Hot

গোলকধাঁধায় এমপি আনার হত্যা, ঢাকায় পরিকল্পনা ভারতে বাস্তবায়ন

ছোরা চাকু কেনা হয় কলকাতার নিউমার্কেট থেকে মৃতদেহের হাড় থেকে মাংস আলাদা করে হলুদ মেশানো হয় ♦ খুনে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার শাহিনের ♦ ভারতীয় তদন্ত দল ঢাকায় ♦ আমানুল্লাহ হলেন চরমপন্থি নেতা শিমুল ♦ লাশের খোঁজে কলকাতা পুলিশের অভিযান ♦ খুনের কারণ অজানা

ঢাকায় বসে দীর্ঘ তিন মাস ধরে খুনের পরিকল্পনার পর ভারতে নিয়ে খুন করা হয় ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকারদলীয় এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারকে। তাঁকে হত্যা করতে ছোরা, চাকু কেনা হয় কলকাতার নিউমার্কেট থেকে। আনারকে হত্যার পর লাশ টুকরা টুকরা করে হাড় থেকে মাংস আলাদা করা হয়। মাংস হলুদ দিয়ে মিশিয়ে লাগেজে ভরা হয়। এমন সব রোমহর্ষক তথ্য পুলিশকে দিয়েছেন আটক আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল। গোয়েন্দা পুলিশ এসব তথ্য জানালেও লাশের খন্ডিত অংশগুলো কোথায় লুকানো রয়েছে, এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই। এদিকে গ্রেফতারের দুই দিন পর পুলিশ জানতে পারল আমানুল্লাহর আসল নাম শিমুল ভূঁইয়া। পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির একজন নেতা। তিনি একজন পেশাদার খুনি। সব মিলিয়ে এমপি খুনের তদন্তে সংশ্লিষ্টরা রয়েছেন গোলকধাঁধায়। তাঁরা বলছেন, লাশের খন্ডিত অংশ পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ রয়েছে। এ ছাড়া খুনের মোটিভ সম্পর্কেও পুলিশ এখনো পরিষ্কার নয়। এমপি আনার খুনের ঘটনা তদন্ত করতে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের একটি দল এখন ঢাকায়। গতকাল বিকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে খুনের ঘটনাটি নিয়ে বৈঠক হয়। এ বৈঠকের মধ্য দিয়েই যৌথ তদন্ত শুরু করল বাংলাদেশ-ভারত।

এদিকে আনোয়ারুল আজিম আনারের লাশের খণ্ডিত অংশের সন্ধানে ভাঙড়ের কৃষ্ণমাটি খাল এলাকায় গত রাতে কলকাতা সিআইডি অভিযান শুরু করেছে। অ্যাপ ক্যাবচালক জুবেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই খালের সংবাদ জানতে পেরেছে সিআইডি। এরপরই তাকে নিয়ে সেখানে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। গত রাত ১২টা পর্যন্ত এ অভিযান চলছিল বলে জানা গেছে। এমপি আনার খুনের মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহিন মুখ খুলেছেন। তিনি খুনের সঙ্গে জড়িত নন বলে একটি বেসরকারি চ্যানেলকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, খুনের সময় আমি ছিলাম বাংলাদেশে। যেভাবে হত্যাকান্ড : ৩০ এপ্রিল কিলিং মিশন বাস্তবায়নকারী সৈয়দ আমানুল্লাহ ওরফে শিমুলকে নিয়ে ভারতের কলকাতায় যান মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহিন। নিউমার্কেট এলাকা থেকে ছুরি, চাপাতিসহ হত্যাকান্ডের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে নিয়ে রাখেন নিউটাউন অভিজাত এলাকায় সঞ্জীবা গার্ডেনসে। আগে থেকেই হত্যাকান্ডের ছক আঁকা থাকায় আমান দফায় দফায় রিহার্সেল করেন তার সহযোগীদের সঙ্গে। গত ১৩ মে দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে কলকাতা নিউটাউন অভিজাত এলাকায় সঞ্জীবা গার্ডেনসে প্রবেশ করেন আনোয়ারুল আজিম আনার। শাহিনের ভাড়া করা এ ভবনেরই অত্যাধুনিক ‘ত্রি-প্লেক্স’ ফ্ল্যাটে আগে থেকেই অবস্থান করছিলেন সৈয়দ আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল, শিলাস্তি রহমানসহ ছয়জন।

