Bangladesh

চমক আসছে আট বিমানবন্দরে

♦ তিন আন্তর্জাতিক ও পাঁচ অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরে চলছে উন্নয়ন কাজ ♦ জুনে শেষ হচ্ছে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ

দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক ও পাঁচটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরে চলছে উন্নয়ন কাজ। সরকারের প্রায় ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার প্রকল্পে বিমানবন্দরগুলোকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। এ বছরের জুন থেকে এ সুবিধাগুলো পর্যায়ক্রমে চালু হবে। এসব কার্যক্রমের ফলে অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক রুটে সেবার মানোন্নয়ন ও উড়োজাহাজ ও যাত্রীধারণ সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, ‘বর্তমান সরকার এভিয়েশন খাতের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ হাতে নিয়েছে। এই প্রকল্পগুলো দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ জন্য তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও পাঁচটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরের কাজ চলমান রয়েছে। জুনের মধ্যে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ের কাজও সম্পন্ন হয়ে যাবে।’ বেবিচক সূত্রে জানা যায়, আগামী অক্টোবরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল (থার্ড টার্মিনাল) পুরোদমে চালু করার চেষ্টা চলছে। এপ্রিলের মধ্যে শেষ করা হবে অবকাঠামো নির্মাণের কাজ। জুলাইতে জাপানি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হবে। তাদের কাজের অগ্রগতির ওপর নির্ভর করছে অক্টোবরে থার্ড টার্মিনাল চালু হওয়ার সম্ভাবনা। কক্সবাজার থেকে আয়ুবুল ইসলাম জানান, ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটের পর কক্সবাজার বিমানবন্দর হচ্ছে দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এ জন্য এই বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণের পাশাপাশি আরও কয়েকটি উন্নয়নমূলক প্রকল্প কাজ চলতি বছরের জুনের মধ্যেই সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে সংশ্লিষ্টদের। কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জন্য ইতোমধ্যে তৈরি করা হচ্ছে নতুন টার্মিনাল ভবন। এ ছাড়া বসানো হচ্ছে গ্রাউন্ড লাইটিং সিস্টেম, সেন্ট্রাল লাইন লাইট, সমুদ্র বুকের ৯০০ মিটার পর্যন্ত প্রিসিশন এপ্রোচ লাইটিং, ইন্সট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেম, নিরাপত্তা প্রাচীর নির্মাণ ও বাঁকখালী নদীর ওপর সংযোগ সেতু। সংশ্লিষ্টদের মতে কক্সবাজার বিমানবন্দর হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় ও দৃষ্টিনন্দন রানওয়ে। এই রানওয়ের অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো অবতরণের সময় উড়োজাহাজটি একেবারে সাগর ছুঁয়ে যাবে। ১০ হাজার ৭০০ ফুট দীর্ঘ রানওয়ের মধ্যে ১৭০০ ফুট তৈরি হয়েছে বাঁকখালী নদীর মোহনায় সাগর ভরাট করেই। প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। চলতি বছরের জুন মাসে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিপূর্ণ রূপ পাবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

কক্সবাজার বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক মো. ইউনুস ভূঁইয়া বলেন, কক্সবাজার বিমানবন্দরে প্রস্তুত হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় ও দৃষ্টিনন্দন রানওয়ে। রানওয়ে ৮১ দশমিক ৪৫ শতাংশ ও টার্মিনাল ৯৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এটি চলতি বছরই চালু হবে। নতুন রানওয়ের ১ হাজার ৭০০ ফুট অংশ থাকছে সাগরজলের ওপর। কক্সবাজার নাগরিক ফোরামের সভাপতি আনম হেলাল উদ্দিন বলেন, রানওয়ে চালু হলে এটি আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদের কক্সবাজারে আসতে আগ্রহ বাড়বে। এটি কক্সবাজারের জন্য একটি মাইল ফলক।

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম থেকে জানান, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পাল্টে গেছে উন্নয়নের ছোঁয়ায়। রানওয়ে সম্প্রসারণ, আধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়নের প্রকল্পের কারণে বদলে গেছে এ বিমানবন্দরের পুরনো চিত্র। বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে ২৪ ঘণ্টাই চালু করা হয়েছে বিমানবন্দর। আধুনিকতার ছোঁয়া লাগার পর থেকে বিদেশি বিমান সংস্থাগুলোরও শাহ আমানতের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে।

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক উইং কমান্ডার তাসলিম আহমেদ বলেন, ‘শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এখন ২৪ ঘণ্টা চালু থাকে। রানওয়ে সম্প্রসারণসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ায় বিদেশি বড় বিমান সংস্থাগুলো ফ্লাইট অপারেশনের আগ্রহ দেখাচ্ছে। এরই মধ্যে টার্কিশ এয়ারলাইন্স, কাতার এয়ারওয়েজ এবং সৌদি এয়ারলাইন্সের মতো স্বনামধন্য বিমান সংস্থা ফ্লাইট পরিচালনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আশা করছি এ তিন সংস্থা দ্রুত সময়ের মধ্যে ফ্লাইট অপারেশন শুরু করবে।’

সৈয়দপুর প্রতিনিধি জানান, সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করতে ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শিগগির শুরু হচ্ছে। ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য পত্র ইস্যু করা হয়েছে। নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ডিপিপি তৈরির। এ বিষয়ে সিভিল এভিয়েশনের পরিচালক (প্রশাসন) মো. জহিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পত্র ভূমি অধিগ্রহণ সংশ্লিষ্ট দফতরকে দেওয়া হয়েছে। ৩৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে বরিশাল বিমানবন্দরের রানওয়ে ৬ হাজার থেকে সাড়ে ৭ হাজার ফুটে উন্নীত করা হচ্ছে। রানওয়ের প্রস্থ ১০০ ফুট থেকে বাড়িয়ে ১৫০ ফুট করা হচ্ছে। ৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজশাহী টার্মিনাল ভবন সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর ফলে বিমানবন্দরটির যাত্রী ধারণক্ষমতা বাড়বে তিনগুণ।

যশোর টার্মিনাল ভবন সম্প্রসারণ প্রকল্পের মাধ্যমে যাত্রী সক্ষমতা দ্বিগুণ বাড়ানো হবে। এ ছাড়াও, যশোর ও রাজশাহী বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ অবতরণ ও উড্ডয়ন সহজ করতে ৫৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে আরেকটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। তবে নকশার ভুলে দুই বছর পিছিয়ে গেছে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ মেগা প্রকল্পের কাজ।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d