গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি ‘চূড়ান্ত পর্যায়ে: কাতার
তবে আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকরের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত এনিয়ে খুব বেশি উচ্চাশা না রাখার-ও পরামর্শ দেন কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি।
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতির একটি চুক্তি কার্যকর হওয়া আগের প্রচেষ্টাগুলোর চেয়ে ‘অনেক নিকটবর্তী অবস্থানে’ আছে বলে জানিয়েছে কাতার।
কাতারের রাজধানী দোহাতে চলছে এনিয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে আলোচনা। ১৫ মাস ধরে চলে আসা অসম এই সংঘাত বন্ধে কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিশরের আগের বেশকিছু প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলেও— এবার আশার কথা শোনাল কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি আজ মঙ্গলবার দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান।
তিনি বলেন, ‘চুক্তির একটি খসড়া এরমধ্যে হামাস ও ইসরায়েলকে দেওয়া হয়েছে। উভয় পক্ষের মধ্যে (চুক্তির) যেসব বিষয়ে দ্বিমত বা উত্তেজনা ছিল– সেগুলোর একটা সমাধানে পৌঁছানো গেছে। এখন দোহা আলোচনায় বাকী বিষয়গুলো চূড়ান্ত করার ওপর মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে আমরা একটি (যুদ্ধবিরতি) চুক্তিতে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে আছি।’
মাজেদ আল-আনসারি আভাস দেন, চূড়ান্ত হওয়ার পরে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়ন শুরু হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস আমরা (কাতার) আলোচনার মাধ্যমে, এবং মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের অংশীদারদের সহযোগিতায় উভয় পক্ষের মধ্যে (ইসরায়েল ও হামাস) অনেক দ্বিমতকে কমিয়ে আনতে পেরেছি।’ তবে আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকরের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত এনিয়ে খুব বেশি উচ্চাশা না রাখার-ও পরামর্শ দেন তিনি।
‘আমরা মনে করি, আমরা একটি অগ্রগতির পর্যায়ে আছি, তবে এটি চূড়ান্ত পর্যায় বলেই আমাদের বিশ্বাস। কিন্তু, যতক্ষণ না কোনো ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে, বেশি আশান্বিত হবেন না। এনিয়ে এই মুহূর্তেই আমাদের অতি-উত্তেজিত হওয়া উচিৎ হবে না। তবে আমরা আশাবাদী।’
গত এক বছর ধরে গাজায় যুদ্ধাবসানের জন্য মধ্যস্ততাকারীর ভূমিকা পালনের চেষ্টা করেছে কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্র। শর্ত হিসেবে, বলা হয়েছিল হামাসের হাতে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে বন্দি সকল ইসরায়েলির মুক্তি। মনে করা হয়, এখনো প্রায় ১০০ জন ইসরায়েলি হামাসের হাতে বন্দি রয়েছে। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ধারণা, তাদের অন্তত এক-তৃতীয়াংশ এরমধ্যেই মারা গেছে।
এদিকে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার বোমাবর্ষণ ও ধ্বংসযজ্ঞে মৃত্যুপুরী পুরো উপত্যকা। শুধু আনুষ্ঠানিক হিসাবেই নিহতের সংখ্যা ৪৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে, আহত প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার। তবে ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও কয়েকগুণ মানুষের মরদেহ চাপা পড়ে রয়েছে বলে ধারণা করছে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা।
সেখানে খাদ্য, ওষুধ, পানি, বিদ্যুৎ, বাসস্থান কোনোকিছুই অবশিষ্ট নেই। চিকিৎসা ব্যবস্থাকেও ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েল।