তবে ‘ব্লক-৫৬ বিইউ’ ফ্ল্যাটের তৃতীয় তলায় ছিলেন মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহিনের সুন্দরী বান্ধবী শিলাস্তি। গোয়েন্দাদের ধারণা, হত্যার আগে এমপি আনারের সঙ্গেও বিশেষ সময় কাটিয়েছেন তিনি। দুপুর ২টা ২০ মিনিটে শুরু হয় হত্যার মূল মিশন। গোয়েন্দাদের হেফাজতে থাকা আমানের বরাত দিয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছেন, শুরুতে এমপি আনারকে জবাই করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। কেউ যাতে কোনো কিছু বুঝতে না পারে সেজন্য ফ্ল্যাটে বাজানো হয় কিছুটা উচ্চশব্দের মিউজিক। পর্যায়ক্রমে শরীরের বিভিন্ন অংশ চাপাতি দিয়ে কেটে আলাদা করা হয়। হাড় থেকে খুলে ফেলা হয় মাংস। মাংস যাতে দ্রুত পচে না যায় সেজন্য তাতে দেওয়া হয় হলুদের গুঁড়া। মাথার খুলি টুকরো টুকরো করতে শুরুতে ব্যর্থ হয় পাষ- খুনিরা। তখন কোনোভাবেই মুখ দেখে যাতে চিহ্নিত করা না যায় সেজন্য মুখ থেকে মাংস আলাদা করে তুলে ফেলা হয়। পর্যায়ক্রমে সেগুলো ভর্তি করা হয় চারটি লাগেজে। সবশেষ হত্যাকান্ডের আলামত মুছে ফেলতে ফ্ল্যাটের মেঝে ব্লিচিং পাউডার দিয়ে ধুয়ে ফেলা হয়। লাগেজগুলো আরও কয়েকজনের মতো করে সিয়ামের কাছেও দেওয়া হয়। তবে পর্যায়ক্রমে সেগুলোর হাতবদল হয়। কিন্তু এমপি আনারকে জবাই কিংবা হাড় থেকে মাংস আলাদা করার কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে বারবার দাবি করেছেন আমান।

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার মাধ্যমে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমকে হত্যা করা হয়েছে। খুনিরা অনেক দিন ধরে এ হত্যাকান্ডের সুযোগ খুঁজছিলেন। গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ঢাকার গুলশান ও ধানমন্ডির দুটি বাসায় এক-দুই মাস ধরে সংসদ সদস্য আনারকে হত্যার পরিকল্পনা হয়। ঢাকায় ধরা পড়ার সম্ভাবনা থাকায় হত্যার স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয় কলকাতাকে। এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, আনারকে কৌশলে কলকাতায় নেওয়া হয়। খুনের পর হত্যাকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। কী কারণে হত্যাকান্ডটি ঘটেছে তা বের করা হবে। তবে এখন মূল কাজ হলো, হত্যাকান্ডে জড়িতদের বের করা। এজন্য কলকাতা পুলিশ ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ একসঙ্গে কাজ করছে। তিনি বলেন, ‘আনারকে হত্যার পর লাশটি গুম করতে শরীর টুকরো টুকরো করে হাড্ডি ও মাংস আলাদা করা হয়। এরপর কেউ যাতে সন্দেহ করতে না পারে, এজন্য হলুদ মিশিয়ে ব্যাগে ভরে ওই বাসা থেকে বের করা হয়েছে। কিন্তু কোথায় লাশের খন্ডিত অংশ ফেলা হয়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।’ আনোয়ারুল আজিমের পুরো লাশ না পাওয়া গেলেও খন্ডিত লাশ পাওয়া যাবে বলে মনে করেন গোয়েন্দা কর্মকর্তা।

