Hot

গোপনীয়তা রক্ষা না হওয়ায় সুইস ব্যাংক থেকে অর্থ তুলে অর্থ পাচারকারীরা নতুন গন্তব্যে

গোপনীয়তা রক্ষা না হওয়ায় সুইস ব্যাংক থেকে অর্থ তুলে দুবাই, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ উন্নত দেশগুলোয় নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশিরা। ফলে দুই বছরের ব্যবধানে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানত কমেছে প্রায় ৯৮ শতাংশ। ২০২১ সালে বাংলাদেশিদের জমা অর্থের পরিমাণ ছিল ৮৭ কোটি ১১ লাখ ফ্রাঁ; যা ২৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ১৯৯৬ সালের পর বাংলাদেশিদের এত অর্থ কখনো জমা পড়েনি সুইস ব্যাংকে। এর আগে ২০১৬ সালে ৬৬ কোটি ১৯ লাখ ফ্রাঁ ছিল সর্বোচ্চ। যদিও ১৯৯৬ সালে ছিল মাত্র ৩ কোটি ৮২ লাখ ফ্রাঁ। ২০২৩ সাল শেষে জমার পরিমাণ এসে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৭৭ লাখ ফ্রাঁয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, যেসব দেশে সম্পদ অর্জনের পাশাপাশি পাসপোর্ট এবং বিনিয়োগ করে মুনাফা পাওয়া যায়, পাচারকারীরা এখন সেসব দেশে ঝুঁকছেন। সুইস ব্যাংক থেকে টাকা ওই

সব দেশে নিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্বের বহু দেশই এখন বিনিয়োগকারীকে নাগরিকত্ব দিচ্ছে। বাড়িঘরের মতো সম্পদ অর্জনের পাশাপাশি বিনিয়োগ করার সুযোগ দিচ্ছে। ফলে পাচারকারীরা সুইস ব্যাংক থেকে অর্থ তুলে ওই সব দেশে নিয়ে যাচ্ছেন। এসব দেশের মধ্যে ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, কেমান আইল্যান্ড, বারমুডা, দুবাই, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরের মতো উন্নত দেশগুলোয় নিয়ে যাচ্ছেন। সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের গত ছয় বছরের (২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত) প্রতিবেদনের তথ্য তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২১ সালেই বাংলাদেশিরা সবচেয়ে বেশি অর্থ জমা রেখেছিলেন। ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রায় সমপরিমাণ অর্থ জমা ছিল। ২০১৮ সালে জমা ছিল ৬১ কোটি ফ্রাঁ। ২০১৯ সালে ৬০ কোটি ৩০ লাখ ফ্রাঁ এবং ২০২০ সালে বাংলাদেশিদের অর্থের পরিমাণ ছিল ৫৬ কোটি ৩০ লাখ ফ্রাঁ। ২০২২ সালে সুইস ব্যাংকগুলো থেকে রেকর্ড পরিমাণ অর্থ তুলে নেন বাংলাদেশিরা।

এক বছরের ব্যবধানে ৮৭ কোটি ১১ লাখ ফ্রাঁ থেকে এক লাফে ৫ কোটি ৫২ লাখ ফ্রাঁয় নেমে এসেছে। পরের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে এ অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৭৭ লাখ ফ্রাঁয়। এ বিষয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআরআই)-এর নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘সুইস ব্যাংক এখন আর পরিচয় গোপন রাখার জায়গা নয়, তাই এটি বাংলাদেশিদের পছন্দের গন্তব্যও নয়। বর্তমানে সবচেয়ে কাছের গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশিদের পছন্দের শীর্ষে আছে দুবাই ও সিঙ্গাপুর। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও ইংল্যান্ডের রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ে অর্থ পাচার এবং বিনিয়োগ করা হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘সেখানে যারা টাকা স্থানান্তর করেছেন সেখানে তাদের ব্যবসা আছে। সিঙ্গাপুর ও দুবাইতে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

সুইজারল্যান্ড একসময় আমানতকারীদের তথ্য গোপন রাখত। কিন্তু এখন কোনো দেশের সরকার খোঁজ নিলে তারা তথ্য দিয়ে থাকে।’ সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্যমতে, সুইস ব্যাংকগুলো থেকে শুধু বাংলাদেশিদের অর্থ কমেনি। ভারত, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর ও নেপালের নাগরিকদের জমা অর্থও কমেছে। ২০২২ সালে সুইস ব্যাংকে ভারতীয়দের জমা ছিল ৩৪০ কোটি সুইস ফ্রাঁ, ২০২৩ সালে নেমে এসেছে ১০৩ কোটি ফ্রাঁয়। একইভাবে ২০২২ সালে পাকিস্তানিদের জমা অর্থের পরিমাণ ৩৯ কোটি থেকে ২০২৩ সালে ২৯ কোটি ফ্রাঁয় নেমে আসে। ২০২২ সালে সিঙ্গাপুরের নাগরিকের জমার পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৭৮৭ কোটি ফ্রাঁ। ২০২৩ সালে কমে হয়েছে ৪ হাজার ৫৪৭ ফ্রাঁ। নেপালিদের জমা অর্থের পরিমাণ ৪৮ কোটি থেকে কমে ৪৫ কোটি ফ্রাঁ হয়েছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor