চীনের জননিরাপত্তা আইন সংশোধনের প্রস্তাব
চীনের জননিরাপত্তা আইন সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, চীনের স্বাধীনতা এবং অনুভুতির ক্ষতি করে এমন মন্তব্য, ফ্যাশন ট্রেন্ড বা প্রতিক ব্যবহার অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছে এরকম আইন সংশোধন ক্ষতির কারন হতে পারে। তারা বলছে, এ আইন সংশোধন হলে তা জনগনের উপর নির্বিচারে প্রয়োগ হতে পারে।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ক্রমবর্ধমান স্বৈরাচারী এবং জাতীয়তাবাদী শাসন সম্পর্কে উদ্বেগ বেড়ে যাওয়ায় একটি বাধ্যতামূলক “মতামত চাওয়ার” প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে গত সপ্তাহে পরিবর্তনগুলি প্রথম প্রকাশ করা হয়েছিল।
চলতি সপ্তাহে একাধিক আইন বিশেষজ্ঞ এবং ব্লগার গনমাধ্যম এবং সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই আইনের অপসারনের জন্য একাধিক কলাম এবং পোষ্ট লিখেছেন।
এদের একজন চায়না ইউনিভার্সিটি অব পলিটিক্যাল সাইন্স এন্ড ল এর আইন বিষয়ের অধ্যাপক জাও হং। তিনি তার কলামে এই আইনের সমালোচনা করে লিখেছেন, খসড়াটির আইনি স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে এবং জনগনের কতৃত্বের অপব্যবহারের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ঝাও-এর লেখা কলামটি প্রকাশের পরপরেই অনলাইন থেকে সরিয়ে ফেলা হয়।
বিশেষজ্ঞরা খসড়াটিতে জনগনের মতামত দেয়ার জন্য উৎসাহিত করছেন। এতে এখন পর্যন্ত ৩৯ হাজার মানুষ অনলাইনে চীনের সংসদের ওয়েবসাইটে তাদের মতামত জানিয়েছে।
ইষ্ট চায়না ইউনিভার্সিটি অব পলিটিক্যাল সাইন্স এন্ড ল এর সংবিধান অধ্যায়নের বিশেষজ্ঞ টং ঝিওয়ে এক পোষ্টে প্রশ্ন করেছেন, কে এবং কোন পদ্ধতি অনুসারে চীনা জাতির স্পিরিট (কর্মশক্তি) নিশ্চিত করে? ‘চীনা জাতির অনুভূতি’কেই বা কে স্বীকৃতি দেয় এবং কোন পদ্ধতিতে?
তিনি আরো যোগ করে বলেন, যদি এনপিসি স্থায়ী কমিটি এই নিবন্ধটি এখন খসড়া হিসাবে গ্রহণ করে তবে আইন প্রয়োগকারী এবং বিচারিক কাজ অনিবার্যভাবে প্রধানের ইচ্ছা অনুযায়ী সম্পন্ন হবে। এতে সাধারন জনগন যা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার তাদের গ্রেপ্তার এবং দোষী সাব্যস্ত করা হবে। আর এতে দেশের সীমাহীন ক্ষতি হবে।
তবে চীনা সংসদ থেকে তৎক্ষনাত কোন প্রতিক্রিয়া আসে নি।
অনেকে চীনা সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বলেছেন যে সংশোধনীগুলি আরও সেন্সরশিপের দিকে নিয়ে যেতে পারে। মন্তব্যগুলি টুইটার-এর মতো প্ল্যাটফর্ম উইবোতে অনলাইনে রয়ে গেছে।
ব্যঙ্গাত্মক করে একজন লিখেছে, আমি বুঝতে পারছি না কেন একজন এই আইনকে সমর্থন করবে, আমাদের যেখানে কোন অপরাধ নেই?
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গ্লোবাল টাইমস পত্রিকা বলেছে, ২০০৫ সালের জননিরাপত্তা আইন প্রধানত ছোটখাটো অপরাধগুলিকে কভার করে। এটিকে প্রচলিত সামাজিক বাস্তবতায় আরও প্রযোজ্য করার জন্য আইনটি সংশোধন করা হচ্ছে।