চাপে থাকা বাইডেনের পাশে স্টারমার-ট্রুডোরা
বয়সের কারণে নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে চাপে থাকা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পাশে দাঁড়িয়েছেন ন্যাটো সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিশ্ব নেতারা। তারা বলছেন, বাইডেন ঠিক আছেন; তাঁর দক্ষতায় ঘাটতি নেই। প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিভিশন বিতর্কে ধরাশায়ী হওয়ার পর প্রথম তিনি মিত্র দেশগুলোর নেতাদের সমর্থন পেলেন। দলের অভ্যন্তরেও বাইডেনের সমর্থন বেড়েছে।
ওয়াশিংটন ডিসিতে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান। বাইডেন তাদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিয়েছেন; পরে একক সংবাদ সম্মেলনও করেন। ন্যাটো সম্মেলনকে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের জন্য অগ্নিপরীক্ষা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল।
সম্মেলনে অংশ নেওয়া যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার একান্ত সাক্ষাৎকারে সিএনএনের জেক ট্যাপারের মুখোমুখি হন। ট্যাপার তাঁর কাছে বাইডেনের বয়স নিয়ে উদ্বেগ ও নির্বাচন থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দাবির বিষয়টি তুলে ধরেন। জবাবে স্টারমার বলেন, নিশ্চিতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ নির্ধারণ করবেন, কে তাদের প্রেসিডেন্ট হবেন। এরপরই বাইডেনের মানসিক অবস্থা সম্পর্কে বলেন স্টারমার। তিনি বলেন, তাঁর সঙ্গে আলাপকালে ৮১ বছরের বাইডেনকে তিনি ‘ভালো ফর্মেই’ পেয়েছেন।
হিন্দুস্তান টাইমস লিখেছে, বিষয়টি নিয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, বড় বড় বিষয় নিয়ে বাইডেনের সঙ্গে কাজ করতে সব সময়ই তাঁর ভালো লাগে। বাইডেনের অভিজ্ঞতা ও ভাবনার গভীরতা আছে; বিভিন্ন বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
ন্যাটো সম্মেলন চলাকালে বক্তব্যে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ভুল করে ‘পুতিন’ বলে সম্বোধন করেছিলেন বাইডেন। এ ইস্যুতে তাঁর পাশে দাঁড়ান প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। তিনি বলেন, সবারই কথা বলার সময় মাঝেমধ্যে ভুল হতে পারে। তিনি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলেছেন। তাঁকে দায়িত্ব পালনে সক্রিয় এবং বিভিন্ন বিষয়ে স্পষ্ট বলেই মনে হয়েছে।
মাখোঁর বক্তব্যকে সমর্থন করেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলাৎজ। তিনি বলেন, কথা বলার সময় একটু এদিক-সেদিক হতেই পারে।
রয়টার্স জানায়, স্থানীয় শুক্রবার সন্ধ্যায় মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ডেট্রয়েটে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়ে বাইডেন প্রার্থিতা থেকে সরে না দাঁড়ানোর কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। এ সময় সমর্থকরা ‘হাল ছেড়ো না’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। সভার আগে তিনি দলের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার সঙ্গেও বৈঠক করেছেন।
আগের দিন বৃহস্পতিবার বাইডেন প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা হাকিম জেফরিসের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে এক চিঠিতে তিনি বাইডেনকে সমর্থন দিয়েছেন। শুক্রবার সকালের দিকে নিজ দলের প্রতিনিধি পরিষদের প্রভাবশালী সদস্য জেমস ক্লাইবার্ন ও ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজমও বাইডেনকে সমর্থন দিয়েছেন। শুক্রবার বিকেলে ইউনাইটেড অটো ওয়ার্কার্সের সভাপতি শন ফেইনও বাইডেনকে সমর্থন দেন।
চাপে থাকলেও ডেমোক্র্যাটদের একটি বড় অংশ বাইডেনের পাশে দাঁড়িয়েছে। শনিবার বিবিসি জানায়, কমপক্ষে ৮০ জন ডেমোক্র্যাট নেতা বাইডেনের পাশে শক্তভাবে দাঁড়িয়েছেন। তাদের সঙ্গে আরও কয়েকজন যোগ দিতে পারেন।