গাজায় মার্কিন নাগরিক হত্যার পূর্ণ তদন্ত চায় জাতিসংঘ
গাজায় মানবাধিকার কর্মী ও মার্কিন নাগরিক আইসেনুর এজগি এইগি হত্যার পূর্ণ তদন্ত চেয়েছে জাতিসংঘ। গত শুক্রবার গাজা উপত্যকার নাবলুসে ইসরায়েলি সেনারা তাঁকে গুলি করে হত্যা করে। আইসেনুর তুরস্কেরও নাগরিক। হত্যার ঘটনায় দু’দেশই শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। বিবিসি ও আলজাজিরার খবর
আইসেনুর তুরস্কের আনতালিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। সম্প্রতি তিনি সিয়াটলের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন।
জানা যায়, নাবলুসে ইসরায়েলের বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ ছিল। সেখানে সংহতি জানাতে গিয়েছিলেন ২৬ বছর বয়সী আইসেনুর। তিনি একটি জলপাই গাছের নিচে ছিলেন। এই অবস্থায় একটি বাড়ির ছাদ থেকে তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নাবলুসে একজন বিদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টেফানি ডুজারিক বলেছেন, আইসেনুর হত্যাকাণ্ডে যে বা যারা দায়ী, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হোক।
অবশ্য হামাদ বিন খলিফা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক পলিসির অধ্যাপক সুলতান বারাকাত আলজাজিরাকে বলেছেন, একজন আমেরিকান নাগরিককে হত্যার প্রতিক্রিয়ায় বৈষম্য লক্ষণীয়। অথচ হাজার হাজার ফিলিস্তিনি হত্যায় যুক্তরাষ্ট্র নির্বিকার ভূমিকায় রয়েছে।
এদিকে দখলদার ইসরায়েলের হামলায় গত ৪৮ ঘণ্টায় গাজায় ৬১ ফিলিস্তিনি নিহত ও আহত হয়েছেন ১৬২ জন। গতকাল শনিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ নিয়ে গাজায় চলমান যুদ্ধে ৪০ হাজার ৯৩৯ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হলো। অন্যদিকে, আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৪ হাজার ৬১৬। তাদের মধ্যে নারী ও শিশু বেশি।
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে গত কয়েক মাস ধরে যুদ্ধবিরতি চুক্তির চেষ্টা চলছে। তবে দখলদার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজারিনি গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে তিনি বলেন, গাজায় মানবতা অবশ্যই জয়ী হবে। তবে জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রান্সেস্কা আলবানিজ বলেছেন, ইসরায়েল যদি আগামী বছরগুলোতে এভাবে হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যায়, তাহলে গাজায় জনসংখ্যা শেষ হয়ে যাবে। এই বছরের শেষ নাগাদ গাজার ১৫ থেকে ২০ শতাংশ মানুষ হত্যার শিকার হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।