International

গাজায় ‘পূর্ণশক্তিতে’ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা নেতানিয়াহুর

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, দেশটির সেনাবাহিনী আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ‘পূর্ণশক্তি নিয়ে’ গাজায় প্রবেশ করবে। তার দপ্তর থেকে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

নেতানিয়াহু তার দপ্তরে সোমবার রাতে আহত রিজার্ভ সেনাদের সঙ্গে বৈঠকে বলেন, ‘শিগগিরই আমরা পূর্ণশক্তি নিয়ে অভিযানে নামব। এই অভিযান সম্পন্ন করা মানে হামাসকে পরাজিত করা, অর্থাৎ হামাসকে ধ্বংস করা।

তিনি আরো বলেন, ‘যুদ্ধ থামানোর কোনো পরিস্থিতি হবে না। সাময়িক যুদ্ধবিরতি হতে পারে, কিন্তু আমরা শেষ পর্যন্ত যাব।’

১৯ জানুয়ারি হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর তা বজায় রাখার উপায় নিয়ে অচলাবস্থার মধ্যে ১৮ মার্চ থেকে গাজাজুড়ে বড় ধরনের সামরিক অভিযান পুনরায় শুরু করে ইসরায়েল। এরপর চলতি মাসের শুরুর দিকে ইসরায়েল সরকার গাজায় তাদের সামরিক অভিযান সম্প্রসারণের পরিকল্পনা অনুমোদন করে এবং কর্মকর্তারা সেখানে দীর্ঘমেয়াদি উপস্থিতি বজায় রাখার বিষয়ে কথা বলেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দিত এই পরিকল্পিত বৃহত্তর অভিযান গাজার অধিকাংশ বাসিন্দাকে বাস্তুচ্যুত করবে।

হামাসের ২০২৩ সালের অক্টোবরের ইসরায়েলে হামলার পর থেকে গাজার প্রায় ২৪ লাখ বাসিন্দার মধ্যে প্রায় সবাই অন্তত একবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ইসরায়েলও ফিলিস্তিনিদের গাজা ছেড়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। একজন জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, ‘স্বেচ্ছামূলক স্থানান্তর কর্মসূচি…হবে অভিযানের লক্ষ্যগুলোর একটি অংশ।

এদিকে ইসরায়েলি মন্ত্রীরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উত্থাপিত একটি প্রস্তাবকে সামনে এনেছেন, যেখানে গাজাবাসীকে স্বেচ্ছায় প্রতিবেশী দেশ, যেমন জর্দান বা মিসরে চলে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। অবশ্য কায়রো, আম্মানসহ অন্য আরব মিত্র, বিশ্বের বিভিন্ন সরকার ও ফিলিস্তিনিরা স্পষ্টভাবে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।

সেনাদের সঙ্গে বৈঠকের সময় নেতানিয়াহু জানান, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের গ্রহণ করতে ইচ্ছুক দেশ খুঁজতে কাজ করছে ইসরায়েল। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এমন একটি প্রশাসন গড়ে তুলেছি, যা তাদের (গাজা বাসিন্দাদের) চলে যেতে সহায়তা করবে…কিন্তু আমাদের এমন দেশ প্রয়োজন, যারা তাদের গ্রহণ করবে। আমরা এখন এ নিয়েই কাজ করছি।’ তার ধারণা অনুযায়ী, ‘৫০ শতাংশেরও বেশি (ফিলিস্তিনি) চলে যাবে’ যদি তাদের বিকল্প দেওয়া হয়।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা গাজা যুদ্ধের সূচনা ঘটায়। সেই হামলায় এক হাজার ২১৮ জন নিহত হয়েছিল, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক। এ ছাড়া ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়, যাদের মধ্যে ৫৭ জন এখনো গাজায় রয়েছে। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ৩৪ জনকে মৃত ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে ওই হামলার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল যে সামরিক অভিযান শুরু করে, তাতে এখন পর্যন্ত গাজায় অন্তত ৫২ হাজার ৯০৮ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক। হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এ পরিসংখ্যানকে জাতিসংঘও বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

bacan4d slot toto