Hot

চিকিৎসায় নতুন দ্বার চীন বাংলাদেশিদের ভারত যাওয়া কমে গেছে

বাংলাদেমের মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর এক সময় চিকিৎসার হাব হয়ে উঠেছিল ভারত। দেশটির কলকাতা, দিল্লি, মাদ্রাজ, চেন্নাই, ব্যাঙ্গালুরে চিকিৎসা নিতে যেতেন বাংলাদেশি রোগীরা। হাসিনা পালানোর পর মোদি ঢাকার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে বাংলাদেশিদের ভিসা দেয়া বন্ধ করে দেয়। কালকাতার হোটেল ও হাসপাতাল ব্যবসায়ীরা এর প্রতিবাদে আন্দোলন করলেও মোদি সরকার ভিসা বন্ধ রাখে। এ অবস্থায় বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয় চীন। উন্নয়ন সহযোগী দেশটি তাদের চারটি রাজ্যে কয়েকটি হাসপাতাল বাংলাদেশিদের চিকিৎসা অগ্রাধিকার দেয়ার ঘোষণা দেয়। ১০ মার্চ চীনে চিকিৎসা নিয়ে প্রথম বাংলাদেশি রোগীর দল আনুষ্ঠানিকভাবে চীনে যান। এতে করে বাংলাদেশিদের চিকিৎসা ও ভ্রমণে ভারত প্রতি বছর যে কোটি কোটি ডলার আয় করতো সেটা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

জানতে চাইলে চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সভাপতি প্রফেসর ডা. হারুন অর রশীদ ইনকিলাবকে বলেন, চীনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মাধ্যমে শুধু ওখানে সেবা গ্রহণই নয়; দুই দেশের চিকিৎসাসেবার আদান-প্রদান যেমনÑ যন্ত্রপাতি, প্রযুক্তি ট্রান্সফার, জীবাণুমুক্ত পরিবেশে অপারেশন থিয়েটার, ট্রেনিং এবং বিশেষ বিশেষ চিকিৎসার ক্ষেত্রে চীনের বিশেষজ্ঞদের বাংলাদেশে এনে সহযোগিতা নেওয়া এসব বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের দেশের চিকিৎসাব্যবস্থাও এখন অনেকটা স্বয়ংসম্পূর্ণ। তারপরও অনেকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেত, বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশ ভারতে। ভারত ভিসা বন্ধ করায় রোগীরা বিপাকে পড়েছে। তাই চীন বিশেষ বিশেষ রোগীদের চিকিৎসাসেবার জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।

