Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

গ্রিন ব্রিকসে বদলে যেতে পারে দেশ

দেশের ক্রমবর্ধমান নির্মাণ কর্মকান্ডের জোগান দিতে প্রায় ৭ হাজার ইটভাটা সীমিত কৃষিজমির উপরিভাগ-টপ সয়েল ধ্বংস করে পরিবেশ বিপন্ন করে তুলছে। বায়ুদূষণেও বড় ভূমিকা রাখছে এসব ইটভাটা। পরিবেশ আইন ও ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইনে কৃষিজমিতে ইটভাটা অবৈধ। অথচ দেশের প্রায় শতভাগ ইটভাটা এ আইন মানছে না। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ইটভাটার পরিবেশ ছাড়পত্রই নেই। এসব ইটভাটায় বছরে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি ইট তৈরিতে ১৩ কোটি মেট্রিক টন মাটি লাগে। মূলত কৃষিজমির ওপরের উর্বর অংশ কেটে ইট তৈরি হচ্ছে। এতে জমির উর্ভরতা কমে গিয়ে উৎপাদনশীলতা বিঘিত হচ্ছে। সার ও কীটনাশক আমদানিতে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। নদীর চরের বালু ব্যবহার করে গ্রিণ ব্রিকস তৈরির মধ্য দিয়ে এ সমস্যার সমাধান করা যায়।

পরিবেশবাদীরা বলেছেন, প্রচলিত রেড ব্রিকসের ক্ষতিকর দিক মূল্যায়ন করে সারা দেশে পরিবেশবান্ধব গ্রিন ব্রিকস ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে। কৃষি মাটির বিকল্প নদীগর্ভ থেকে উত্তোলিত বালু দিয়ে দেশে সীমিত পরিসরে তৈরি হচ্ছে পরিবেশবান্ধব, টেকসই ও সাশ্রয় মূল্যের গ্রিন ব্রিকস। মাটির বিকল্প উপকরণ ব্যবহার করে পরিবেশবান্ধব ইট তৈরির উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। নদী খনন থেকে উঠে আসা বালুর সঙ্গে কিছু উপকরণ ব্যবহার করে উন্নতমানের গ্রিন ব্রিকস তৈরি হয়, যা দিয়ে উঁচু ভবনও নির্মাণ করা হচ্ছে। সরকারের আর্থিক ও নীতিসহায়তা পাওয়া গেলে গ্রিন ব্রিকসের অসংখ্য উদ্যোগ গড়ে উঠতে পারে। বন্ধ করতে হবে পোড়া ইটের ব্যবহার : দেশের প্রায় ৭ হাজার ইটভাটা পরিবেশদূষণের বড় হাতিয়ার। বেসরকারি পর্যবেক্ষণ বলছে, দেশের বেশির ভাগ ইটভাটা চলছে নিয়মবহির্ভূতভাবে। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ২০১০ ও ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৩-এ বলা হয়েছে, বসতি এলাকা, পাহাড়, বন ও জলাভূমির ১ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ইটভাটা করা যাবে না। কৃষিজমিতেও ইটভাটা অবৈধ। অথচ দেশের প্রায় শতভাগ ইটভাটা এ আইন মানছে না। পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব মতে, দেশে মোট ৭ হাজার ৮৬টি ইটভাটা চালু আছে। এর মধ্যে ৪ হাজার ৫০৫ ইটভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র নেই। এসব ইটভাটায় বছরে প্রায় ৩ কোটি ৫০ লাখ ইট তৈরি হচ্ছে। ইটভাটাগুলোতে বছরে ১৩ কোটি মেট্রিক টন মাটি লাগে। মূলত কৃষিজমির ওপরের উর্বর অংশ বা টপ সয়েল কেটে ইট তৈরি হচ্ছে। এসব ইটভাটা শুধু উর্বর মাটি ধ্বংস করছে না; বায়ু, মাটি ও প্রকৃতির স্থায়ী ক্ষতি করছে। স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও প্রভাবশালীদের মালিকানা ও ছত্রছায়ায় এসব ইটভাটা চলছে।

