International

চীনের দিকে ঝুঁকছে আফগানিস্তান, ভারতে অনাগ্রহ

হঠাৎ করে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর দৃষ্টি এখন আফগানিস্তানের ওপর পড়েছে। রাশিয়া, চীন, ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাতীসংঘ দেশটির প্রতি বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেছে। সম্প্রাতিক সময়ে চীন, ভারত ও রাশিয়ার প্রতিনিধিরা ঘন ঘন আফগানিস্তান সফর করেছে এবং দেশটি বড় ধরণের বিনিয়োগ করছে চীন ও রাশিয়া। ভারতও চেষ্টা করছে। কিন্তু ভারতের ব্যাপারে তালেবানদের আগ্রহ কম।

জানা যায়, রূপকথার ফিনিক্স পাখির মতোই বারবার ধ্বংসস্তূপের ছাই থেকে পুনর্জন্ম হচ্ছে আফগানিস্তানের। দশকের পর দশক বিদেশি শক্তিগুলোর ব্যাটেলগ্রাউন্ড ছিল দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি। কিন্তু সোভিয়েত রাশিয়া কিংবা পরাশক্তির আমেরিকার কাছেও মাথানত করেনি আফগানরা। দেশটি থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনীর বিদায়ের পর ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে কাবুল। এরপর বদলে যেতে থাকা আফগানিস্তানের প্রতি প্রবল আগ্রহ দেখাচ্ছে উদীয়মান পরাশক্তি চীন-রাশিয়া। কিন্তু আফগানিস্তানের প্রতি বেইজিংয় ও রাশিয়ার এই আগ্রহের মূলে কী, তা জানিয়েছেন কয়েকজন বিশেষজ্ঞ। শুক্রবার (৩১ মে) টোলো নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

জানা যায়, আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ সম্প্রতি জানান, কাবুলের সাথে বেইজিংয়ের নানান চ্যানেলে যোগাযোগ হচ্ছে। বলেন, আফগানিস্তানে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করছে জিনপিং প্রশাসন। জাবিহুল্লাহ মুজাহিদের মতে, কাবুল ও বেইজিংয়ের মধ্যে সম্পর্ক দিন দিন প্রসারিত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে কাতারের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুলতান বারাকাত বলেন, আফগানিস্তানের অগ্রগতিতে চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এ কারণে চীনের কথা অন্যদের চেয়ে আফগানিস্তানে বেশি শোনা যায়। কিন্তু চীন কি আফগানিস্তানের নির্ভরযোগ্য প্রতিবেশী?

এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক সেলিম পাইগির টলোনিউজকে বলেন, আমাদের চীনের সঙ্গে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া উচিত। কারণ চীন আফগানিস্তানের জনগণের প্রতি নয়, আফগানিস্তানের খনিগুলোর প্রতি আগ্রহী। কাবুলের উচিত এটিকে তার সুবিধার জন্য ব্যবহার করা।

আফগানিস্তান নিয়ে এত আগ্রহ কেন চীনের?

যুক্তরাষ্ট্রকে মোকাবিলায় জন্ম নিচ্ছে ‘শয়তানের অক্ষশক্তি’ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক মোহাম্মদ ইমাল দোস্তয়ার বলেন, আফগানিস্তানের প্রতি চীনের সাধারণত নমনীয় নীতি রয়েছে। আমাদের এই পয়েন্টের সুবিধা নেওয়া উচিত। আর মনে রাখতে হবে যে পরাশক্তি হওয়ার দৌড়ে চীনেরও প্রয়োজন আফগানিস্তানকে। কিন্তু কেনো?

তথ্য বলছে, বর্তমানে চীনের সবচেয়ে বড় প্রকল্প বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বা বিআরআই প্রকল্প। যদিও প্রাথমিকভাবে এই প্রকল্পে আফগানিস্তান নেই কিন্তু এর নিরাপত্তার স্বার্থে দেশটিতে স্থিতিশলতা প্রয়োজন। তাই কাবুলে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার পক্ষে বেইজিং।

আফগানিস্তানের প্রতি চীনের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর বা সিপিইসি।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button