ছাত্র-জনতার বিপ্লবে স্বৈরাচার হাসিনা ভারতে পালানোর পর থেকে বৈরী সম্পর্ক বিরাজ করছে দু’দেশের। এরপর বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা বন্ধ করে দেয় ভারত সরকার। বিশেষ তদবিরে কিছু ভিসা মিললেও সেই সংখ্যা খুবই নগণ্য। আর যা পেতে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্তও ব্যয় করতে হচ্ছে ভিসা গ্রহীতাকে। অথচ কিছুদিন আগেও উন্নত চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশের রোগীদের পছন্দের নাম ছিল ভারত। বিগত বছরগুলোয় বাংলাদেশিদের চিকিৎসার জন্য ভারত যাওয়ার প্রবণতা ব্যাপক মাত্রায় বেড়ে গিয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরেই দেশটিতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া বিদেশিদের মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশিরা। ভারত সরকারের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে চিকিৎসা পর্যটনে আসা মোট বিদেশির মধ্যে বাংলাদেশির হার দাঁড়ায় ৭০ শতাংশের কাছাকাছি। প্রতি বছর চিকিৎসাখাত থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকা যায় ভারতে। এদিকে ভারতের ভিসা বন্ধসহ নানা কূটকৌশলে পোয়াবারো দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার। মানুষ দেশেই চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করছে। ইতোমধ্যে রোগী টানতে দেশের অনেক প্রাইভেট হাসপাতাল তাদের সেবার মান বাড়িয়েছে। আবার অনেকেই মানসম্মত সেবা প্রদানে নতুনভাবে বিনিয়োগে নেমেছেন বা প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। এদিকে ভিসা বন্ধ করে ভারত বাংলাদেশের রোগীদের জিম্মি করার অপচেষ্টা করেছিল। অবশ্য বাংলাদেশিরাও দেশের সেবার মান বাড়ানোর পাশাপাশি বিকল্প চিকিৎসার স্থান খুঁজে নিয়েছে। ভারতের দাদাগিরির মুখে ছাই দিয়ে চিকিৎসার জন্য দ্বার খুলেছে চীন। বাংলাদেশের জন্য ৪টি হাসপাতালও ডেডিকেটেড করে দিয়েছে দেশটি। যার ফলে বাংলাদেশিরা এখন চিনমুখী, আর ভারতের ব্যবসায় কালোমেঘ জমেছে। ভারত ভিসা বন্ধ করায় এটিকে সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশের রোগীরা। তারা বিকল্প খুঁজে নিয়েছে। ইতোমধ্যে ৩১ জন রোগীকে ইউনান প্রদেশের কুনমিংয়ে নিয়ে গেছে চীনা দূতাবাস। আর বিমান ভাড়া ও যাত্রা সহজ হলে চীন হতে পারে বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা নেয়ার নতুন গন্তব্য। এই কার্যক্রমকে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব জানান, চীনে নতুন অধ্যায় শুরু করলো বাংলাদেশ। আর চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল ইসলাম বলছেন, কার্যক্রম সফল হলে উন্নত চিকিৎসা পেতে বাংলাদেশিদের জন্য বিরাট সুযোগ অপেক্ষা করছে।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা খাতে বড় ধরনের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু মানুষের সেবা পাওয়ার অনিশ্চয়তা, চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীদের আন্তরিকতার অভাব, সময়স্বল্পতা ও রোগীবান্ধব পরিবেশের অনুপস্থিতিও প্রকট। দেশে চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসা পরিষেবা নিশ্চিত না হওয়ায় বাংলাদেশিরা বিদেশমুখী হচ্ছেন। তবে ভারতের সঙ্গে বৈরিতার কারণে ভিসা জটিলতায় দেশের চিকিৎসাসেবার মান বাড়ানোর সুবর্ণ সুযোগ দেখছেন তারা। এদিকে ভারত ভিসা বন্ধ করলেও বন্ধুপ্রতিম চীন বাংলাদেশের রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদানে পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। চীনের সঙ্গে এমনিতেই বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধুভাবাপন্ন সম্পর্ক। তাই চিকিৎসাসেবার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে চীনের ভিসা ব্যবস্থাপনা ও খরচ কমানোর তাগিদ দেন সংশ্লিষ্টরা। এটা করা গেলে চিকিৎসাসেবায় আর ভারত নির্ভরতা থাকবে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের প্রফেসর ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, নানাবিধ কারণে বাংলাদেশ থেকে ভারতে মানুষ চিকিৎসাসেবা গ্রহণের জন্য যেত। আমাদের দেশের চিকিৎসা সিস্টেমের ওপর মানুষের আস্থা কমে গেছে। সে আস্থা কমার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। আমাদের ডায়াগনস্টিক সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যেখানে যাচ্ছে, সেখানে একটি জায়গায় গেলেই সেবাটা পেয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশে সেবা পেতে গিয়ে পদে পদে ঘুরতে হচ্ছে। আমাদের দেশে কোন জায়গায় কোন সেবাটা মানুষ পাবে, সে তথ্যটিও কোথাও ভালো করে নেই।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে ডাক্তাররা রোগীদের পর্যাপ্ত সময় দিতে চান না। অথচ বাইরের দেশে সে সেবাটি পাওয়া যাচ্ছে। ভারত, সিঙ্গাপুর বা থাইল্যান্ডের হাসপাতালের চিকিৎসকরা বেশি পয়সা নিলেও রোগীকে বেশি সময় দিচ্ছেন। আমাদের দেশে সে সিস্টেম গড়ে ওঠেনি। অথচ বিদেশিরা বাংলাদেশের মানুষের সাইকোলজি স্টাডি করেছে। তারা জানে কী করলে বাংলাদেশিরা খুশি হন এবং তারা সেটাই করেন। ফলে রোগীরা বিদেশে যান। একই সঙ্গে ভারতের সঙ্গে চীনের বৈরী সম্পর্ক চীন-বাংলাদেশের স্বাস্থ্য পর্যটনকে আরও চাঙ্গা করবে এবং দু’দেশের সম্পর্কের মাধ্যমে প্রযুক্তির ও সেবার আদান-প্রদানে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতকে আরও সমৃদ্ধ করার সুযোগ তৈরি হবে।

সূত্র মতে, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েন তৈরি হয়। এমনকি বিভিন্ন ইস্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উভয় দেশের নাগরিক পর্যায়েও উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে। এমনকি ভারতের হাসপাতালগুলোয় বাংলাদেশি রোগী ভর্তি না করার অনানুষ্ঠানিক ঘোষণার কথাও শোনা গিয়েছিল। একই সময়ে অনেক হোটেল কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশি নাগরিকদের হোটেলে থাকার অনুমতি দেয়াও বন্ধ করেছিল। তাই বাংলাদেশ-চীন দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার অংশ হিসেবে চীনে বাংলাদেশের রোগীদের বিশেষ সুযোগ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

চিকিৎসার বিকল্প দেশ হিসেবে চীনকে বেছে নিতে সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে সে সুবিধা নেওয়া প্রথম রোগীদের একজন সঙ্গীতশিল্পী হায়দার হোসেন। ভিসা ব্যবস্থাপনা আরো সহজ ও খরচ কমানোর আহ্বান তার। হায়দার হোসেন বলেন, চীন অনেক ভালো। আমাদের আরও সহজ করতে হবে ভিসা প্রসেস আর ট্রাভেলিংটা অনেক ব্যয়বহুল।

চীনের চিকিৎসাব্যবস্থার অভিজ্ঞতা নিতে সেখানে যাওয়ার উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব তুলে ধরেন চিকিৎসক দলের প্রতিনিধি রাফিদুল হাসান। তিনি বলেন, অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা ট্যুর হচ্ছে। আমরা চিকিৎসকরা ওখানে আছি, দেখব কি হচ্ছে। আরও একটা বড় বেনিফিট আমরা পেতে পারি যে আমাদের চিকিৎসকরা ওখানে ট্রেনিং নেবেন, যেটা বাংলাদেশে ফিরে প্রয়োগ করা যেতে পারে।

বিদেশে চিকিৎসায় বাংলাদেশিদের দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করে চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের অনুরোধে চীন এ সুবিধা দিচ্ছে। চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন বিশেষ অভ্যর্থনা দল গঠন করেছে যারা বাংলাদেশি রোগীদের অগ্রাধিকার দেবে। থাকবে বাংলা ও ইংরেজিতে দক্ষ দোভাষী। চীনে যাওয়া রোগীদের সাশ্রয়ী মূল্যের বিমান টিকিট দেওয়া হবে। ভিসা ব্যবস্থাপনাও সহজ হবে। চীনে চিকিৎসার সুযোগকে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের নতুন অধ্যায় বলছেন পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন।

সূত্র মতে, দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার আওতায় চীনের কুনমিংয়ে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য চিকিৎসাসেবা উন্মুক্ত করেছে চীন সরকার। গত সোমবার ঢাকা থেকে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে একটি দল কুনমিং চাংশুই আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছলে চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল ইসলাম এ তথ্য জানান। তিনি জানান, এ সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশিদের জন্য যৌক্তিক খরচে এবং স্বল্পসময়ে উন্নত চিকিৎসার নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো। এছাড়া, এর ফলে দুই দেশের মানুষের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় বাড়বে এবং পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র উন্মোচিত হবে। অচিরেই কুনমিং বাংলাদেশিদের জন্য আধুনিক চিকিৎসার একটি অন্যতম গন্তব্য হিসেবে গণ্য হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

ইউনান প্রাদেশিক পররাষ্ট্র দফতরের মহাপরিচালক ইয়াং শাওচেং চিকিৎসা পর্যটক এই দলটিকে চির বসন্তের নগরী কুনমিংয়ে স্বাগত জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ এবং ইউনানের জনগণের ঐতিহাসিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে চিকিৎসা সহযোগিতার এই অনন্য উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

এর আগে গত জানুয়ারি মাসে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন চীন সফরের সময় বাংলাদেশিদের জন্য কুনমিং-এ চিকিৎসাসেবা উন্মুক্ত করার প্রস্তাব চীন সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে উত্থাপন করা হয়। চীন সরকার এই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে কুনমিং-এর চারটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল বাংলাদেশি নাগরিকদের চিকিৎসার জন্য উন্মুক্ত ঘোষণা করে। এর মধ্যে দু’টি সাধারণ হাসপাতালÑ কুনমিং মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ফার্স্ট অ্যাফিলিয়েটেড হাসপাতাল এবং ইউনান ফার্স্ট পিপল’স হাসপাতাল, যেখানে সকল ধরনের চিকিৎসা পাওয়া যাবে। এছাড়া, বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে ফু-ওয়াই কার্ডিওভাসকুলার হাসপাতাল এবং ইউনান ক্যান্সার হাসপাতাল হৃদরোগ ও ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশিদের সেবা দেবে। এখন থেকে বাংলাদেশি নাগরিকরা সরাসরি এই হাসপাতালের আন্তর্জাতিক ওয়ার্ডে যোগাযোগ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতামত নিতে পারবেন এবং রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন। চীনা নাগরিকদের জন্য নির্ধারিত ফি পরিশোধ করেই তারা উন্নত চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করতে পারবেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে। এই উদ্যোগের ফলে প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিক উন্নত চিকিৎসার জন্য কুনমিং সফর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে, বাংলাদেশ ও ইউনানের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে। চিকিৎসা পর্যটন সহজতর করতে কুনমিং ও চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু এবং ঢাকা-কুনমিং রুটে একাধিক ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d