দূষণে বড় ভূমিকা ইটভাটার : ইটভাটা থেকে বায়ুদূষণ ঘটছে মারাত্মকভাবে। এ পদ্ধতিতে ইট তৈরির কারণে মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে জনস্বাস্থ্যের। ইটভাটার কর্মীদের স্বাস্থ্যজনিত ক্ষতি আরও বেশি। ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয় আমদানিকৃত নিম্নমানের কয়লা। এ কয়লা পোড়ানোর ফলে প্রচুর পরিমাণ ছাই তৈরি হয়। এ ছাড়া ইটভাটা থেকে বায়ুমন্ডলে দূষিত উপাদানও যোগ হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইটভাটার পরিবর্তে সারা দেশে পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে ইট তৈরির কারখানা গড়ে তুলে বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। ইতোমধ্যে বেসরকারি পর্যায়ে ব্লক বা ব্লক ইট তৈরির বেশকিছু কারখানা গড়ে উঠেছে দেশে। তবে এ ব্যাপারে সরকারের খুব বেশি উদ্যোগ নেই। ইটভাটা পুরোপুরি তুলে দেওয়ার আগেই দেশে পর্যাপ্তসংখ্যক ব্লক তৈরির কারখানা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া উচিত বলে মনে করছেন পরিবেশবাদীরা। বেসরকারি পর্যায়ে এর উদ্যোক্তাদের সব ধরনের সহায়তা দিতে হবে। সেক্ষেত্রে বর্তমান ইটভাটার মালিকরাও হতে পারবেন ব্লক কারখানার উদ্যোক্তা। ইটভাটার শ্রমিকরাই সেখানে কাজ করতে পারবেন।

চরের বালু দিয়ে গ্রিন ব্রিকস : পরিবেশবিদরা বলছেন, কৃষিজমির টপ সয়েল দিয়ে প্রচলিত ইটের ব্যবহার কমাতে হবে। নদীর চরের বালু দিয়ে পরিবেশবান্ধব গ্রিন ইট তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে ব্যাপকভাবে। নদীর বালু কাজে লাগানো হলে নদী খননের কার্যকর সুফল পাওয়া যাবে। বর্তমানে খনন করে নদীতীরে বালু রাখার কারণে তা আবার নদীতে গিয়েই পড়ছে। ব্লক ইট বা গ্রিন ব্রিকসের ব্যবহার বাড়াতে হলে সরকারকে বিশেষ ঋণসুবিধা দিয়ে উদ্যোক্তা তৈরি করতে হবে। জানা গেছে, গত জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে ব্লক ইটের কারখানা হয়েছে মাত্র ১৫১টি। এর মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামে হয়েছে ৮৮টি কারখানা। এসব কারখানায় যে ইট তৈরি হচ্ছে তা মোট ইটের চাহিদার ৫ শতাংশও মেটাতে পারছে না। এজন্য ইটভাটা বন্ধের পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব বিকল্প ইট তৈরিতে নতুন উদ্যোক্তাদের প্রণোদনা দিতে হবে। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ১০ একর জমিতে গড়ে উঠছে দেশের সর্ববৃহৎ গ্রিন ব্রিকস কারখানা পিয়া অটোব্রিকস লিমিটেড। পরিবেশের সম্পূর্ণ সুরক্ষা রেখেই দৈনিক ১ লাখ ২০ হাজার ইট উৎপাদন ক্ষমতার কারখানাটি অবদান রাখছে দেশের অর্থনীতিতে। দেশের বিভিন্ন স্থানে এরকম আরও কিছু গ্রিন ব্রিকসের কারখানা গড়ে উঠেছে।

প্রয়োজন আর্থিক ও নীতিসহায়তা : পোড়া ইটের বিকল্প পণ্যের ব্যাপারে সরকার উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিচ্ছে। চিমনিতে পোড়ানো ইটের বদলে ব্লক ইট বানাতে সরকারি-বেসরকারি কারখানার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে সড়ক ছাড়া সরকারি সব নির্মাণকাজে শতভাগ ব্লক ইট ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে ইতোমধ্যে পরিপত্র জারি করা হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে অগ্রগতি কম। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরিবেশবান্ধব ইট তৈরির উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে সরকারকে আর্থিক সহায়তা এবং ঋণসুবিধা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে গত তিন দশক ধরে কাজ করে যাচ্ছেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী হিসেবে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করেছেন তিনি। দেশ ও জাতির জন্য একটি টেকসই পরিবেশ সৃষ্টির বড় সুযোগ এখন তাঁর সামনে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto