Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Bangladesh

চাকরির শঙ্কায় ৩৫৭৪ পুলিশ!

প্রশিক্ষণরত অবস্থায় উপপরিদর্শক (এসআই) পদের ৩১০ জনকে অব্যাহতি দেওয়ার পর চাকরি হারানোর শঙ্কায় আছেন প্রশিক্ষণরত ৩ হাজার ৫৭৪ জন কনস্টেবল। এই উভয় পদের জনবল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে নিয়োগ দেওয়া হয়।

আওয়ামী লীগ সরকারের দেড় দশকে পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগ পাওয়া বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পদের সদস্যদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ ৩ হাজার ৫৭৪ জন কনস্টেবল নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে, তাদের বেশিরভাগের ক্ষেত্রে দলীয় পরিচয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রাধান্য পেয়েছে বিশেষ জেলাগুলো। আর এজন্য তাদের বিষয়ে জোরালো তদন্ত শুরু হয়েছে।

এই কনস্টেবলরা নোয়াখালী, টাঙ্গাইল, রংপুর, খুলনা ও রাঙ্গামাটি পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার, সারদা পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণরত। আগামী দুই মাসের মধ্যে তাদের কর্মস্থলে যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে তাদের নিয়োগ বাতিল করবে নাকি কর্মস্থলে যোগ দিতে বলা হবে, তা নিয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে আলোচনা চলছে বলে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে, চাকরিচ্যুত এসআইদের কেউ কেউ ক্ষোভ জানাচ্ছেন। সম্প্রতি অব্যাহতি পাওয়া একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে দাবি করেছেন, শৃঙ্খলা ভঙ্গের মতো কোনো কাজ তারা করেননি। কী কারণে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো, তা বুঝতেই পারছেন না। ক্ষোভ জানিয়ে তিনি লিখেছেন, “আল্লাহর কাছে বলে রাখলাম, যদি তিনি আমাকে বাঁচিয়ে রাখেন তাহলে যেন এই অন্যায় অবিচারের বিচার একদিন না একদিন এই বাংলার মাটিতে দেখে যাওয়ার সুযোগ দেন। তোমরা যদি জমিনে জুলুম লেখো, আসমানে ইনকিলাব লেখা হবে। সব মনে রাখা হবে, সবকিছু মনে রাখা হবে। বিদায় স্বপ্নের ‘বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি’।”

সংশ্লিষ্টরা দেশ রূপান্তরকে জানান, ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দমনপীড়ন চালায়। এখন পর্যন্ত গুলিতে শিক্ষার্থী ও নিরীহ লোকজন, পুলিশ, আনসারসহ ৭৩৫ জন প্র্রাণ হারিয়েছেন (স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী। তবে হতাহতদের চূড়ান্ত সংখ্যা এখনো প্রকাশ করা হয়নি)।

গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। পুলিশের বেশ কয়েকজন শীর্ষকর্তাও চলে যান আত্মগোপনে। এরই মধ্যে কেউ কেউ ধরা পড়েছেন। কেউ কেউ বিদেশে পালিয়ে গেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আন্দোলনে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগে জড়িত কর্মকর্তাদের প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। শীর্ষ পদ থেকে শুরু করে থানার কনস্টেবল পর্যন্ত অনেককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অবসরে পাঠনো হয় আওয়ামী লীগ সরকারের মতাদর্শী পুলিশ কর্মকর্তা ও অন্য সদস্যদের। এ ছাড়া গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পুলিশের নিয়োগ ও পদোন্নতি পর্যালোচনা করা হচ্ছে। বিশেষ করে গত সরকারের শেষ সময়ে কনস্টেবল, এসআই ও সহকারী পুলিশ সুপারদের (এএসপি) নিয়োগ পর্যালোচনা চলছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলন শুরুর আগে গত জুন মাসে পুলিশে নিয়োগ পান ৩ হাজার ৫৭৪ জন কনস্টেবল। মার্চ ও এপ্রিল মাসে ৬৪ জেলায় চার পর্বে তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। ওই সময়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), সব মহানগর পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি (উপমহাপরিদর্শক), পুলিশ সদর দপ্তরের রিক্রুটমেন্ট ও ক্যারিয়ার প্ল্যানিং শাখা, ৬৪ জেলার পুলিশ সুপাররা বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। নিয়োগে বিশেষ ঢাকা বিভাগকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, বর্তমান সরকারের কাছে তথ্য আছে, মৌখিক পরীক্ষার আগের দিন পুলিশ সদর দপ্তরের নিয়োগ শাখা থেকে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। এটা করা হয়েছে জেলা পর্যায়ে কর্মরত কিছু সরকারি কর্মকর্তার মাধ্যমে, যারা দলীয়ভাবে পরিচিত। লিখিত পরীক্ষায় পাস করা প্রার্থী ও তাদের পরিবারের রাজনৈতিক পরিচয় সংগ্রহ করেছেন এসব কর্মকর্তা। এ প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগবিরোধীদের বাদ দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়। সেজন্য কনস্টেবল নিয়োগের বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

