International

চীনের বিপুল সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র মার্কিন যুদ্ধজাহাজ এবং ঘাঁটি লক্ষ্য করে তাক করা

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মধ্য দিয়ে স্নায়ুযুদ্ধের শেষ হয়। এরপরে দীর্ঘ কয়েক দশক আমেরিকাকে এমন বিপদের মোকাবিলা করতে হয়নি, যুদ্ধকালে যা হতে পারে চীন। এশীয় পরাশক্তিটির সাথে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সংঘাতের আশঙ্কা রয়েছে। এটি বাস্তবে রূপ নিলে চীন হাজার হাজার মিসাইল দিয়ে আক্রমণ করবে।

চীনের সাথে যুদ্ধ বাধলে ইন্দো-প্যাসিফিকের মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ও সামরিক ঘাঁটিগুলোতে চীন যে পরিমাণ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করবে– আর কোনো যুদ্ধের সময়েই এত ক্ষেপণাস্ত্রের মোকাবিলা করেনি যুক্তরাষ্ট্র।

বিগত দুই দশকের বেশি সময় ধরে চীনও এই সংঘাতের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। ‘ক্যারিয়ার কিলার’ ও ‘গুয়াম এক্সপ্রেস’ নামে অভিহিত অত্যাধুনিক কিছু ক্ষেপণাস্ত্রও তৈরি করেছে দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্রের বিশালাকায় বিমানবাহী রণতরীগুলো সমুদ্রে মার্কিন আধিপত্যের জীবন্ত প্রতীক। বিমানবাহী রণতরীর সাথে অন্যান্য যুদ্ধজাহাজ মিলে গঠন করা হয়েছে একেকটি ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ।

সংঘাতের সময় চীনের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে এসব ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ ব্যবহার করা হবে, যার প্রাণকেন্দ্রে থাকবে বিমানবাহী রণতরী থেকে উড্ডয়ন করা জঙ্গিবিমান। 

এই হুমকি বুঝেই চীন ‘ক্যারিয়ার কিলার’ কথিত মিসাইল তৈরি করেছে।

অন্যদিকে, প্রশান্ত মহাসাগর এলাকার গুয়াম দ্বীপে রয়েছে – যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ নৌ ও বিমানঘাঁটি। চীনের সাথে যুদ্ধের সময় এই ঘাঁটিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তাই সংঘাতের শুরুতেই গুয়ামে আঘাত হানতে ছুটে আসবে চীনা ক্ষেপণাস্ত্র– যাকে বলা হয় গুয়াম এক্সপ্রেস।

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সামরিক নেতৃত্ব ও কর্মকর্তারা বলছেন, এই অস্ত্রগুলো ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন সেনাদের জন্য যুদ্ধ লড়াকে চরম হুমকির মুখে ফেলেছে। যুদ্ধকালে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ব্যাপক ধবংস ও মৃত্যুর তাণ্ডব ঘটাবে। 

তবে বেইজিং ঠিক এই বার্তাই দিতে চায়। যার সহজ অর্থ হচ্ছে, চীনা ড্রাগনের লেজ মাড়ালে ভয়ংকর পরিণতির জন্যও প্রস্তুত থাকতে হবে ওয়াশিংটনকে। 

কর্মকর্তারা বলছেন, বিপদের মাত্রা সত্যিই ভয়াবহ। দক্ষিণ চীন সাগর অভিমুখে যেতে গুয়ামে অবস্থিত অ্যান্ডারসন বিমানঘাঁটি থেকে নিয়মিত উড্ডয়ন ও অবতরণ করে মার্কিন বোমারু বিমান। আবার আমেরিকার ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপগুলোও সেখানে যাওয়ার আগে এই ঘাঁটিতে এসে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে। 

তাই গুয়ামে চীন যুদ্ধের সময় ডজন ডজন বা কয়েকশ মিসাইল ছুঁড়তে পারে। একসাথে বহুসংখ্যায় বা স্যালভোতে মিসাইল নিক্ষেপ করে ঘাঁটির আকাশপ্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে দিশেহারা করে দেওয়াই হবে যার লক্ষ্য।

