Science & Tech

গ্যাস শীতল করে নিজেই জ্বালানি সংগ্রহ করে কৃষ্ণগহ্বর

জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি বিশাল কৃষ্ণগহ্বরের খাদ্য তৈরির এক স্বনির্ভর প্রক্রিয়া আবিষ্কার করেছেন। নাসার চন্দ্র এক্স-রে মানমন্দির এবং চিলির ভেরি লার্জ টেলিস্কোপ (VLT) থেকে সংগৃহীত ডেটা ব্যবহার করে তারা দেখিয়েছেন, কীভাবে কৃষ্ণগহ্বরের বিস্ফোরণ একটি ধারাবাহিক জ্বালানি উৎপাদনের প্রক্রিয়া তৈরি করে।

গবেষণা অনুযায়ী, বিশাল কৃষ্ণগহ্বর আশেপাশের গ্যাস শোষণ করে এবং শক্তিশালী জেট নিঃসরণ করে। এই জেট আশেপাশের গরম গ্যাস শীতল করে সরু গ্যাসীয় ফিলামেন্ট তৈরি করে। এই উষ্ণ গ্যাস আবার কৃষ্ণগহ্বরে প্রবাহিত হয়ে নতুন বিস্ফোরণ ঘটায় এবং পুরো প্রক্রিয়াটি চলতে থাকে।  

চিলির সান্তিয়াগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ভ্যালেরিয়া অলিভারেসের নেতৃত্বে পরিচালিত এই গবেষণাটি সাতটি গ্যালাক্সি ক্লাস্টার নিয়ে কাজ করেছে। গবেষকরা দেখেছেন, ক্লাস্টারের কেন্দ্রে থাকা এই বিশাল কৃষ্ণগহ্বরগুলো সূর্যের ভরের কয়েক মিলিয়ন থেকে কয়েক বিলিয়ন গুণ বেশি।  

গবেষণায় দুইটি গ্যালাক্সি ক্লাস্টার—পারসিয়াস এবং সেন্টোরাস—দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।  
পারসিয়াস ক্লাস্টার: এখানে গরম গ্যাসকে নীলচে-বেগুনি রঙে দেখা যায়, যা গোলাপি ফিলামেন্ট দিয়ে বেষ্টিত।  সেন্টোরাস ক্লাস্টার:  এখানে গ্যাসের ফিলামেন্টগুলো তুলনামূলক নরম এবং সূক্ষ্ম পালকের মতো দেখায়।

উভয় ক্লাস্টারের কেন্দ্রে থাকা কৃষ্ণগহ্বরগুলো গ্যাস ফিলামেন্টের আভায় ঘেরা, যা তাদের স্বনির্ভর জ্বালানি সংগ্রহের প্রক্রিয়াকে স্পষ্ট করে।  

গবেষণায় গ্যালাক্সি ক্লাস্টারের গ্যাসীয় ফিলামেন্ট ও ‘জেলিফিশ গ্যালাক্সি’-এর লেজের মধ্যে মিল খুঁজে পাওয়া গেছে। জেলিফিশ গ্যালাক্সি চলাচলের সময় আশেপাশের গ্যাস থেকে যে প্রক্রিয়ায় গ্যাস খোয়া যায়, সেই প্রক্রিয়া ও কৃষ্ণগহ্বরের গ্যাস ফিলামেন্টের গঠন এক ধরনের অভিন্ন প্রক্রিয়ার ইঙ্গিত দেয়।  

এই গবেষণায় চিলি, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং ইতালির বিজ্ঞানীরা একসঙ্গে কাজ করেছেন। VLT-এর MUSE যন্ত্র ব্যবহার করে মহাবিশ্বের ত্রিমাত্রিক দৃশ্য তৈরি করা হয়েছে। নাসার চন্দ্র প্রোগ্রাম থেকে পাওয়া এক্স-রে ডেটা এই আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button