চট্টগ্রাম নগরী: এখনও ‘মৃত্যুফাঁদ’ পাঁচ হাজার পয়েন্টে
চট্টগ্রাম নগরের হালিশহর পোর্ট কানেক্টিং সড়ক। এখান থেকে মহেশখালের পাড় ধরে একটি সড়ক গেছে আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকার দিকে। এলাকাটি স্থানীয়দের কাছে ‘বাদশা মিয়া ব্রিকফিল্ড খালপাড় সড়ক’ হিসেবে পরিচিত। এর এক পাশে মহেশখাল, অন্য পাশে বসতি। এই খালের পাড়ে খেলতে গিয়েই গত শুক্রবার নিখোঁজ হয় পাঁচ বছরের আব্দুল্লাহ। পরদিন এক কিলোমিটার দূরে খালের সিডিএ আবাসিক এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। খালের পাড়টি এখনও অরক্ষিত। কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)।
তবে শুধু এই খাল নয়, চসিকের হিসেবেই নগরীতে এমন ঝুঁকিপূর্ণ স্থান বা ‘মৃত্যুফাঁদ’ রয়েছে প্রায় ৫ হাজার। ২০২২ সালের শুরুতে চসিক জানায়, নগরীতে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান পাঁচ হাজার ৫২৭টি। এর পর খোলা নালার ওপর ২৫ হাজার বর্গফুট স্লাব নির্মাণ ও মেরামত এবং ১৫ হাজার বর্গফুট নিরাপত্তা বেষ্টনী দেওয়া হয়েছে বলে তাদের দাবি। এই হিসাবে সুরক্ষিত হয়েছে মাত্র ৫০০ ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট।
গত সোমবার নগরীর অন্তত ১৫টি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দুর্ঘটনা ঘটেছে এমন অনেক স্থানে খাল ও নালার পাড় এখনও উন্মুক্ত। কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনী নেই। গত দেড় বছরে অরক্ষিত এসব খাল-নালায় পড়ে অন্তত ১০ জন মারা গেছেন। এখনও নিখোঁজ একজন। মহেশখালের পড়েই গত এক সপ্তাহে প্রাণ গেছে দুই শিশুর। কিন্তু এত মৃত্যুর পরও নির্বিকার চসিক ও সিডিএ।
নগরীর ছোট পোল এলাকায় মহেশখালটি উন্মুক্ত। বৃষ্টি হলে এখানে সড়কে পানি থইথই করে। সড়ক আর খাল একাকার হয়ে যায়। অথচ খালের পাড়ে নিরাপত্তা বেষ্টনী নেই। মা হোমিও হলের মোহাম্মদ নুর উদ্দিন বলেন, ‘বর্ষায় অনুমান করে সড়কে চলতে হয়। খালে তখন স্রোতও থাকে বেশি।’ নগরীর বড় পোল বাদশা মিয়া ব্রিক ফিল্ডের খালপাড় এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার খালের পাড়ে নিরাপত্তা বেষ্টনী নেই। খালের এই অংশে শিশু আব্দুল্লাহর মৃত্যুর পরও সেখানে নিরাপত্তা বেষ্টনী না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘বৃষ্টি হলে খালের পাড়ে কোমরপানি হয়। তখন কোনটা খাল আর কোনটা সড়ক বোঝার উপায় থাকে না। কয়েকদিন আগে একটা শিশু মারা গেল। অথচ এখানে নিরাপত্তা বেষ্টনী দেওয়া হলো না!’
২০২১ সালের ২৫ আগস্ট নগরীর মুরাদপুরে জলাবদ্ধতায় সড়ক-খাল একাকার হয়ে গেলে তাতে পড়ে নিখোঁজ হন সবজি ব্যবসায়ী সালেহ আহমেদ। খালটির নাম চশমা খাল। দুই বছর পার হলেও এখানে নিরাপত্তা বেষ্টনী বসেনি। ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করে মানুষ। এর আগে একই বছরের ৬ ডিসেম্বর ষোলশহর এলাকায় চশমা খালে পড়ে নিখোঁজ হয় ১২ বছরের কামাল উদ্দিন। তিন দিন পর মির্জা খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার হয়। এখানেও নিরাপত্তা বেষ্টনী নেই। একই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর নগরের আগ্রাবাদে খোলা নালায় পড়ে মৃত্যু হয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী শেহেরীন মাহমুদ সাদিয়ার। সেখানে দেয়াল তুলে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। একই বছরের ৩০ জুন নাসিরাবাদ এলাকায় চশমা খালে পড়ে যায় একটি অটোরিকশা। প্রচণ্ড স্রোতে ভেসে যান চালক সুলতান ও যাত্রী খাদিজা বেগম। পরে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পরে সেখানে নিরাপত্তাবেষ্টনী দেওয়া হয়।
নগরীর বহদ্দারহাট থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত চাক্তাই খাল। এই খালের অধিকাংশই অরক্ষিত। হারেস শাহ লেন এলাকায় খালের পাড়ে এক সন্তান নিয়ে বসবাস করেন ফাতেমা বেগম। তিনি বলেন, ‘বৃষ্টি হলে খাল আর বাসা একাকার হয়ে যায়। অনুমান করে সড়কে উঠতে হয়।’ এখানে চাক্তাই খালের দুই পাড়ে রয়েছে সড়ক। একটি গেছে বারইপাড়া। সেটিতে গাড়ি চলাচল করে। অন্যটি গেছে ঘাসিয়াপাড়া, হাঁটাপথ। বৃষ্টি হলেই এই পথ ডুবে যায়। এখানেও খালের দুই পাড়ে নিরাপত্তা বেষ্টনী নেই।
বহদ্দারহাট থেকে খতিবের হাট হয়ে শমসেরপাড়া পর্যন্ত বয়ে গেছে মির্জা খাল। এই খালের পাড় ধরে গেছে হাজী চাঁন মিয়া রোড। খালটিতে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ চলায় কোথাও নিরাপত্তা বেষ্টনী নেই। কোনো সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিও চোখে পড়ে না। খালপাড় এলাকার বাসিন্দা মো. আবদুল মোনাফ সমকালকে বলেন, ‘আগে খালের পাড়ে রেলিং ছিল। কাজের জন্য তা ভেঙে ফেলা হয়েছে। বৃষ্টি হলে সড়ক ও খাল একাকার হয়ে যায়। ঝুঁকি নিয়ে মানুষ চলাচল করে।’
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের প্রধান মুহাম্মদ রাশিদুল হাসান বলেন, ‘একের পর এক প্রাণহানি হচ্ছে, কিন্তু তা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। এটি খুবই দুঃখজনক।’ তিনি বলেন, ‘দখল ঠেকানো ও আবর্জনা পরিষ্কারের জন্য খাল-নালাগুলো খোলা রাখা হচ্ছে। তবে দুর্ঘটনা রোধে, সরানো যায়– এমন স্লাব ব্যবহার ও নিরাপত্তা বেষ্টনী দেওয়া দরকার।’
Hmm is anyone else having problems with the pictures on this blog loading?
I’m trying to find out if its a problem on my end or if it’s
the blog. Any suggestions would be greatly appreciated.
Thank you for another informative site. The place else may I get that kind of info
written in such an ideal approach? I have a venture that
I’m just now working on, and I have been on the glance out
for such info.
Hi my family member! I wish to say that this post is awesome, great written and include approximately all vital infos.
I’d like to see extra posts like this .
It’s remarkable to visit this site and reading
the views of all colleagues on the topic of this paragraph, while I am also eager of getting familiarity.