Science & Tech

চন্দ্রাভিযানের জন্য নাসা থেকে স্নাতক শেষ করলেন প্রথম যে আরব নারী

সংযুক্ত আরব আমিরাতের মহাকাশচারী নোরা আলমাতরুশি। উত্তরসূরিদের মতো তাঁর জীবনেরও একটা বড় সময় কেটেছে মহাকাশ নিয়ে অবাক করা বিস্ময়ে আর চাঁদে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে।

এই স্বপ্ন পূরণের পথে এক ধাপ এগিয়ে গেলেন আলমাতরুশি। প্রথম আরব নারী হিসেবে চলতি সপ্তাহে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার প্রশিক্ষণ কর্মসূচি থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন তিনি।

৩০ বছর বয়সী আলমাতরুশি স্মরণ করছিলেন মহাকাশ নিয়ে তাঁর একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ের এক পাঠদানের কথা। শ্রেণিকক্ষে তাঁর শিক্ষক চন্দ্রপৃষ্ঠে ভ্রমণের প্রতীকী চিত্র ফুটিয়ে তোলেন। সেখানে ছিল মহাকাশযাত্রার বিশেষ পোশাক, ছিল রকেট শিপের জন্য তাঁবু।  

আলমাতরুশি বলেন, ‘আমরা তাঁবু থেকে বেরিয়ে এলাম। দেখলাম, তিনি আমাদের শ্রেণিকক্ষের বাতিগুলো নিভিয়ে দিলেন। তাঁর শরীর ছিল ধূসর পোশাকে ঢাকা। তিনি আমাদের বলছিলেন, “যেন আমরা চাঁদের মাটিতে রয়েছি।”’

‘দিনটি আমাকে দারুণ রোমাঞ্চিত করে। আমার মনে স্থায়ী দাগ কাটে। আমি ভাবতে থাকি, এটা বিস্ময়কর। আমি ওই দিনের ঘটনার বাস্তব রূপ দেখতে চাচ্ছিলাম। চাঁদের মাটিতে আমি সত্যি সত্যি হাঁটতে চাচ্ছিলাম’, বলছিলেন নীল রঙের মহাকাশচারীর পোশাকে নোরা আলমাতরুশি। পোশাকে এমব্রয়ডারি করে লেখা ছিল তাঁর নাম, সঙ্গে নিজ দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাতীয় পতাকা।

মানবসভ্যতাকে আমি আগের চেয়ে আরও এগিয়ে নিতে চাই। আমি চাই, মানুষ আবার চাঁদে যাক এবং চাঁদের বাইরেও আরও কিছু করুক। আর আমি এ যাত্রার অংশ হতে চাই।

নোরা আলমাতরুশি, নাসা থেকে স্নাতক সম্পন্ন করা প্রথম আরব নারী

যন্ত্রপ্রকৌশলী আলমাতরুশি তেলের শিল্পে কাজ করেছেন। ২০২১ সালে নাসার প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশ নিতে আরব আমিরাত থেকে প্রার্থী হওয়া দুই মহাকাশচারীর একজন ছিলেন তিনি। দেশটির মহাকাশ সংস্থা ইউএইএসএ তাঁদের বাছাই করে।    

দুই বছরের কঠোর পরিশ্রমের পর আলমাতরুশি এখন পুরোপুরি উপযুক্ত একজন মহাকাশচারী। এই সময়ে তিনি তাঁর দেশীয় সহকর্মী ও আরও ১০ জনের সঙ্গে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। নিয়েছেন মহাকাশে হাঁটার প্রশিক্ষণও।

‘দ্য ফ্লাইস’ নামে পরিচিত আলমাতরুশির দল আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) নাসার মিশন, চাঁদে আর্টেমিস মিশন, এমনকি সব ঠিক থাকলে মঙ্গল অভিযানের জন্যও উপযোগী বলে জানা গেছে।

যন্ত্রপ্রকৌশলী আলমাতরুশি তেলের শিল্পে কাজ করেছেন। ২০২১ সালে নাসার প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশ নিতে আরব আমিরাত থেকে প্রার্থী হওয়া দুই মহাকাশচারীর একজন ছিলেন তিনি। দেশটির মহাকাশ সংস্থা ইউএইএসএ তাঁদের বাছাই করে।

নোরা আলমাতরুশি বলেন, ‘মানবসভ্যতাকে আমি আগের চেয়ে আরও এগিয়ে নিতে চাই। আমি চাই, মানুষ আবার চাঁদে যাক এবং চাঁদের বাইরেও আরও কিছু করুক। আর আমি এ যাত্রার অংশ হতে চাই।’

উল্লেখ্য, আলমাতরুশি নাসার প্রথম আরব নারী স্নাতক ডিগ্রিধারী হলেও একাধিক আরব নারী এরই মধ্যে ব্যক্তি খাতে পরিচালিত মহাকাশযাত্রায় অংশ নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সৌদি আরবের বায়োমেডিকেল গবেষক রিয়ানাহ বার্নাবি। এক্সিওম স্পেস প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে গত বছর আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যান তিনি। আগের বছর ২০২২ সালে ব্লু অরিজিনের মহাকাশ অভিযানে অংশ নেন মিসরীয় বংশোদ্ভূত লেবাননি প্রকৌশলী সারা সাবরি।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button