খুন নিয়ে মুখ খুললেন মূল হোতা শাহিন : এমপি আনার খুনের ঘটনায় তাকে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত আক্তারুজ্জামান শাহিন। গতকাল যুক্তরাষ্ট্র থেকে একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে শাহিন জানান, আনার হত্যার সময় তিনি বাংলাদেশে ছিলেন। ৫ কোটি টাকায় কিলিং মিশন চুক্তির খবরটিও তিনি অস্বীকার করেছেন। আক্তারুজ্জামান শাহিন বলেন, এ ঘটনায় আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। এ ঘটনার সময় আমি ভারতে ছিলাম না।

আমার আইনজীবী বলেছেন এ বিষয়ে কারও সঙ্গে কথা না বলতে। মানুষ দেশে অনেক কথাই বলে। যদি কোনো প্রমাণ থাকে তাহলে দেখাক।

ফ্ল্যাটের ভাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি যদি ফ্ল্যাট ভাড়া নিই, আমি কি আমার ফ্ল্যাটে এ ধরনের কাজ করব? আমার পাসপোর্ট রেকর্ড দেখলে দেখা যাবে আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। এখন বলা হচ্ছে আমি ৫ কোটি টাকা দিয়েছি। কীভাবে আমি ৫ কোটি টাকা দিয়েছি? কোথা থেকে পেলাম আমি এত টাকা! এখন এগুলো মানুষ বললে আমার কী করার আছে। ঘটনা কবে ঘটেছে সেগুলো আমি পত্রিকায় দেখেছি। সে সময় আমি বাংলাদেশে ছিলাম।

আমানুল্লাহ হলেন চরমপন্থি নেতা শিমুল : ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে খুনে ভাড়া করা হয় খুলনা অঞ্চলের কুখ্যাত সন্ত্রাসী শিমুল ভূঁইয়াকে। তিনি চরমপন্থি সংগঠন পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম শীর্ষ নেতা। এ ঘটনায় ঢাকায় ধরা পড়ার পর পুলিশের কাছে শিমুল ভূঁইয়া নিজেকে সৈয়দ আমানুল্লাহ নামে পরিচয় দিয়েছেন। মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রও পরে নিশ্চিত করেছেন যে, শিমুল ভূঁইয়াই নিজের নাম সৈয়দ আমানুল্লাহ বলে পরিচয় দিয়েছেন। তিনি আমানুল্লাহ নামেই পাসপোর্ট বানিয়েছেন, সেই পাসপোর্টে কলকাতায় গিয়েছিলেন। ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকা থেকে পাসপোর্টটি করা হয়েছিল। পাসপোর্ট করতে একই নামে তিনি জাতীয় পরিচয়পত্রও (এনআইডি) তৈরি করিয়েছেন। কীভাবে তিনি শিমুল ভূঁইয়া থেকে আমানুল্লাহ হলেন এবং ভুয়া পাসপোর্ট ও এনআইডি তৈরি করলেন, এখন সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন গোয়েন্দারা।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ ও অন্যান্য সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আনোয়ারুল আজিমকে খুনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন সৈয়দ আমানুল্লাহ নামে পরিচয় দানকারী শিমুল ভূঁইয়া। তাঁর গ্রামের বাড়ি খুলনার ফুলতলার দামোদর ইউনিয়নে। তিনি খুলনা অঞ্চলে চরমপন্থি সংগঠন পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতা ছিলেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্র বলছেন, শিমুল ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে খুনসহ অন্তত দুই ডজন মামলা আছে। গণেশ নামে এক ব্যক্তিকে খুন করে যশোরের অভয়নগর থানার এক মামলায় আমানুল্লাহ সাত বছর (১৯৯১-৯৭) জেল খাটেন। ইমান আলী নামে এক ব্যক্তিকে খুনের ঘটনায় ২০০০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত জেল খাটেন। এদিকে আমানুল্লাহ নামের বিষয়ে খুলনায় খোঁজ নেওয়া হয়েছে। সেখানে চরমপন্থিদের সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এক সূত্র বলছেন, আমানুল্লাহ নামে এক চরমপন্থি নেতা শিমুল ভূঁইয়ার অন্যতম সহযোগী ছিলেন।