তাছাড়া বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ছয়টি বিসিএসে পুলিশে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের আমলনামা নতুন করে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। বিশেষ করে ২৮, ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৪০ ও ৪১তম ব্যাচের পুলিশ কর্মকর্তাদের বিষয়ে আট তথ্যের সন্ধান চলছে। আন্দোলনের সময় এসব ব্যাচের পুলিশ কর্মকর্তার ভূমিকা নিয়ে নানা অভিযোগ ওঠে। প্রশ্ন ওঠে তাদের রাজনৈতিক দর্শন ও আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে।

নাম প্রকাশ না করে পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, কনস্টেবল নিয়োগের কিছুদিন আগে ৮০৪ জন এসআই নিয়োগ পান। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মতাদর্শী হিসেবে সন্দেহভাজনদের বিষয়ে ভালোভাবে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। এসআইদের বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কনস্টেবলদের নিয়েও আলোচনা চলছে। তবে নিয়োগপ্রাপ্ত কনস্টেবলদের মধ্যে অনেকে গরিব পরিবারের সন্তান বলে তারা তথ্য পেয়েছেন। সেই বিষয়টিও আমলে নেওয়া হয়েছে। দেখা যাক পরবর্তী সিদ্ধান্ত কী হয়।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় শতাধিক হত্যা মামলায় দেড়শর বেশি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সাবেক আইজিপি, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার, অতিরিক্ত কমিশনার, উপকমিশনার, সহকারী কমিশনার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রয়েছেন। পাশাপাশি পরিদর্শক, উপপরিদর্শক, সহকারী উপপরিদর্শক ও কনস্টেবল পর্যায়ের অনেককে আসামি করা হয়েছে।

এর আগে রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণরত অবস্থায় তিন দফায় ৩৬৯ এসআইকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গত ২২ অক্টোবর ২৫২ ও ২৫ অক্টোবর ৫৯ জনকে শোকজ করা হয়। সর্বশেষ ৪ নভেম্বর চাকরিচ্যুত করা হয় ৫৮ জনকে। তাদের বিরুদ্ধে বিশৃঙ্খলার অভিযোগ আনা হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস : চার দিন আগে রাফিন হোসাইন অনিক নামে অব্যাহতি পাওয়া একজন এসআই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন ‘একটি স্বপ্নের মৃত্য। পুলিশ সাব-ইন্সপেক্টরের ট্রেনিং শেষ করে আজকে নিয়োগপত্র হাতে নিয়ে খুশিমনে বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল অথচ যাচ্ছি অব্যাহতিপত্র (বহিষ্কার আদেশ) আর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের এক পৃথিবী সমান দুশ্চিন্তা আর সাত আসমান-জমিনসম কষ্ট বুকে নিয়ে।’ এরপর অনিক পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণের দিনগুলোর অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন। নিয়ম মেনে প্রশিক্ষণের প্রতিটি পর্বে উপস্থিত থাকা, ওই সময়ে নিজের সংকল্পের কথাও লিখেছেন তিনি। তারপরই অনিক লিখেছেন, ‘৩৬৫ দিন পার করলাম ঠিকই তবে প্রাপ্তির খাতা শূন্য। অব্যাহতির কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে একদিন ক্লাসে বসা নিয়ে হইচই ও অমনোযোগী (যা প্রকৃতপক্ষে ঘটেইনি)।’

অনিক আরও লিখেছেন, ‘বর্তমান রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রব্যবস্থার কাছে আমি ওপেন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলাম, আমি যদি এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ১১টা ধাপের একটাতেও যোগ্যতা ছাড়া উত্তীর্ণ হয়ে থাকি এবং আমার ছাত্রজীবনে বা কখনো কোনো খারাপ কাজের সাথে ১ দিনের জন্যও সংশ্লিষ্ট থাকি তাহলে তা প্রকাশ করুন, তখন আমি ফাঁসির মঞ্চে যেতেও প্রস্তুত থাকবো, এখন বুকের মধ্যে যে যন্ত্রণাটা হচ্ছে তার চাইতে হয়তো মৃত্যুই শ্রেয়। আর যদি তা না পারেন তাহলে এইসব মিথ্যা বানোয়াট অজুহাত না দেখিয়ে সরাসরি বলুন কেন অব্যাহতি দেওয়া হলো আমাকে।’

রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যখন আমি, আমার এবং আমার পরিবারের স্বপ্ন পূরণের ঠিক দ্বারপ্রান্তে তখন কেন আমার সাথে এই অন্যায় অবিচার করা হলো????? কেন আমাকে ও আমার পরিবারকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেওয়া হলো??? এইসব প্রশ্নের উত্তর কে দিবে আমাকে??’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
slot demo
bacan4d
bacan4d
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot toto