গেল তিন যুগে ১০ গুণ সবুজ হয়েছে অ্যান্টার্কটিকা!
সম্প্রতি ৩৫ বছরের স্যাটেলাইট ডেটা একত্র করে তুলনা করেছেন বিজ্ঞানীরা। এতে দেখা গেছে, বরফে ঢাকা অ্যান্টার্কটিকা ধীরে ধীরে সবুজ হয়ে উঠছে। নাসা ও মার্কিন সংস্থা ‘ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিকাল সার্ভে’ মহাকাশে নিজেদের প্রথম ‘ল্যান্ডস্যাট’ পাঠিয়েছিল ১৯৭৫ সালে।
এরপর থেকে তারা আরও আটটি ল্যান্ডস্যাট পাঠিয়েছে, যেখানে সবচেয়ে সাম্প্রতিক ল্যান্ডস্যাট ৯’র উৎক্ষেপণ ঘটেছে ২০২১ সালে। ল্যান্ডস্যাট ডেটা এমন বিশেষ ধরনের ডেটা, যেখানে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবী যে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়, তা ফুটে ওঠে। আর এর মধ্যে রয়েছে লাখ লাখ ছবিও।
এইসব ল্যান্ডস্যাট বনে আগুণ জ্বলতে, শহুরে অঞ্চলের বিস্তৃতি ঘটতে এমনকি বরফের গ্লেসিয়ার গলতেও দেখেছে। এ ছাড়াও, অন্যান্য বেশ কিছু পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায় পৃথিবী।
বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘নেচার জিওসায়েন্স’-এ প্রকাশিত ‘সাস্টেইন্ড গ্রিনিং অফ দ্য অ্যান্টার্কটিক পেনিনসুলা অবজার্ভড ফ্রম স্যাটেলাইটস’ শীর্ষক সাম্প্রতিক গবেষণায় ল্যান্ডস্যাট ৫ থেকে ল্যান্ডস্যাট ৮ পর্যন্ত রেকর্ড করা ডেটা ব্যবহার করা হয়েছে। এর লক্ষ্য, অ্যান্টার্কটিকায় গাছপালার বিস্তার পরিমাপ করা।
গবেষণায় যৌথভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অফ এক্সেটার-এর পরিবেশ বিজ্ঞানী টমাস রোল্যান্ড এবং ইউনিভার্সিটি অফ হার্টফোর্ডশায়ার-এর রিমোট সেন্সিং বিশেষজ্ঞ অলি বার্টলেট।
“অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপে গত ৩৫ বছরে যেভাবে গাছপালার বিস্তার দেখা গেছে, এ গবেষণার লক্ষ্য ছিল, তা মূল্যায়ন করে দেখা। এর মধ্যে রয়েছে অঞ্চলটিতে গাছপালার স্থানিক ব্যাপ্তি ও ‘গতিবিধি’ (‘গ্রিনিং’ বনাম ‘ব্রাউনিং’) পরিবর্তনের হার নির্ধারণ করা, যা এখনও পর্যন্ত পরিমাপ করা হয়নি।”
গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপের ভূখণ্ড সবুজে ঢেকে যাওয়ার ঘটনা ১৯৮৬ সালের পর থেকে বেড়েছে ১০ গুণেরও বেশি, যদিও তা উপদ্বীপের উষ্ণ এলাকা পর্যন্তই সীমিত। তবে, অঞ্চলটির বাস্তুতন্ত্র পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলেছে এতে, যেখানে উদ্দীপক হিসেবে কাজ করেছে আমাদের কার্বন নিঃসরণের প্রবণতা।
পৃথিবীর সবচেয়ে শীতল অঞ্চলটিতে উদ্ভিজ্জ উপনিবেশ শুরু হয়েছিল শ্যাওলা ও লাইকেন গাছ থেকে। এর মধ্যে প্রথমে এসেছিল শ্যাওলা প্রজাতিই।
বর্তমানে গবেষকদের লক্ষ্য, ওই এলাকায় আর কোন কোন গাছ আবির্ভূত হচ্ছে ও এ পরিবর্তন পরিবেশের ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলবে, তা খতিয়ে দেখা।