ঘোষণার এক মাস পরও মাস্কের ‘আমেরিকা পার্টি’র দেখা নেই

বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক গত ৫ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন, নাম ‘আমেরিকা পার্টি’। তবে এখনো দলটির কোনো তৎপরতা দৃশ্যমান নেই।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বহুল আলোচিত ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ পাস করার পর ক্ষুব্ধ হয়ে অনলাইনে একটি জরিপ চালিয়েছিলেন তাঁরই সাবেক ঘনিষ্ঠ মিত্র মাস্ক। জরিপের ফল দেখে রাজনৈতিক দল গঠনে উৎসাহিত হন তিনি।
মাস্ক তখন বলেছিলেন, তাঁর এ দল হবে মধ্যপন্থী মানুষের জন্য এবং মূলধারার রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক পার্টির বাইরে ভিন্ন এক রাজনৈতিক বিকল্প।
তবে মাস্কের ঘোষণার এক মাসের বেশি পার হলেও তিনি দল গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় কোনো আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নেননি। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে দলের বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্যও করতে দেখা যায়নি তাঁকে।
তবে মাস্কের এ উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন মার্কিন ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী মার্ক কিউবান। আর ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রধান সতর্ক করে বলেন, মাস্কের এ প্রচেষ্টাকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া উচিত।
এদিকে বেশ কিছু জনমত জরিপে দেখা গেছে, অনেক মার্কিন তৃতীয় একটি রাজনৈতিক দলের প্রয়োজন অনুভব করলেও মাস্কের দলের প্রতি তাঁদের আগ্রহ তুলনামূলক কম। চলতি সপ্তাহে সরকারি দক্ষতা বিভাগ (ডিওজিই) এবং এক্সএআইয়ে মাস্কের এক শীর্ষ সহকর্মী ঘোষণা দিয়েছেন যে তিনি নিজস্ব পডকাস্ট শুরু করতে যাচ্ছেন। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, মাস্কের দল গঠনের পরিকল্পনায় তাঁর কিছু সহকর্মীর আগ্রহ কমে এসেছে।
বর্তমানে ‘আমেরিকা পার্টি’ একটি ‘ধারণা’র পর্যায়ে রয়েছে। মাস্ক যদি সত্যিই তাঁর দলকে শক্তিশালী করতে চান, তবে তাঁকে এখনই আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নিতে হবে, প্রার্থীদের সমর্থন ও জনমত অর্জনের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
এদিকে মাস্ক তৃতীয় একটি দল গঠনের কথা ভাবলেও, এখনো রিপাবলিকান দলের একজন বড় দাতা হিসেবে রয়ে গেছেন তিনি। গত মাসের শেষে প্রকাশিত নির্বাচনী তহবিল রেকর্ড অনুযায়ী, তিনি মোট দেড় কোটি ডলার বিভিন্ন রিপাবলিকান সুপার প্যাকে দান করেছেন। এর মধ্যে ট্রাম্প–সমর্থিত প্রতিষ্ঠানগুলোও রয়েছে। নতুন দল গঠনের ঘোষণা দেওয়া ও ট্রাম্পের সঙ্গে বিবাদ শুরু হওয়ার আগে মাস্ক এসব অর্থ দিয়েছিলেন।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করা সহজ কাজ নয়। এর জন্য প্রয়োজন ফেডারেল নির্বাচন কমিশনে আনুষ্ঠানিক নথি জমা দেওয়া, বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের ভোটারদের স্বাক্ষর সংগ্রহ করা, আগামী বছর কংগ্রেস নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, এমন প্রার্থী নিয়োগ ও জনমত গঠন। এসব কাজ সম্পন্ন করা ছাড়া কোনো দল কার্যকরভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না।
বেশ কিছু জনমত জরিপে দেখা গেছে, অনেক মার্কিন তৃতীয় একটি রাজনৈতিক দলের প্রয়োজন অনুভব করলেও মাস্কের দলের প্রতি তাঁদের আগ্রহ তুলনামূলক কম। চলতি সপ্তাহে সরকারি দক্ষতা বিভাগ এবং এক্সএআইয়ে মাস্কের এক শীর্ষ সহকর্মী ঘোষণা দিয়েছেন যে তিনি নিজস্ব পডকাস্ট শুরু করতে যাচ্ছেন। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, মাস্কের দল গঠনের পরিকল্পনায় তাঁর কিছু সহকর্মীর আগ্রহ কমে এসেছে।
বর্তমানে ‘আমেরিকা পার্টি’ একটি ‘ধারণা’র পর্যায়ে রয়েছে। মাস্ক যদি সত্যিই তাঁর দলকে শক্তিশালী করতে চান, তবে তাঁকে এখনই আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নিতে হবে, প্রার্থীদের সমর্থন ও জনমত অর্জনের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাস্কের আগ্রহ, সম্পদ ও নেতৃত্বের ক্ষমতার ওপর নির্ভর করবে নতুন এ দলের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক প্রভাব।