাশি বেড়ে যায়।

উচ্চ তাপমাত্রা গ্রীষ্মকালে ২ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষের মধ্যে প্রভাবিত করেছে বলে উঠে এসেছে জরিপে। এতে দেখা যায়, এ সময় ৩৬ থেকে ৬৫ বছর বয়সী কর্মজীবী জনসংখ্যা এবং ৬৬ বছরের বেশি বয়স্ক জনসংখ্যার মধ্যে তাপ-ক্লান্তি সবচেয়ে বেশি ছিল। যে দিনগুলোতে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি থাকে, সে সময় অন্য সময়ের তুলনায় তাপ নিঃসরণে ভোগার সম্ভাবনা ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে যায়।

ঋতুভেদে বাংলাদেশে ডায়রিয়ার ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়। গ্রীষ্মকালে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ ব্যক্তি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার কথা উঠে এসেছে, এটি শীতকালে থাকে ১ দশমিক ৮ শতাংশ। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু এবং মহিলারা এই রোগে সবচেয়ে বড় সংকটে পড়ে। ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রার দিনগুলোতে মহিলা ও শিশুদের ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা ৪৭ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।

তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে লবণাক্ততা বেড়ে যাচ্ছে। এতে ওই অঞ্চলে হাইপারটেনশনের মতো রোগও বাড়তে পারে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। অধ্যাপক জিল্লুর রহমান বলেন, তাপমাত্রা বেড়ে গেলে সমুদ্রের উচ্চতা বেড়ে যায়। এটি বেড়ে গেলে লবণাক্ততা বেড়ে যাবে। লবণাক্ততার কারণে জন্মহার কমে যাবে, হৃদরোগের হার বেড়ে যাবে। লবণাক্ততার কারণে হাইপারটেনশন বেড়ে যায়।

ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার কারণে মানসিক স্বাস্থ্যও একইভাবে প্রভাবিত হয় বলে উঠে এসেছে জরিপের তথ্যে। সমীক্ষায় ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, বিষণ্নতার প্রকোপ শীতকালে থাকে ১৬ দশমিক ২ শতাংশ, গত গ্রীষ্মে তা বেড়ে ২০ শতাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণ উদ্বেগজনিত ব্যাধিগুলোর প্রবণতা গ্রীষ্মে বেড়ে ১০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরের দিনগুলোতে, ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচের দিনগুলিতে, বিষন্নতা এবং উদ্বেগ রিপোর্ট করার সম্ভাবনা যথাক্রমে ২৩ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ৩৭ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

অবশ্য স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদরা বলছেন, তীব্র তাপমাত্রায় সাধারণ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ার প্রবণতা বেশি। সে সময় স্বাস্থ্য খরচও বাড়ে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের ভোগান্তি বেশি।

স্বাস্থ্য অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়ে এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আবদুল হামিদ বলেন, অতি উচ্চ তাপমাত্রায় আমরা অনেকে অসুস্থ হয়েছি। এ তালিকায় বাচ্চা, বয়োবৃদ্ধরা রয়েছেন। ৪৪ ডিগ্রি তাপমাত্রায় মানুষের অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় মানুষের খরচ বেড়েছে। যারা অসুস্থ হয়েছেন তাদের কর্মদিবস নষ্ট হয়েছে তা জরিপে এসেছে, কিন্তু এ সময়ে স্বাস্থ্যসেবায় খরচ কত হয়েছে তা নেই। তিনি বলেন, উচ্চ তাপমাত্রায় আরও অনেক ক্ষতি হয়। বিশেষ করে মাতৃগর্ভে যে সন্তান আছে তারও ক্ষতি হতে পারে, নবজাতকেরও ক্ষতি হতে পারে। আবার ওষুধের ফার্মেসিগুলোতে বিশেষ করে টিনশেডের ফার্মেসিতে ৪৩ বা ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওষুধের গুণাগুণ নষ্ট হয়। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নানা ধরনের ক্ষতি আছে। হিট হলে বাড়তি খরচ হয়। যেমন, রিকশাওয়ালাদের অতিরিক্ত পানি কিনে খেতে হয়। 

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto