চিকুনগুনিয়ার প্রথম টিকাকে অনুমোদন দিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মশাবাহিত রোগ চিকুনগুনিয়ার প্রতিষেধক হিসেবে ‘ইক্সচিক’ নামে একটি টিকার অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের অন্যতম নিয়ন্ত্রক সংস্থা খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) এই টিকাটির অনুমোদন দিয়েছে।
জানা গেছে, ইউরোপভিত্তিক ওষুধ ও টিকা প্রস্তুতকারী কোম্পানি ভালনেভা প্রস্তুতকৃত ইক্সচিক এক ডোজের টিকা। চিকুনগুনিয়া ভাইরাসের একটি দুর্বল ও বিশেষ সংস্করণ এই টিকার মূল উপাদান।
তিন পর্যায়ের মেডিকেল ট্রায়ালে এই টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষা করেছে ভালনেভা। সেসব ট্রায়ালে অংশ নিয়েছেন অন্তত ৩ হাজার ৫০০ স্বেচ্ছাসেবী।
এফডিএর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও মুখপাত্র পিটার মার্কস এক বিবৃতিতে বলেন, ‘শারীরিকভাবে দুর্বল ও বয়স্ক লোকজনদের বিভিন্ন শারীরিক উপসর্গের জন্য দায়ী চিকুনগুনিয়া। প্রতি বছরই বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ এই রোগটিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এই রোগের প্রথম টিকার অনুমোদন আজ (বৃহস্পতিবার) দেওয়া হলো। এটি চিকুনগুনিয়ার চিকিৎসার ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার।’
ডেঙ্গুর মতো চিকুনগুনিয়াও একটি ভাইরাসজনিত রোগ এবং এটি মূলত টোগা ভাইরাস গোত্রের সদস্য। এই রোগের একমাত্র বাহক এডিস মশা। মশাবাহীত হওয়ায় এই ভাইরাসটিকে আরবোভাইরাসও বলা হয়।
ডেঙ্গুর মতো প্রাণঘাতী না হলেও চিকনগুনিয়া ব্যাপক শারীরিক যন্ত্রণা দিতে সক্ষম। আক্রান্ত রোগীরা রোগ সেরে যাওয়ার পরেও কয়েক মাস কিংবা অনেকক্ষেত্রে কয়েক বছর পর্যন্ত অস্থিসন্ধি বা গিঁটে তীব্র ব্যথা বোধ করেন। এছাড়াও দীর্ঘমেয়াদে শারীরিক দুর্বলতা, অবসাদ, বমিভাব ও অন্যান্য শারীরিক সমস্যা তৈরি হয়।
আফ্রিকার দেশগুলোতে এই রোগের প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। ‘চিকুনগুনিয়া’ নামটিও এসেছে আফ্রিাকাভুক্ত দেশ তানজানিয়ার মাকুন্দি জনগোষ্ঠীর ভাষা থেকে। সম্প্রতি অবশ্য ভারত, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার এবং এশিয়ার মৌসুমি জলবায়ুর দেশগুলোর পাশাপাশি ইউরোপ ও আমেরিকাতেও রোগটির উপস্থিতি বাড়ছে। বাংলাদেশে চিকুনগুনিয়া প্রথম শনাক্ত হয় ২০০৮ সালে, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে। ২০১১ সালে ঢাকার দোহার উপজেলাতেও এই রোগ শনাক্ত হয়েছে।