আনার হত্যায় আটক ২ জব্দ আঁততায়ীদের ব্যবহৃত গাড়ি : বাংলাদেশের ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যায় জড়িত সন্দেহে গতকাল আটক করা হয়েছে এক বাংলাদেশিকে। জিয়াদ নামে ওই ব্যক্তিকে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বনগাঁ থেকে আটক করেছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডির কর্মকর্তারা। জিয়াদ (২৩) আলোচিত এই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও এমপি আনারের বন্ধু আক্তারুজ্জামান শাহিনের সহযোগী বলে জানা গেছে। আটকের সময় জিয়াদের পরনে ছিল সাদা গেঞ্জি এবং খয়েরি রঙের প্যান্ট। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই এমপি আনারের লাশ উদ্ধার করতে যান তদন্তকারী কর্মকর্তারা। আনারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর তিনি মধ্য কলকাতায় লুকিয়ে ছিলেন বলে জানা গেছে। কিন্তু বুধবার খুনের ঘটনা সামনে আসার পরই বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।

এ ছাড়া জুবের নামে এক ক্যাব চালককেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। ইতোমধ্যেই তার গাড়িটিও জব্দ করা হয়েছে। গতকাল ভোরে জব্দ করা হয়েছে সাদা রঙের ওই মারুতি গাড়িটি।

সরকার এমপি হত্যা সিরিয়াসলি দেখছে -স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যা তদন্তে প্রয়োজন হলে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ভারতে যাবেন। ভারতের গোয়েন্দারাও আসতে পারেন। একজন সংসদ সদস্যকে কেন হত্যা করা হলো বিষয়টি সরকার ‘সিরিয়াসলি’ দেখছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে বিষয়টি খুবই  গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন।

গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, আনোয়ারুল আজিমের লাশ এখনো উদ্ধার করা যায়নি। তবে প্রায় সবকিছুই আমাদের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। প্রায় সবকিছুই চিহ্নিত হয়ে আসছে। দুই দেশের গোয়েন্দারা একমত হলেই সবকিছু জানানো হবে।

সন্দেহভাজন জিহাদকে আজ তোলা হচ্ছে বারাসাত আদালতে : ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন একজনকে গ্রেফতার করেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি। জিহাদ হাওলাদার ওরফে জুবের নামে ২৪ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির বাড়ি বাংলাদেশের খুলনা জেলার অধীন দিঘলিয়া থানার বারাকপুর গ্রামে। তার বাবার নাম জয়নাল হাওলাদার। গত রাতে এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন তারা। সেখানে বলা হয়েছে, ‘আঁততায়ীরা মুম্বাই থেকে জিহাদ নামে ওই কসাইকে নিয়ে আসে। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে মুম্বাইয়ে বসবাস করছিলেন জিহাদ। দুই মাস আগে তাকে কলকাতায় নিয়ে আসে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক আক্তারুজ্জামান শাহিন। এই শাহিনই এ জঘন্য হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী।

জিহাদ স্বীকার করেছেন যে, আক্তারুজ্জামানের নির্দেশে তিনিসহ চারজন ওই এমপিকে তার নিউটাউনের ওই ফ্ল্যাটে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন। এরপর তারা ফ্ল্যাটের মধ্যেই পুরো শরীর থেকে সব মাংস সরিয়ে নেন এবং পরিচয় নষ্ট করার জন্য মাংসের কিমা করে পলিথিনের প্যাকে রাখেন। পাশাপাশি হাড়গুলোকে ছোট ছোট টুকরো করে প্যাক করেন। পরে সেই প্যাকেটগুলো ফ্ল্যাট থেকে বের করে বিভিন্ন ধরনের পরিবহন ব্যবহার করে কলকাতা ও আশপাশের অঞ্চলে ফেলে দেন তারা।

শুক্রবার ওই অভিযুক্তকে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বারাসাত জেলা ও দায়রা আদালতে পাঠানো হবে। তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির তরফে পুলিশ রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তার বক্তব্য যাচাই করবে এবং তাকে সঙ্গে নিয়েই খুন হয়ে যাওয়া সংসদের শরীরের অঙ্গগুলো উদ্ধার করবে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button