এরমধ্যে যেসব ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানবে– সেগুলো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর মারাত্মক ক্ষতি করবে। এতে যুদ্ধ চালানোর সক্ষমতা অনেকটাই হারাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি পেন্টাগনের নেতৃত্বকে তাই গভীর দুশ্চিন্তায় রেখেছে। 

চীনা সেনাবাহিনীর মধ্যে পৃথক ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনী রয়েছে, যাকে বলা হয় ‘রকেট ফোর্স’। মার্কিন গণমাধ্যম দ্য বিজনেস ইনসাইডারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন কর্মকর্তা ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা রকেট ফোর্সের বিপুল শক্তিবৃদ্ধিকে তাঁদের প্রধান উদ্বেগের কারণ বলে অভিহিত করেছেন। 

এদের মধ্যে সিনিয়র একজন কর্মকর্তা এটাও বলেন যে, চীনের এ শক্তির কারণেই ওই অঞ্চলে যুদ্ধ করার আগ্রহে ভাটা পড়ছে আমেরিকার। ‘এটি এমন এক ধরনের বাধা বা পাল্টা-হুমকি– যা ওই অঞ্চলে আমাদের অবস্থান ও উপস্থিতিকে হুমকিতে রেখেছে। আমাদের (যুদ্ধকালীন) সামরিক কার্যক্রমের ওপর এর সম্ভাব্য ক্ষতি এত মারাত্মক হতে পারে যে, হুমকির মাত্রা অত্যন্ত বেশি বলেই ওয়াশিংটনের নীতি-নির্ধারকরা হয়তো ভাবতে বাধ্য হবেন।’

চীন বিস্ময়কর গতিতে তার ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডার বাড়াচ্ছে। চীনের সামরিক হুমকির বিষয়ে প্রস্তুত করা পেন্টাগনের সর্বশেষ প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ২০২১ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে কিছু মিসাইলের মজুত কার্যত দ্বিগুণ করেছে চীন। এরমধ্যে রয়েছে মাঝারি পাল্লার ব্যালেস্টিক মিসাইল– যেগুলো জাপানে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিগুলোয় আঘাত হানতে সক্ষম এবং ইন্টারমিডিয়েট বা মধ্য মধ্যপাল্লার মিসাইল – যার আওতায় রয়েছে গুয়াম।   

শুধু মিসাইল থাকাটাই কাজের কথা নয়, শক্তিধর প্রতিপক্ষকে যুদ্ধের শুরুতেই নাকাল করতে দরকার– একসঙ্গে বিপুল সংখ্যায় উৎক্ষেপণ। এজন্য মিসাইল লঞ্চার সংখ্যাও ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে চীন। 

যেমন ন্যূনতম পাঁচ হাজার ৫০০ কিলোমিটার পাল্লার আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) ৩০০টি রয়েছে চীনের। লঞ্চারও রয়েছে একইসংখ্যক। 

অন্যদিকে তিন হাজার থেকে ৫,৫০০ কি.মি. পর্যন্ত পাল্লার আড়াইশটির বেশি ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ ব্যালেস্টিক মিসাইল (আইআরবিএম) রয়েছে, যার বিপরীতে লঞ্চার আছে আড়াইশটি। 

পেন্টাগনের অনুমান, চীনের কাছে মাঝারি পাল্লার ব্যালেস্টিক মিসাইল বা এমআরবিএম রয়েছে অন্তত এক হাজার, এক থেকে তিন হাজার কি.মি. পাল্লার এসব মিসাইলের উৎক্ষেপক রয়েছে ৩০০টি। 

যুদ্ধ যদি প্রচলিত অস্ত্রে সীমিত থাকে, তাহলে আইসিবিএমের ঝুঁকি তেমন নেই। কিন্তু, এমআরবিএম ও আইআরবিএম তখন মূল হুমকি। যুদ্ধকালে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের ওপর আঘাত হানতে এগুলো ডিজাইন করা হয়েছে। এমন মন্তব্যই করেন চিন্তক সংস্থা – সেন্টার ফর এ নিউ আমেরিকান সিকিউরিটির জ্যেষ্ঠ ফেলো এবং মার্কিন নৌবাহিনির সাবেক সাবমেরিন অফিসার থমাস শুগার্ট।

আরেকটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক– হাডসন ইনস্টিটিউটের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ এবং সাবেক নৌ-কর্মকর্তা ব্রায়ান ক্লার্ক বলেন, ‘এসব ঘটনায় প্রমাণ হচ্ছে চীনের সামরিক নেতৃত্ব এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, দূরপাল্লার মিসাইল তাদের জন্য বিজয় ছিনিয়ে আনার সহায়ক।’ 

যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের বর্তমান প্রধান অ্যাডমিরাল জন অ্যাকুইলিনো এর আগে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি কমান্ডার থাকার সময়ে ‘এই অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতির ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে, তবে সেটা (যুক্তরাষ্ট্রের জন্য) ইতিবাচক অর্থে নয়।’ এসময় চীনকে তিনি ‘সবচেয়ে গুরুতর নিরাপত্তা হুমকি’ বলে অভিহিত করেন।   

গণচীন প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকী উপলক্ষে বেইজিংয়ে আয়োজন করা সামরিক কুচকাওয়াজে মাল্টিপল রকেট লঞ্চার যানের ওপর চীনা সেনারা।

চীনের সামরিক ডকট্রিনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে – শক্তিসামর্থ্য অর্জনের মাধ্যমে শত্রুকে বিপুল ক্ষয়ক্ষতির কথা ভাবতে বাধ্য করে সংঘাত থেকে বিরত রাখা। সামরিক পরিভাষায় যাকে বলা হয়, ডেটারেন্স। কিন্তু এই কৌশল ব্যর্থ হলে, অর্থাৎ যুদ্ধ বাধলে তখন দ্রুত ও মারাত্মক আঘাত করা।

দ্বিতীয়টির ক্ষেত্রে– শত্রুর বিপুল ক্ষয়ক্ষতি করার আগে আচমকা আক্রমণ করে তাকে হতোদ্যম করে ফেলাকে কৌশলে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

চীনের সেনাবাহিনী– পিপলস লিবারেশন আর্মি বা পিএলএ’র রকেট শাখা সেই সামর্থ্য এনে দিয়েছে কমান্ডারদের জন্য।

কোনো এলাকায় শত্রুর সামরিক কার্যক্রমকে ঠেকানো বা যুদ্ধের সময়ে সেটিকে মারাত্মক বাধাগ্রস্ত করার এই কৌশলকে বলা হয় অ্যান্টি-এক্সেস, এরিয়া ডিনায়েল (এটুএডি)। বেইজিং এর সাহায্যে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের এই অঞ্চল থেকে হটাতে চায়। বিজনেস ইনসাইডারকে এমন কথাই বলেছেন প্যাসিফিক কম্যান্ডের সাবেক কমান্ডার এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত অ্যাডমিরাল (অব.) হ্যারি হ্যারিস। 

দক্ষিণ সাগরে তাঁর সমুদ্রসীমাকে মানচিত্রে নয়টি ড্যাশের এক রেখার মাধ্যমে চিহ্নিত করে চীন। এরমধ্যে বিপুল সমুদ্র অঞ্চল রয়েছে। যা চীনের আঞ্চলিক প্রতিবেশীরা মানে না। যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা বিশ্বও ‘নাইন ড্যাশ লাইনের’ বিরোধী। 
এবিষয়ে হ্যারিস বলেন, ‘তাদের প্রধান লক্ষ্য নাইন ড্যাশ লাইনের মধ্যে অবস্থিতকে সবকিছুর ওপর অবৈধ ও অন্যায্য কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা। একইসঙ্গে বাহুবলে তাইওয়ানকে বেইজিংয়ের নিয়ন্ত্রণে আনা।’  

