Science & Tech

চড়া মূল্যে কচ্ছপগতির ইন্টারনেট

মোবাইল ইন্টারনেটের গতিতে ১৪৮ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১২ – ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতিতে ১৮২ দেশের মধ্যে ১০৮

ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের পথে রয়েছে দেশ। আগামী বছরই যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে। তবে এখনো কচ্ছপগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হচ্ছে দেশবাসীকে। ধীরগতির ইন্টারনেট আবার কিনতে হচ্ছে চড়া মূল্যে। স্পিডটেস্ট গ্লোবাল ইনডেক্সের সবশেষ মার্চ মাসের সূচকে মোবাইল ইন্টারনেটের গতিতে ১৪৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১২তম। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতিতে ১৮২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৮তম। দুটি ক্ষেত্রেই বৈশ্বিক গড় গতির চেয়ে বাংলাদেশের ইন্টারনেটের গতি অর্ধেকের কম।

গত মার্চে মোবাইল ইন্টারনেটে বৈশ্বিক গড় ডাউনলোড স্পিড ছিল ৫২.৯৮ এমবিপিএস। সেখানে বাংলাদেশে মোবাইল ইন্টারনেটে ডাউনলোড স্পিড ছিল ২৪.৫৯ এমবিপিএস। মোবাইল ইন্টারনেটের গতিতে শীর্ষে থাকা কাতারের ডাউনলোড স্পিড ৩১৩.৩০ এমবিপিএস। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ডাউনলোড স্পিড ১০৫.৮৫ এমবিপিএস। অন্যদিকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে বৈশ্বিক গড় ডাউনলোড স্পিড ছিল ৯৩.২৪ এমবিপিএস। বাংলাদেশে ডাউনলোড স্পিড ছিল ৪৪.২৫ এমবিপিএস। শীর্ষ থাকা সিঙ্গাপুরের ডাউনলোড স্পিড ২৮৪.১৩ এমবিপিএস। পার্শ্ববর্তী ভারতের ৬১.৮৪ এমবিপিএস। ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে মোবাইল ইন্টারনেট গতির সূচকে ছয় ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। এক ধাপ পিছিয়েছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে। ধীরগতির এই ইন্টারনেটও চড়া দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে দেশবাসীকে।

ভিপিএন সেবাদানকারী প্ল্যাটফর্ম সার্ফশার্ক প্রকাশিত গ্লোবাল ইন্টারনেট ভ্যালু ইনডেক্স (আইভিআই) শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশিরা ইন্টারনেট ব্যবহারে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় গড়ে প্রায় ৬ দশমিক ৯ গুণ বেশি অর্থ খরচ করছে। খরচ বিবেচনায় ইন্টারনেট সেবা পাওয়া দেশের তালিকায় বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে ৮৩তম অবস্থানে রয়েছে। তালিকায় প্রতিবেশী দেশ ভারতের অবস্থান ৪৪তম, নেপালের ৭৭তম, শ্রীলঙ্কার ৯৬তম এবং পাকিস্তানের ১০২তম। বিশ্বের মাত্র ২৪ শতাংশ দেশ ইন্টারনেটের পিছনে বাংলাদেশিদের চেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করে। ইন্টারনেট ব্যবহারে ব্যয় সবচেয়ে কম ইসরায়েল, সিঙ্গাপুর ও ডেনমার্কে।

সার্ফশার্ক প্রকাশিত ডিজিটাল কোয়ালিটি অব লাইফ ইনডেক্স অনুযায়ী, মোবাইল ইন্টারনেট কেনার জন্য বাংলাদেশিদের মাসে ১ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট ২৮ সেকেন্ড কাজ করতে হয়, যা লুক্সেমবার্গের তুলনায় ৬ গুণ বেশি। ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউতে ২০২৪ সালে বিভিন্ন দেশের ইন্টারনেট খরচের যে হিসাব দেওয়া হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে প্রতি এমবিপিএস ব্যান্ডউইথের দাম ৯২ সেন্ট। যেখানে চিলিতে ১৪ সেন্ট, হংকংয়ে ১৫ সেন্ট, থাইল্যান্ডে ১০ সেন্ট, চীনে ৮ সেন্ট, নেপালে ৩৪ সেন্ট, পোল্যান্ডে ১৪ সেন্ট, রোমানিয়ায় ৬ সেন্ট, ইউক্রেনে ১১ সেন্ট, রাশিয়ায় ১২ সেন্ট। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা বলছেন, মোবাইলে বিভিন্ন প্যাকেজের মাধ্যমে ইন্টারনেট নিয়ে প্রতারণা করা হয়। দেখা যাচ্ছে ৩০ জিবি ইন্টারনেটের দাম রাখছে ২৫০ টাকা। মেয়াদ দিচ্ছে মাত্র সাত দিন। আবার সাত দিনের জন্য দুই জিবি ইন্টারনেট কিনতে খরচ গুণতে হচ্ছে ১৫০ টাকা। এখন দুই জিবি কিনলে দাম বেশি মনে হয়, ৩০ জিবি কিনলে সেই ডাটা শেষ করা যায় না। আবার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে ৫ এমবিপিএস স্পিড দেওয়ার কথা বলে সংযোগ দেয়, কিন্তু ডাউনলোড স্পিড ১ এমবিপিএসও পাওয়া যায় না।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button