সাবেক এই অ্যাডমিরাল জানান, প্যাসিফিক কম্যান্ডের প্রধান থাকার সময়ে চীনের মিসাইল প্রযুক্তির অগ্রগতিই তাঁকে সবচেয়ে বিচলিত করেছিল– দেশটির অন্য কোনো সামরিক উন্নয়ন নিয়ে এতোটা দুর্ভাবনা হয়নি তাঁর।  

বিভিন্ন ধরনের চীনা ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা।

চীন তার রকেট ফোর্স সম্প্রসারণ করছে। বিশেষত তা আরো শক্তিশালী করা হচ্ছে তাইওয়ান প্রণালী অঞ্চলে। এই অঞ্চলে নতুন মিসাইল ব্রিগেড গঠন করা হচ্ছে। চীন যে ওই অঞ্চলে মোতায়েনকৃত মিসাইলের সংখ্যা বাড়াচ্ছে– এটি তারই প্রমাণ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের অবাধ প্রবেশাধিকারকে বাধা দেওয়ার বৃহত্তর কৌশলের অংশ হিসেবে চীন একাজ করছে।  তাইওয়ান আক্রান্ত বা অবরোধের শিকার হলে– যুক্তরাষ্ট্র যদি তার সহায়তায় এগিয়ে আসতে চায় – সেক্ষেত্রে মিসাইলের হুমকি বড় মাথাব্যথা হবে পেন্টাগনের সামরিক পরিকল্পনাবিদদের জন্য। 

এই ধরনের পরিস্থিতিতে, কোনো ধরনের আগাম সতর্কতা না দিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি ও যুদ্ধজাহাজগুলোকে নিশানা করতে পারবে চীন। এ ধরনের একটি ক্ষেপণাস্ত্র হচ্ছে ডিএফ-২৬ – যাকে গুয়াম এক্সপ্রেস বা গুয়াম কিলার হিসেবে অভিহিত করা হয়। ক্ষেপণাস্ত্রটি বেইজিং থেকে তিন হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গুয়াম দ্বীপের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।  

ডিএফ-২৬ প্রচলিত বিস্ফোরক বা পারমাণবিক ওয়ারহেড বহন করতে পারে। এর জাহাজ-বিধবংসী সক্ষমতাও রয়েছে, এজন্য এটিকে ক্যারিয়ার কিলার-ও বলা হয়ে থাকে। রকেট ফোর্সের হাতে থাকা ডিএফ-২১ নামের আরেকটি মিসাইলকেও মার্কিন রণতরী ধবংসে ব্যবহার করতে পারে চীন। 

সামরিক কুচকাওয়াজে ডিফ-২৬ মিসাইল বহনকারী সামরিক যান।

রকেট ফোর্সের কাছে আরো বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। এরমধ্যে উল্লেখ করবার মতো ডিএফ-১৭ হাইপারসনিক মিসাইল। শব্দগতির পাঁচগুণ বা তাঁর চেয়েও বেশি দ্রুতগতিতে ছুটতে পারে এটি। 

এছাড়া, ডিএফ-১৫ এর মতো স্বল্প-পাল্লার ব্যালেস্টিক মিসাইল দিয়েও সহজেই তাইওয়ানে হামলা করতে পারবে চীন। 

আর পারমাণবিক যুদ্ধের জন্য বেইজিংয়ের অস্ত্রভান্ডারে রয়েছে ডিএফ-৫, ডিএফ-৩১ এবং সর্বাধুনিক ডিএফ-৪১।

গত বছরের শরৎকালে প্রকাশিত প্রতিবেদন পেন্টাগন জানিয়েছে, নতুন উন্নয়নগুলো চীনের পারমাণবিক অস্ত্রসহনে সক্ষম মিসাইল সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াবে। নতুন মিসাইলগুলোর জন্য পারমাণবিক ওয়ারহেডের উৎপাদনও বাড়বে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের ধারণা, চীনের কাছে পাঁচ শতাধিক সক্রিয় পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে, যা বিশ্বে তৃতীয় সর্বোচ্চ। তবে আগামীতে এই সংখ্যা আরো বাড়বে বলেই ধারণা করছে পেন্টাগন।   

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d